পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - (কুরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াতের আদব)
২১৯৫-[৯] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে বসে আমাকে বললেন, তুমি আমার সামনে কুরআন পড়ো (আমি তোমার কুরআন পড়া শুনব)। (তাঁর কথা শুনে) আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার সামনে আমি কুরআন পড়ব? অথচ এ কুরআন আপনার ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ কুরআন আমি অন্যের মুখে শুনতে পছন্দ করি। অতঃপর আমি সূরা আন্ নিসা পড়তে শুরু করলাম। আমি ’’তখন কেমন হবে আমি যখন প্রত্যেক উম্মাতের বিরুদ্ধে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং আপনাকেও সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত করব এদের বিরুদ্ধে’’ এ আয়াত পর্যন্ত পৌঁছলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এখন বন্ধ করো। এ সময় আমি তাঁর দিকে তাকালাম। দেখলাম তাঁর দু’ চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابٌ [اٰدٰبُ التِّلَاوَةِ وَدُرُوْسُ الْقُرْاٰنِ]
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ: «اقْرَأْ عَلَيَّ» . قُلْتُ: أَقْرَأُ عَلَيْكَ وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ؟ قَالَ: «إِنِّي أُحِبُّ أَنْ أَسْمَعَهُ مِنْ غَيْرِي» . فَقَرَأْتُ سُورَةَ النِّسَاءِ حَتَّى أَتَيْتُ إِلَى هَذِهِ الْآيَةِ (فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هَؤُلَاءِ شَهِيدا)
قَالَ: «حَسْبُكَ الْآنَ» . فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ فَإِذَا عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ
ব্যাখ্যা: বিচক্ষণ ব্যক্তির মুখে তাৎপর্যপূর্ণ কথা শোভনীয় এবং প্রিয় কথা প্রেমিকের মুখে বেশি আনন্দ দান করে। তাই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন অন্যের মুখ থেকে আল্লাহর প্রিয় বাণী শোনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যাতে কুরআন পেশ করা অন্যের নিকটে সুন্নাত হিসেবে গণ্য হয়ে যায়। হয়তবা তিনি পাঠকৃত আয়াতকে গবেষণা বা চিন্তা-ভাবনা করার জন্য পাঠ করতে বলেছিলেন। কেননা, শ্রবণকারী ব্যক্তি পাঠকের চাইতে বেশি বোঝার সুযোগ পায়। আর পাঠক তার পাঠের নিয়ম-কানুনের প্রতি বেশি খেয়াল রাখে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়াত শ্রবণ করার পর ক্রন্দন করেছেন তার উম্মাতের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে, কেননা তিনি তাদের জ্ঞান ও ‘আমল সম্পর্কে সাক্ষ্য প্রদান করবেন। হাদীসে বলো হয়েছে যে, কুরআন শ্রবণ করা ও এর প্রতি মনোযোগ দেয়া ও ক্রন্দন করা মুস্তাহাব।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, কুরআন পাঠের সময় ক্রন্দন করা সৎ মানুষের গুণ। ইমাম গাযযালী (রহঃ) বলেন, কেউ কুরআন পাঠের সময়ে কাঁদতে চাইলে মনকে চিন্তিত করতে হবে এবং তার মধ্যে বর্ণিত শাস্তি, ধমক, হুমকি, প্রতিশ্রুতি ইত্যাদি বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করে ভয় করতে হবে। তারপর সে স্বীয় অভ্যন্তরে সেগুলোর কমতি বুঝতে পারবে। এরূপ হলে তার কান্না আসবে।