পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (কুরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াতের আদব)
২২০১-[১৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তিন দিনের কমে কুরআন পড়েছে, সে কুরআন বুঝেনি। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, দারিমী)[1]
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَمْ يَفْقَهْ مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ فِي أَقَلَّ مِنْ ثَلَاث» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد والدارمي
ব্যাখ্যা: হাদীসের বাহ্যিক অর্থ থেকে বুঝা যায় যে, তিন দিনের কমে কুরআন খতম করা মাকরূহ। এ মতের উপর অধিকাংশ ‘আলিম, মুহাদ্দিস ফাতাওয়া প্রদান করেছেন। এর কমে খতম করলে কুরআনকে বুঝতে পারবে না এবং তার প্রতিপাদ্য বিষয়াদি অনুধাবন করতে সক্ষম হবে না। তবে তার সাওয়াব হবে। তিন দিনের কমে খতম না করার আরো অনেক বর্ণনা রয়েছে, যথাঃ (عن عائشة إنها قالت ولا أعلم نبي الله قرأ القرآن كله في ليلة) অর্থাৎ- আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে গোটা কুরআন এক রাতে পড়ার কথা সম্পর্কে অবগত নই। তিনি আরো বলেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন দিনের কমে কুরআন খতম করতেন না।
‘আবদুল্লাহ বিন মাস্‘ঊদ বলেন, তোমরা তিন দিনের কমে কুরআন পড়ে শেষ করো না।
ইমাম ত্ববারানী (রহঃ) তাঁর ‘আল কাবীর’ গ্রন্থে বলেন, তোমরা তিন দিনের কমে কুরআন পড়ো না, বরং সাত দিনে খতম কর।
সালাফগণ এ নিয়ে মতানৈক্য করেছেন তাদের অনেকে তিন দিনের কমে পড়াকে মাকরূহ বলেছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন ইমাম আহমাদ, ইসহাক বিন রহ্ওয়াইহি, আবূ ‘উবায়দ প্রমুখ। কোন জাহিরী মতাবলম্বী এটাকে হারাম বলেছেন, তবে কোন বিদ্বান এটার রুখসাত দিয়েছেন তারা দলীল হিসেবে ‘উসমান-এর হাদীস যথাঃ (إنه كان يقرأ القرآن في ركعة يوتر بها) এবং সা‘ঈদ বিন জুবায়র-এর হাদীস যথা (أنه قرأ القرآن في ركعة في الكعبة) উল্লেখ করেন।
হাফেয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) আহমাদ, ইসহাক-এর মতটি গ্রহণ করে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার-এর হাদীস পেশ করেন।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, অধিকাংশ ‘আলিমের অভিমত হলো যে, এর কোন নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই। এটা পাঠকের উৎসাহ, আগ্রহ, চাহিদা, শক্তির উপর নির্ভরশীল। ব্যক্তি বিশেষ অবস্থার কারণে পড়ার সময় বিভিন্ন রকম হতে পারে। সুতরাং যেই ব্যক্তির দ্রুত পড়ার সাথে সাথে আয়াতের ভাবার্থ, তাৎপর্য, মাহাত্ম্য পূর্ণরূপে বুঝতে পারবে সে তাড়াতাড়ি পড়বে। আর এর ব্যতিক্রম হলে সে ধীরে ধীরে পড়বে। মির্‘আতুল মাফাতীহ গ্রন্থকার বলেন, আমার নিকটে আহমাদ, ইসহাক-এর মতটি পছন্দনীয়। কেননা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ এর হাদীস সর্বাধিক অনুসরণযোগ্য।