পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশ্রয় প্রার্থনা করা
২৪৭৬-[২০] ’ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পিতা হুসায়নকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এখন কতজন মা’বূদের পূজা করছো? আমার পিতা বললেন, সাতজনের- তন্মধ্যে ছয়জন মাটিতে আর একজন আকাশে। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আশা-নিরাশার ও ভয়-ভীতির সময় কাকে মানো (কোন্ মা’বূদকে ডাকো)? আমার পিতা বললেন, যিনি আকাশে আছেন তাকে মানি। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তবে শুন হুসায়ন! যদি তুমি ইসলাম গ্রহণ করো, আমি তোমাকে দু’টি কালিমা শিখাবো, যা তোমার উপকারে (পরকালীন মুক্তি) আসবে। বর্ণনাকারী [’ইমরান (রাঃ)] বলেন, আমার পিতা হুসায়ন ইসলাম গ্রহণ করার পর বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে ঐ কালিমা দু’টি শিখিয়ে দিন, যার কথা আপনি আমাকে ওয়া’দা দিয়েছিলেন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি (সেই আসমানের মা’বূদকে) বলো, ’’আল্ল-হুম্মা আলহিম্নী রুশদী, ওয়া আ’ইযনী মিন শাররি নাফসী’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমার অন্তরকে সত্য পথের সন্ধান দাও এবং আমার নাফসের অপকারিতা হতে রক্ষা করো)। (তিরমিযী)[1]
وَعَن عمرانَ بنِ حُصينٍ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لأبي: «يَا حُصَيْن كم تعبد الْيَوْم إِلَهًا؟» قَالَ أَبِي: سَبْعَةً: سِتًّا فِي الْأَرْضِ وواحداً فِي السَّماءِ قَالَ: «فَأَيُّهُمْ تَعُدُّ لِرَغْبَتِكَ وَرَهْبَتِكَ؟» قَالَ: الَّذِي فِي السَّمَاءِ قَالَ: «يَا حُصَيْنُ أَمَا إِنَّكَ لَوْ أَسْلَمْتَ عَلَّمْتُكَ كَلِمَتَيْنِ تَنْفَعَانِكَ» قَالَ: فَلَمَّا أَسْلَمَ حُصينٌ قَالَ: يَا رسولَ الله علِّمني الكلمتينِ اللَّتينِ وَعَدتنِي فَقَالَ: «قل اللَّهُمَّ أَلْهِمْنِي رُشْدِي وَأَعِذْنِي مِنْ شَرِّ نَفْسِي» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবী ‘ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ)-কে যে ছোট দু‘আটি শিক্ষা দিয়েছেন তার প্রথম অংশের (الرُشْدِ) ‘‘রুশ্দ’’ বলতে মূলত সত্যের পথকে শক্তভাবে ধরে তার উপর দৃঢ় থাকা। ‘আল্লামা কারী বলেনঃ প্রথম অংশের অর্থ হলোঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে রুশ্দ তথা সততার অনুসরণ করার তাওফীক দান করুন।
দু‘আটির দ্বিতীয় অংশের অর্থ হলো, ‘হে আল্লাহ! অন্তরের অনিষ্ট বা অপকারিতা থেকে আমাকে রক্ষা করো’, নিশ্চয়ই অন্তরই হচ্ছে সকল অনিষ্টের মূল বা উৎস। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেনঃ এ হাদীসটি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘‘জাওয়ামি‘উল কালিম’’ (স্বল্প কথায় বেশি অর্থবোধক বাক্য)-এর অন্যতম। এ ছোট দু‘আটিতে তিনি রুশদ তথা সত্য পথের নির্দেশনা চেয়েছেন। যার মাধ্যমে সকল ভ্রান্তি, পথভ্রষ্টতা থেকে নিরাপদ থাকা যায় এবং তিনি অন্তর থেকে উৎসারিত অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় চেয়েছেন। যার মাধ্যমে অধিকাংশ আল্লাহদ্রোহী কাজ সংঘটিত হয়। আর অধিকাংশ আল্লাহদ্রোহী কাজ খারাপ কাজের আদেশদাতা অন্তর (النفس الأمارة بالسوء) ‘‘আন নাফ্সুল আম্মারাহ্ বিস্সূয়ি’’ এর দ্বারা প্ররোচনা লাভ করে।