২১৩৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

২১৩৩-[২৫] ’আবদুর রহমান ইবনু ’আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইরশাদ করেছেনঃ তিনটি জিনিস কিয়ামতের দিন আল্লাহর ’আরশের নীচে থাকবে। (১) কুরআন, এ কুরআন বান্দাদের (পক্ষে বিপক্ষে) আর্জি পেশ করবে। এর যাহের ও বাতেন দু’দিক রয়েছে। (২) আমানাত ও (৩) আত্মীয়তার বন্ধন। (এ তিনটি জিনিসের প্রত্যেকে ফরিয়াদ করবে, হে আল্লাহ! যে আমাকে রক্ষা করেছে তুমি [আল্লাহ] তাকে রক্ষা করো। যে আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে আল্লাহ তাকে ছিন্ন করো।) (ইমাম বাগাবী: শারহুস্ সুন্নাহ)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ثَلَاثَةٌ تَحْتَ الْعَرْشِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْقُرْآنُ يُحَاجُّ الْعِبَادَ لَهُ ظَهْرٌ وَبَطْنٌ وَالْأَمَانَةُ وَالرَّحِمُ تُنَادِي: أَلَا مَنْ وَصَلَنِي وَصَلَهُ اللَّهُ وَمَنْ قَطَعَنِي قَطَعَهُ اللَّهُ . رَوَاهُ فِي شرح السّنة

عن عبد الرحمن بن عوف عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: ثلاثة تحت العرش يوم القيامة القران يحاج العباد له ظهر وبطن والامانة والرحم تنادي: الا من وصلني وصله الله ومن قطعني قطعه الله . رواه في شرح السنة

ব্যাখ্যা: কিয়ামতের দিন তিনটি জিনিসের বিশেষ আকৃতি অবয়ব হবে এবং তারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করবে। এরা আল্লাহর কাছে বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। এর প্রথমটি হলো আল কুরআন। যে ব্যক্তি কুরআনের সীমারেখা মেনে চলবে কুরআন তার পক্ষে সুপারিশ করবে, ফলে তার নাজাতের ব্যবস্থা হবে। এটা না হলে কুরআন তার বিপক্ষে সুপারিশ করবে, ফলে তা তার ধ্বংসের কারণ হবে।

 যেমনভাবে অন্য হাদীসে এসেছে, القران حجة لك او عليك

অর্থাৎ- আল কুরআন হয় তোমার পক্ষে দলীল হবে আর না হয় তোমার বিপক্ষে। এই কুরআনের বাহির এবং ভিতর দু’টি দিক আছে। কেউ বলেন, এর অর্থ হলো শব্দ এবং অর্থ। কেউ বলেছেন, বাহির হলো এর তিলাওয়াত এবং ভিতর হলো তার সূক্ষ্ম চিন্তা ও গবেষণা। কেউ আবার বলেছেন, বাহির হলো প্রত্যেক বালিগ ব্যক্তিই এর বিধান মোতাবেক ‘আমলে বাধ্য এবং তার ওপর ঈমান আনতে বাধ্য। আর ভিতর হলো স্তর ভেদে মানুষ তার অর্থ অনুধাবন করে থাকে। কুরআন পাঠ করে কেউ স্বাভাবিক জ্ঞান অর্জন করে থাকে কেউ মধ্যম কেউবা আবার গভীর জ্ঞান হাসিল করে থাকে; এটাই হলো তার বাহির ও ভিতরের দৃষ্টান্ত।

দ্বিতীয়টি হলো আমানাত। আল্লাহর প্রত্যেক হক-ই হলো আমানাত। অথবা তা এমন একটি বিষয় যা পালন করা আবশ্যক।

আল্লাহ তা‘আলার কথায় যার ব্যাখ্যা এসেছে, إِنَّا عَرَضْنَا الْأَمَانَةَ

‘‘আমি আমানাত পেশ করছি।’’ (সূরা আল আহযাব ৩৩ : ৭২)

নিশ্চয়ই এটা আল্লাহর হক, অবশ্য পালনীয়।

তৃতীয়টি হলো রেহম বা বাচ্চাদান (জরায়ু) উদ্দেশ্য হলো আত্মীয়তার সম্পর্ক। রেহম বা আত্মীয়তার সম্পর্ক কিয়ামতের দিন চিৎকার করে বলবে, অথবা আমানাত এবং রেহম উভয়েই চিৎকার করে বলবে, অথবা কুরআন আমানাত এবং রেহম সকলেই চিৎকার করে বলবে। কিন্তু কুরআন ও আমানাতের কথা স্বতন্ত্রভাবে বলা হয়েছে। সুতরাং এই রেহম আল্লাহ তা‘আলার নিকট চিৎকার করে বলবে, এটাই শক্তিশালী মত। সে বলবে যে আমার সম্পর্ক রক্ষা করেছে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করুন, আর যে আমার সাথে (আত্মীয়তার) সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তার সাথে (রহমাতের) সম্পর্ক ছিন্ন করুন।

আর যদি ঐ চিৎকার ও ঘোষণা কুরআন, আমানাত এবং রেহম তিনটি জিনিসের-ই হয়ে থাকে তাও হতে পারে, প্রত্যেকের হক আদায়ের দায়িত্ব রয়েছে, যে তা আদায় করবে সে তা আদায়কারীর দু‘আ লাভ করবে, যে আদায় করবে না সে বদ্দু‘আ পাবে।

এখানে আল কুরআনকে আগে আনা হয়েছে এজন্য যে, কুরআন হলো আল্লাহর হক আর আল্লাহর হক সবচেয়ে বড় এবং অগ্রণীয়।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৮: কুরআনের মর্যাদা (كتاب فضائل القراٰن)