২১১৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

২১১৩-[৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’টি ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ে ঈর্ষা করা যায় না। প্রথম, সে ব্যক্তি যাকে আল্লাহ কুরআনের (’ইলম) দান করেছেন, আর সে তা দিন-রাত অধ্যয়ন করে। দ্বিতীয়, ঐ ব্যক্তি যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং তা সে সকাল সন্ধ্যায় দান করে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا حَسَدَ إِلَّا على اثْنَيْنِ: رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا فَهُوَ يُنْفِقُ مِنْهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَار

وعن ابن عمر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: لا حسد الا على اثنين: رجل اتاه الله القران فهو يقوم به اناء الليل واناء النهار ورجل اتاه الله مالا فهو ينفق منه اناء الليل واناء النهار

ব্যাখ্যা: ‘আরাবীতে حسد (হাসাদ) শব্দটি হিংসা, পরশ্রীকাতর ইত্যাদি অর্থে ব্যবহার হয়। যা শার‘ঈভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু এখানে শব্দটি غبطة (গিবত্বাহ্) বা ঈর্ষা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে যা বৈধ। হাফেয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, হাসাদ বা হিংসা হলোঃ কারো ওপর প্রদত্ত নিয়ামত বিনষ্ট বা ধ্বংস কামনা করা এবং ঐ নিয়ামত অন্য কারো না হয়ে শুধু নিজের হোক এরূপ কামনা করা। পক্ষান্তরে হাসাদ যদি গিবত্বাহ্ বা ঈর্ষা অর্থে হয় তখন এর অর্থ হলোঃ কারো নি‘আমাতে দেখে তার স্থায়িত্ব কামনা করা এবং নিজের জন্যও অনুরূপ নিয়ামত (আসুক তা) কামনা করা, এটা সম্পূর্ণরূপে বৈধ। শুধু বৈধই নয়, ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে এ জাতীয় ঈর্ষা প্রশংসনীয়-ই বটে।

ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, ‘উলামাগণ হাসাদ-কে দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন।

১. হাক্বীক্বী বা বাস্তবিক এবং

২. মাজাযী বা রূপক।

হাক্বীক্বী বা বাস্তবটির অর্থ হলো হিংসা, যা হারাম, পক্ষান্তরে মাজাযী বা রূপকটির অর্থ হলো গিবত্বাহ্ বা ঈর্ষা, যা বৈধ, এমনকি কখনো তা প্রশংসনীয়।

অত্র হাদীসে যে হাসাদ-এর কথা বলা হয়েছে সেটি হলো ‘হাসাদ’ শব্দের রূপক অর্থ, অর্থাৎ- গিবত্বাহ্ বা ঈর্ষা। এটা কোন কোন বিষয়ে প্রশংসনীয়, তবে কোন খারাপ কাজে এটা বৈধ নয়।

যেমন সহীহুল বুখারীতে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, তিনি তার এক প্রতিবেশীকে বলতে শুনেছেন, আফসোস! যদি আমাকে অমুকের মতো কুরআন দান করা হতো তাহলে সে যেমন ‘আমল করে আমিও অনুরূপ ‘আমল করতাম।

দু’জন ব্যক্তি বলতে দু’টি বৈশিষ্ট্য। কুরআন নিয়ে দন্ডায়মান হওয়ার অর্থ হলো কুরআন মুখস্থ করা, তা তিলাওয়াত করা, (চাই সালাতে হোক, চাই সালাতের বাইরে হোক) তা অপরকে শিক্ষা দেয়া এবং তার হুকুম মোতাবেক ‘আমল করা। দ্বিতীয় সম্পদশালী ব্যক্তি সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয়ের ব্যাপারে দিবা-রাতের কোন পরোয়া করে না, বরং সদা-সর্বদা সে (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে থাকে। আহমাদ-এর বর্ণনায় হাক্বের পথে ব্যয়ের কথা বলা আছে। দিনে রাতে ব্যয় করার অর্থ এও হতে পারে প্রকাশ্যে এবং গোপনে দান করা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৮: কুরআনের মর্যাদা (كتاب فضائل القراٰن)