২০৩৬

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - নফল সিয়াম প্রসঙ্গে

২০৩৬-[১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন (নফল) সওম রাখা শুরু করতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কি এখন সওম বন্ধ করবেন না। আবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন সওম রাখা ছেড়ে দিতেন আমরা বলতাম, এখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কি আর সওম রাখবেন না। রমাযান (রমজান) ছাড়া অন্য কোন মাসে তাঁকে পূর্ণ মাস সওম রাখতে দেখিনি। আর শা’বান ছাড়া অন্য কোন মাসে তাঁকে আমি এত বেশী সওম রাখতে দেখিনি। আর একটি বর্ণনায় রয়েছে তিনি [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু দিন ছাড়া শা’বানের গোটা মাস সওম পালন করতেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ صِيَامِ التَّطَوُّعِ

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ: لَا يُفْطِرُ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ: لَا يَصُومُ وَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتكْمل صِيَام شهر قطّ إِلَّا رَمَضَانَ وَمَا رَأَيْتُهُ فِي شَهْرٍ أَكْثَرَ مِنْهُ صِيَامًا فِي شَعْبَانَ
وَفِي رِوَايَةٍ قَالَتْ: كَانَ يَصُوم شعْبَان كُله وَكن يَصُوم شعْبَان إِلَّا قَلِيلا

عن عاىشة قالت: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يصوم حتى نقول: لا يفطر ويفطر حتى نقول: لا يصوم وما رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم استكمل صيام شهر قط الا رمضان وما رايته في شهر اكثر منه صياما في شعبان وفي رواية قالت: كان يصوم شعبان كله وكن يصوم شعبان الا قليلا

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা ‘আমীর আল ইয়ামীনী (রহঃ) বলেন, আলোচ্য হাদীসটি এ মর্মে দলীল যে, নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নফল সিয়াম পালনের নির্ধারিত কোন মাস ছিল না। বরং কখনও তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লাগাতার সিয়াম পালন করতেন, আবার কখনও লাগাতার সিয়াম বর্জন করতেন। তার ব্যস্ততাসাপেক্ষে তার চাহিদা অনুযায়ী সিয়াম পালন ও সিয়াম বর্জন করতেন। আর শা‘বান মাসে অধিক সিয়াম পালন দ্বারা উদ্দেশ্য হলোঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান (রমজান) মাস ছাড়া শা‘বান ও অন্যান্য মাসেও সিয়াম পালন করতেন। তবে অন্যান্য মাসের তুলনায় শা‘বান মাসে অধিক সিয়াম পালন করতেন। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) অনুরূপ বক্তব্য উল্লেখ করেছেন। তবে শা‘বানে অধিক সিয়াম পালনের বিশেষত্ব সম্পর্কে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে।

হাফেয আসকালানী (রহঃ) বলেন, এ মর্মে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিশুদ্ধ হাদীসই উত্তম। হাদীসটি বর্ণনা করেছেন নাসায়ী এবং ইবনু খুযায়মাহ্ তা সহীহ বলেছেন। উসামাহ্ বিন যায়দ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি শা‘বান মাসে যত সিয়াম পালন করেন অন্য মাসে তো আপনাকে তত সিয়াম পালন করতে দেখি না।

তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, একটি মাস যা থেকে মানুষ উদাসীন থাকে, আর তা হলো রজব ও রমাযানের মধ্যবর্তী মাস। আর এ মাসে বিশ্ব প্রতিপালকের দরবারে ‘আমলনামা উঠানো হয়। অতএব আমি চাই যে, আমার ‘আমলনামাটা সিয়াম অবস্থায় উঠানো হোক। ‘আল্লামা মুবারকপূরী (রহঃ) বলেন, উসামাহ্ বিন যায়দ এর বর্ণিত হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, বিশেষ ‘আমলনামা উঠানো, প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যার ‘আমলনামা উঠানো হয়, এ হাদীস দ্বারা তা উদ্দেশ্য নয়।

(كَانَ يَصُوْمُ شَعْبَانَ كُلَّه) এখানে পূর্ণ শা‘বান মাস সিয়াম পালন দ্বারা উদ্দেশ্য আধিক্য বুঝানো, পূর্ণ শা‘বান উদ্দেশ্য নয়। যা পরবর্তী (إِلَّا قَلِيْلًا) শব্দ দ্বারা বুঝা যায়। কারণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান (রমজান) ব্যতীত কোন মাসই পূর্ণ সিয়াম পালন করতেন না। সহীহুল বুখারীতে ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস রয়েছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান (রমজান) ব্যতীত কোন মাসেই পূর্ণ করে সিয়াম পালন করতেন না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم)