পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আশ্রয় প্রার্থনা করা
২৪৭৩-[১৭] আবূল ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে দু’আ করতেন,
’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিনাল হাদমি ওয়া আ’ঊযুবিকা মিনাত্ তারাদ্দী ওয়ামিনাল গরাকি ওয়াল হারক্বি ওয়াল হারামি ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন্ আন্ ইয়াতাখব্বাত্বানিশ্ শায়ত্ব-নু ’ইন্দাল মাওতি ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন্ আন্ আমূতু ফী সাবীলিকা মুদবিরান ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন্ আন্ আমূতা লাদীগা-’’
(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই [আমার ওপর] কিছু ধসে পড়া হতে। হে আল্লাহ! উপর হতে পড়া, পানিতে ডুবা, আগুনে পোড়া ও বার্ধক্য হতেও আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই। আরো আশ্রয় চাই তোমার কাছে মৃত্যুর সময় শয়তানের প্ররোচনায় নিমজ্জিত হওয়া হতে। আর তোমার পথ হতে পৃষ্ঠপ্রদর্শনরত [জিহাদের ময়দান হতে পিছ পা] অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা হতেও আশ্রয় চাই। আরো আশ্রয় চাই দংশিত হয়ে মৃত্যুবরণ করা হতে।)। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী; নাসায়ীর অপর এক বর্ণনায় আরো রয়েছে ’’এবং শোক’’ হতে)[1]
وَعَن أبي الْيُسْر أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَدْعُو: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَدْمِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ التَّرَدِّي وَمِنَ الْغَرَقِ وَالْحَرْقِ وَالْهَرَمِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ يَتَخَبَّطَنِي الشَّيْطَانُ عِنْدَ الْمَوْتِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أَمُوتَ فِي سَبِيلِكَ مُدْبِرًا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أَمُوتَ لَدِيغًا»
رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَزَادَ فِي رِوَايَةٍ أُخْرَى «الْغم»
ব্যাখ্যা: (هَدْمِ) ‘‘হাদম’’ অর্থ হচ্ছে কোন কিছু যেমন বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়া। (تَرَدِّىْ) ‘‘তারদ্দী’’ অর্থ হচ্ছে কোন উঁচু স্থান হতে নিচে পতিত হওয়া। যেমন উঁচু পাহাড় বা সুউচ্চ ছাদ থেকে নিচে পড়া। এর দ্বারা কূপের মধ্যে পড়ে যাওয়াও বুঝায়।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্র হাদীসে উল্লিখিত প্রথম চারটি বিষয় থেকে আশ্রয় চেয়েছেন এজন্য যে, এগুলো ব্যক্তির উপর হঠাৎ করে চলে আসে। এমতাবস্থায় হয়তো ঐ ব্যক্তি ওয়াসিয়্যাত, দান কিছুই করার সুযোগ পায় না।
শয়তানের গোমরাহী বলতে শয়তান কর্তৃক দীনী ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিভ্রাট তৈরি করা। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, শয়তান কারো মৃত্যুর সময় ঐ ব্যক্তিকে ফিতনায় ফেলার চেষ্টা করে, তার জন্য যা খারাপ তাকে তার সামনে ভাল হিসেবে এবং তার জন্যে ভালকে খারাপ হিসেবে উপস্থাপন করে। খাত্ত্বাবীর মতে শয়তান কারো মৃত্যুর সময় তাকে পথভ্রষ্ট করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে। ঐ ব্যক্তি যেন তাওবাহ্ না করতে পারে এবং সংশোধন না হতে পারে সে চেষ্টা করে। তাকে আল্লাহর রহমাত থেকে নিরাশ করে অথবা মৃত্যুকে তার নিকট অপ্রিয় করে তোলে, দুনিয়ার জীবনের প্রতি বিতশ্রুদ্ধ হয়। দুনিয়া ছেড়ে আখিরাতের পানে চলে যাওয়ার আল্লাহর সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারে না। ফলে তার জীবনটি শেষ হয় খারাপভাবে এবং আল্লাহর সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটে এমতাবস্থায় যে, আল্লাহ তার ওপর অসন্তুষ্ট থাকেন।
যুদ্ধের ময়দানে কাফিরদের সাথে যুদ্ধরত অবস্থায় সেখান থেকে পিঠ ফিরিয়ে পালিয়ে যাওয়া হারাম। তাই এরূপ হারাম কাজ থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে। এখানে হক থেকে মুখ ফিরানোও উদ্দেশ্য হতে পারে।
দংশিত হওয়া বলতে সাপ, বিচ্ছু বা এ জাতীয় যেসব প্রাণীর দংশনে বিষ থাকে সেসব প্রাণীর দংশনে মৃত্যু হওয়া থেকেও আশ্রয় চাওয়া উচিত। কারণ এরূপ হঠাৎ মৃত্যু কাম্য নয়।