পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাসবীহ (সুবহা-নাল্ল-হ), তাহমীদ (আল হাম্দুলিল্লা-হ), তাহলীল (লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ) ও তাকবীর (আল্ল-হু আকবার)- বলার সাওয়াব
২৩২১-[২৮] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ আমি কী তোমাকে ’আরশের নীচের ও জান্নাতের ভাণ্ডারসমূহের একটি ’কালিমাহ্ বলে দেবো না? (সেটি হলো) ’’লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ’’। (যখন এ কালিমাটি কেউ পড়ে) আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার বান্দা সর্বাত্মকভাবে আমার কাছে আত্মসমর্পণ করল। (উক্ত হাদীস দু’টি বায়হাক্বী দা’ওয়াতুল কাবীর-এ বর্ণনা করেছেন)।[1]
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى كَلِمَةٍ مِنْ تَحْتِ الْعَرْشِ مِنْ كَنْزِ الْجَنَّةِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: أَسلَمَ عَبدِي واستسلم . رَوَاهُمَا الْبَيْهَقِيّ فِي الدَّعْوَات الْكَبِير
ব্যাখ্যা: (مِنْ تَحْتِ الْعَرْشِ مِنْ كَنْزِ الْجَنَّةِ) অর্থাৎ- নিশ্চয়ই তা ‘আরশী আভ্যন্তরীণ গচ্ছিত সম্পদের অন্তর্ভুক্ত এবং সুউচ্চ জান্নাতের উন্নত ধনভাণ্ডারের অন্তর্ভুক্ত। ধ্বংসশীল, ইন্দ্রিয়প্রবণ, নিম্ন গচ্ছিত সম্পদের অন্তর্ভুক্ত না।
একমতে বলা হয়েছে, অর্থাৎ- এমন কালিমাহ্ বা বাক্য যা ‘আরশের তলদেশের গচ্ছিত সম্পদ স্বরূপ।
(يَقُولُ اللّٰهُ تَعَالٰى) ইবনু হাজার আসকালানী বলেন, আল্লাহ তাঁর মালায়িকাহকে (ফেরেশতাদেরকে) শিক্ষা দেয়ার্থে এ বাণী এর পাঠকারী বা যা এর অর্থকে শামিল করে তা পাঠকারী এর পূর্ণাঙ্গতা সম্পর্কে বলেন।
কারী বলেন, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর (يَقُولُ اللّٰهُ) উক্তি এর বাহ্যিক দিক হল, এটি কালিমাহ্ ও তার পাঠকারীর মর্যাদা বর্ণনার জন্য নতুন।
‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী বলেন, আমি বলব, হাকিমে (তুমি বলবে, (لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰهِ) তখন আল্লাহ বলেন, (أَسلَمَ عَبْدِىْ) শেষ পর্যন্ত) এ শব্দে আছে আর ত্বীবীর উক্তি একে সমর্থন করেছে।
(أَسلَمَ عَبْدِىْ) অর্থাৎ- সে উপাসনীয় হুকুম আহকামের অনুস্মরণ করল এবং নিষ্ঠার পথাবলম্বন করল।
(وَاسْتَسْلَمَ) অর্থাৎ- সে যথার্থ আনুগত্য করল। ত্বীবী বলেন, (أَسلَمَ عَبْدِىْ وَاسْتَسْلَمَ) এর অর্থ হল, সংঘটিত হবে এমন সকল বিষয়কে আল্লাহর নিকট সম্পূর্ণভাবে সোপর্দ করল এবং দীনকে একমাত্র আল্লাহর জন্য খাঁটি সাব্যস্ত করে আল্লাহর আনুগত্য করল। এ অধ্যায়ে আরো অনেক হাদীস আছে যার কতক কতককে শক্তিশালী করবে তার একটি ত্ববারানী এর আওসাতে জাবির-এর হাদীস, ইবনু আসাকিরে ইবনু ‘আব্বাস-এর হাদীস, ত্ববারানী এর আওসাতে বাহয বিন হাকিম-এর হাদীস যা তিনি তার পিতা তার দাদা থেকে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটিকে ইমাম আহমাদ তার মুসনাদে কয়েক স্থানে নিয়ে এসেছেন, তার মাঝে একটি তার মুসনাদের ২য় খণ্ডে ২৯৮ পৃষ্ঠাতে এবং বাযযার বর্ণনা করেছেন, হাকিম তার কিতাবের ১ম খণ্ডে ২১ পৃষ্ঠাতে এবং তিনি বলেন, এটি বিশুদ্ধ হাদীস, এর কোন ত্রুটি পাওয়া যায় না এবং যাহাবী তার সমর্থন করেছেন। মুনযিরী তারগীবে হাকিমের কথা নকল করে তাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
হায়সামী তাঁর কিতাবের ১০ম খণ্ডে ৯৯ পৃষ্ঠাতে উক্ত বাণীকে ইমাম আহমাদ ও বাযযারের দিকে সম্পৃক্ত করার পর বলেন, আবূ বালাজ আল কাবীর ছাড়া সকলেই সহীহ এর লেখক। আবূ বালাজ আল কাবীর বলতে ইয়াহ্ইয়া বিন সুলায়ম আর তিনি নির্ভরশীল।