পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - লায়লাতুল কদর
২০৮৬-[৪] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের প্রথম দশ দিনে ইতিকাফ করেছেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি তুর্কী ছোট তাঁবুতে ইতিকাফ করেছেন মধ্যের দশ দিন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর মাথা (তাঁবুর বাইরে) বের করে বলেছেন, আমি ’কদর রজনী’ সন্ধান করার জন্য প্রথম দশ দিনে ইতিকাফ করেছি। তারপর করেছি মাঝের দশ দিনে। তারপর আমার কাছে তিনি এসেছেন। মালাক (ফেরেশতা) আমাকে বলেছেন, ’লায়লাতুল কদর’ রমাযানের শেষ দশ দিনে। অতএব যে আমার সাথে ’ইতিকাফ’ করতে চায় সে যেন শেষ দশ দিনে করে। আমাকে স্বপ্নে ’কদর রজনী’ নির্দিষ্ট করে দেখিয়েছেন। তারপর তা আমাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে (অর্থাৎ- জিবরীল (আঃ) আমাকে বললেন, অমুক রাতে শবে কদর। তারপর তা কোন্ রাত আমি ভুলে গিয়েছি)।
(স্বপ্নে) নিজেকে দেখলাম যে, আমি এর ভোরে (অর্থাৎ- লায়লাতুল কদরের ভোরে) কাদামাটিতে সিজদা্ করছি। যেহেতু আমি ভুলে গিয়েছি সেটা কোন্ রাত ছিল। তাই এ রাতকে (রমাযানের) শেষ দশ দিনের মধ্যে সন্ধান করো। তাছাড়াও লায়লাতুল কদরকে বেজোড় রাতে অর্থাৎ- শেষ দশের বেজোড় রাতে সন্ধান করো। বর্ণনাকারী বলেন, (যে রাতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে দেখেছিলেন) সে রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। মসজিদের ছাদ খেজুরের ডালপাতার হওয়ায় একুশতম রাতের সকালে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কপালে পানি ও মাটির চিহ্ন ছিল। (এ হাদীস বর্ণনার ব্যাপারে অর্থের দিক দিয়ে বুখারী ও মুসলিম একমত। অবশ্য এ পর্যন্ত বর্ণনার শব্দগুলো ইমাম মুসলিম উদ্ধৃত করেছেন। আর রিওয়ায়াতের বাকী শব্দগুলো উদ্ধৃত করেছেন ইমাম বুখারী।)[1]
بَابُ لَيْلَةِ الْقَدْرِ
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اعْتَكَفَ الْعَشْرَ الْأَوَّلَ مِنْ رَمَضَانَ ثُمَّ اعْتَكَفَ الْعَشْرَ الْأَوْسَطَ فِي قُبَّةٍ تُرْكِيَّةٍ ثُمَّ أَطْلَعَ رَأسه. فَقَالَ: «إِنِّي اعتكفت الْعشْر الأول ألتمس هَذِه اللَّيْلَة ثمَّ اعتكفت الْعَشْرَ الْأَوْسَطَ ثُمَّ أُتِيتُ فَقِيلَ لِي إِنَّهَا فِي الْعشْر الْأَوَاخِر فَمن اعْتَكَفْ مَعِي فَلْيَعْتَكِفِ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ فَقَدْ أُرِيتُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ ثُمَّ أُنْسِيتُهَا وَقَدْ رَأَيْتُنِي أَسْجُدُ فِي مَاءٍ وَطِينٍ مِنْ صَبِيحَتِهَا فَالْتَمِسُوهَا فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ وَالْتَمِسُوهَا فِي كُلِّ وِتْرٍ» . قَالَ: فَمَطَرَتِ السَّمَاءُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ وَكَانَ الْمَسْجِدُ عَلَى عَرِيشٍ فَوَكَفَ الْمَسْجِدُ فَبَصُرَتْ عَيْنَايَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَى جَبْهَتِهِ أَثَرُ المَاء والطين وَالْمَاء مِنْ صَبِيحَةِ إِحْدَى وَعِشْرِينَ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ فِي الْمَعْنَى وَاللَّفْظُ لِمُسْلِمٍ إِلَى قَوْلِهِ: فَقِيلَ لِي: إِنَّهَا فِي الْعشْر الْأَوَاخِر . وَالْبَاقِي للْبُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা, অর্থাৎ- শেষ দশকে বেজোড় রাতে সন্ধান কর। তার প্রথম রাত হলো ২১ তারিখ, আর সর্বশেষ হলো ২৯ তারিখ। তবে জোড় রাত নয়।
আলোচ্য হাদীসে নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে যা দেখেছিলেন, তার ব্যাখ্যা এমনও হতে পারে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অনুরূপ জাগ্রতাবস্থায় দেখতেন। আর এ হাদীস দ্বারা যারা মনে করেন যে, লায়লাতুল কদর সর্বদাই ২১শে রাতে হবে তারা দলীল গ্রহণ করেছেন। তবে এ হাদীসে তাদের কোন দলীল নেই। কেননা এটি উক্ত বছরের জন্য প্রযোজ্য।
বার বার এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে যে, নিশ্চয়ই তা স্থানান্তরিত হবে। অর্থাৎ- তা ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ তারিখেও হতে পারে। বছরের ভিন্নতায় শেষ দশকের বিভিন্ন রাতে তা হতে পারে।