২৩৫৯

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্

২৩৫৯-[৩৭] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ওই মু’মিন বান্দাকে ভালবাসেন, যে গুনাহ করে তওবা্ করে।[1]

وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْعَبْدَ المؤمنَ المفتَّنَ التوَّابَ»

وعن علي قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ان الله يحب العبد المومن المفتن التواب»

ব্যাখ্যা: (إِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الْعَبْدَ الْمُؤْمِنَ الْمُفْتَّنَ التَّوَّابَ) অর্থাৎ- পাপে পরীক্ষিত ব্যক্তি।

(التَّوَّابَ) অর্থাৎ- অধিক তাওবাহকারী এবং আল্লাহ তাকে ভালবাসেন। আর তা কেবল তাওবার দৃষ্টিকোণ থেকে। নিহায়াহ্ গ্রন্থকার বলেন, ফিতনাতে পতিত পরীক্ষিত ব্যক্তিকে আল্লাহ গুনাহের মাধ্যমে পরীক্ষা করেন, এরপর পাপী তাওবাহ্ করলে, আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করলে আল্লাহ তার তাওবাহ্ গ্রহণ করেন। মানাবী বলেন, এটা এ কারণে যে, তা আল্লাহর ইচ্ছা বাস্তবায়ন, তাঁর মহত্ত্বের প্রকাশ ও তাঁর রহমাতের প্রশস্ততার স্থান।

ইবনুল কইয়্যিম (রহঃ) বলেন, ফিতনায় পতিত অধিক তাওবাহকারী ঐ ব্যক্তি যে ব্যক্তি গুনাহের ফিতনাতে পতিত হওয়া মাত্রই তা থেকে তাওবাহ্ করে। কুরতুবী বলেন, এর অর্থ হল, যার থেকে বারংবার গুনাহ এবং তাওবাহ্ সংঘটিত হয়, যখনই সে গুনাহে পতিত হয় তখনই তাওবাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে। কারী বলেন, المفتن অর্থাৎ- পাপ, উদাসীনতা অথবা সার্বক্ষণিক আল্লাহর প্রতি অনুরাগী হওয়া থেকে ছিন্ন হওয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি অধিক হারে পরীক্ষিত হয়। এটা এ কারণে যে, যাতে সে অহংকার এবং প্রতারণার মাধ্যমে পরীক্ষিত না হয়। যা গুনাহসমূহের মাঝে সর্বাধিক গুনাহ এবং সর্বাধিক দোষ।

গুনাহে পুনরায় প্রত্যাবর্তন সংঘটিত হওয়া সত্ত্বেও তাওবাহ্ বিশুদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে হাদীসটি স্পষ্ট। যে ব্যক্তি তাওবাহ্ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য পূর্বোক্ত গুনাহের দিকে প্রত্যাবর্তন না করাকে শর্ত করেছে এবং বলেছে যদি ব্যক্তি পূর্বোক্ত গুনাহের দিকে ফিরে যায় তাহলে তার তাওবাহ্ বাতিল। এ হাদীসটিতে তাদের উক্ত শর্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তাওবাহ্ বিশুদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে কি গুনাহের দিকে কখনো প্রত্যাবর্তন না করাকে শর্ত করা হবে? নাকি এটা কোন শর্ত না? অতঃপর বলেছেন, তাওবাহকারী যখন গুনাহের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে তখন স্পষ্ট হবে তার তাওবাহ্ বাতিল বিশুদ্ধ না। অধিকাংশগণ ঐ মতের উপরে যে, এটি কোন শর্ত না। তাওবার বিশুদ্ধতা কেবল গুনাহ থেকে সরে আসা, তার ব্যাপারে লজ্জিত হওয়া এবং বারংবার প্রত্যাবর্তন বর্জনের ব্যাপারে দৃঢ়তা প্রকাশ করার উপর নির্ভর করে। অতঃপর তাওবাহ্ যদি মানুষের অধিকারের ব্যাপারে হয় তাহলে কি সে অধিকারের ব্যাপারে দায়মুক্ত হতে হবে? এক্ষেত্রে বিশদ ব্যাখ্যা আছে। অচিরেই আল্লাহ চাহেতো তা উল্লেখ করব।

অতঃপর তাওবাহ্ করাবস্থায় পূর্বের গুনাহের দিকে প্রত্যাবর্তন না করার উপর দৃঢ়তা ব্যক্ত করা সত্ত্বেও যদি প্রত্যাবর্তন করে তাহলে সে ঠিক ঐ ব্যক্তির মতো যে নতুনভাবে অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়েছে এবং তার পূর্বোক্ত তাওবাহ্ বাতিল হবে না। আর মাস্আলাটি মৌলিকতার উপর নির্ভরশীল। আর তা হল, নিশ্চয়ই বান্দা যখন কোন গুনাহ থেকে তাওবাহ্ করার পর ঐ গুনাহের দিকে আবারও প্রত্যাবর্তন করবে এমতাবস্থায় কি তার নিকট ঐ গুনাহের পাপ প্রত্যাবর্তন করবে যা থেকে সে তাওবাহ্ করেছিল? এরপর যদি সে ঐ গুনাহের দিকে প্রত্যাবর্তন করে তার উপর স্থির থেকে মারা যায় তাহলে কি সে প্রথম গুনাহ এবং পরবর্তী গুনাহের উপর উভয় গুনাহেরই শাস্তিযোগ্য হবে? নাকি পূর্বের গুনাহ পূর্ণাঙ্গভাবে বাতিল হয়ে যাবে । তাকে কেবল পরবর্তী গুনাহের শাস্তি দেয়া হবে? এ মৌলিকতার ক্ষেত্রে দু’টি উক্তি আছে। এরপর দু’টি উক্তিকে তিনি বিস্তারিতভাবে তার কিতাবের ১ম খণ্ডে ১৫২-১৫৬ পর্যন্ত বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। সুতরাং কেউ চাইলে তা অধ্যয়ন করতে পারে।


হাদিসের মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)