২০১৮

পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সওম পবিত্র করা

২০১৮-[২০] ’আত্বা (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সায়িম (রোযাদার) ব্যক্তি কুলি করে মুখ থেকে পানি ফেলে দেয় আর তার মুখের থুথু বা পানির অবশিষ্টাংশ যা থেকে যায় তাতে সওমের কোন ক্ষতি হবে না। আর কোন ব্যক্তি যেন চুইংগাম না চিবায়। যদি চিবানোর কারণে তার রস গিলে ফেলে, তাহলে তার ক্ষেত্রে আমি বলিনি যে, সে সওম ভঙ্গ করল, বরং তা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। (বুখারী- তরজমাতুল বাব)[1]

وَعَن عَطاء قَالَ: إِن مضمض ثُمَّ أَفْرَغَ مَا فِي فِيهِ مِنَ الْمَاءِ لَا يضيره أَنْ يَزْدَرِدَ رِيقَهُ وَمَا بَقِيَ فِي فِيهِ وَلَا يَمْضُغُ الْعِلْكَ فَإِنِ ازْدَرَدَ رِيقَ الْعِلْكَ لَا أَقُولُ: إِنَّهُ يُفْطِرُ وَلَكِنْ يُنْهَى عَنْهُ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ فِي تَرْجَمَةِ بَابٍ

وعن عطاء قال: ان مضمض ثم افرغ ما في فيه من الماء لا يضيره ان يزدرد ريقه وما بقي في فيه ولا يمضغ العلك فان ازدرد ريق العلك لا اقول: انه يفطر ولكن ينهى عنه. رواه البخاري في ترجمة باب

ব্যাখ্যা: (ثُمَّ أَفْرَغَ مَا فِىْ فِيهِ مِنَ الْمَاءِ) ‘‘কুলি করার পর মুখের পানি যখন ফেলে দিবে।’’ (لَا يَضِيْرُه أَنْ يَزْدَرِدَ رِيقَه) ‘‘তখন মুখের থুথু গিলে ফেললে তার সিয়ামের কোন ক্ষতি করবে না।’’ (وَمَا بَقِيَ فِىْ فِيْهِ) ‘‘আর তার মুখে যা বাকী থাকে তা গিলে ফেললেও কোন ক্ষতি হবে না।

ইবনু বাত্ত্বাল বলেনঃ এর প্রকাশমান অর্থ এই যে, কুলি করার পর মুখের অভ্যন্তরের অবশিষ্ট পানি থুথুর সাথে গিলে ফেললে সিয়ামের কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ অর্থ উদ্দেশ্য নয়। কেননা ‘আবদুর রাজ্জাক-এর বর্ণনায় আছে, وماذا بقي في فيه অর্থাৎ- কুলি করে মুখের পানি ফেলে দিয়ে তাতে আর কিই বা অবশিষ্ট থাকে। কুসতুলানী বলেনঃ কুলি করে মুখের পানি ফেলে দিলে মুখের অভ্যন্তরে ভিজা ছাড়া আ কী থাকে? অতএব এমতাবস্থায় থুথু গিলে ফেললে তার সিয়ামের কোন ক্ষতি হবে না।

হাফেয ইবনু হাজার বলেনঃ এই মু‘আল্লাক হাদীসটি সা‘ঈদ ইবনু মানসূর, ইবনুল মুবারক সূত্রে ইবনু জুরায়জ থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি ‘আত্বাকে প্রশ্ন করলাম, সিয়াম পালনকারী কুলি করার পর থুথু গিলে ফেললে কি হবে? উত্তরে তিনি বললেন, তার সিয়ামের কোন ক্ষতি হবে না। কুলি করার পর তার মুখে কিই বা আর অবশিষ্ট থাকে?

ইবনু কুদামাহ্ বলেনঃ যা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয় তা গিলে ফেললে সিয়ামের কোন ক্ষতি হবে না যেমন- মুখের থুথু, ধূলাবালি ইত্যাদি। কেননা তা থেকে বেঁচে থাকা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ইবনুল হুমাম ও অন্যান্য হানাফী বিদ্বানগণ বলেনঃ ধূলাবালি, ধোয়া অথবা মাছি যদি সায়িমের মুখে প্রবেশ করে এতে সিয়ামের কোন ক্ষতি হবে না। কেননা তা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। যেমন নাকি কুলি করার পর মুখের অভ্যন্তরের ভিজা থেকে বেঁচে থাকা অসম্ভব।

(فَإِنِ ازْدَرَدَ رِيقَ الْعِلْكَ لَا أَقُولُ: إِنَّه يُفْطِرُ) ‘‘কেউ যদি চুইংগাম চিবানোর পর থুথু গিলে ফেলে তাহলে আমি বলি না যে, তার সিয়াম ভেঙ্গে গেছে।’’

ইবনুল মুনযির বলেনঃ অধিকাংশ ‘আলিমগণ সিয়ামরত অবস্থায় চুইংগাম চিবানোর অনুমতি দিয়েছেন এই শর্তে যে, তা যেন গলে গিয়ে অভ্যন্তরে প্রবেশ না করে। তা যদি গলে যায়, অতঃপর এর ঢুক গিলে ফেলে তাহলে সিয়াম ভঙ্গ হয়ে যাবে।

ইসহাক ইবনু মানসূর বলেনঃ আমি ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল-কে জিজ্ঞেস করলাম, সিয়াম পালনকারী কি চুইংগাম চিবাতে পারবে? তিনি বললেন, না। অতঃপর বললেন, আমাদের সহচরগণ বলেন, চুইংগাম দুই প্রকার। এক প্রকার এমন যে, তা গলে যায়, এ জাতীয় চুইংগাম চিবানো যাবে না। যদি তা চিবায় এবং তার কোন অংশ পেটে প্রবেশ করে তাহলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যাবে।

এক প্রকার চুইংগাম এমন যে, তা যত চিবাবে তত শক্ত হবে। এ প্রকার চুইংগাম চিবানো মাকরূহ, হারাম নয়। ইমাম শা‘বী, ইব্রাহীম নাখ্‘ঈ, মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলী, কাতাদাহ্, শাফি‘ঈ এবং হানাফীগণের মতে তা মাকরূহ।

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) তা চিবানোর অনুমতি দিয়েছেন। কেননা এ জাতীয় চুইংগাম চিবালেও তার কোন অংশ পেটের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে না, যেমন- ছোট পাথর মুখে দিয়ে চিবালে তার কিছুই পেটে প্রবেশ করে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم)