১৯৭৯

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নতুন চাঁদ দেখার বর্ণনা

১৯৭৯-[১১] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একবার) চাঁদ দেখার জন্য লোকেরা একত্রিত হলো। (এ সময়) আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানালাম যে, আমি চাঁদ দেখেছি। এতে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে সওম পালন শুরু করলেন এবং লোকদেরকেও সওমের পালনের নির্দেশ দিলেন। (আবূ দাঊদ, দারিমী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: تَرَاءَى النَّاسُ الْهِلَالَ فَأَخْبَرْتُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنِّي رَأَيْتُهُ فَصَامَ وَأَمَرَ النَّاسَ بِصِيَامِهِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد والدارمي

وعن ابن عمر قال: تراءى الناس الهلال فاخبرت رسول الله صلى الله عليه وسلم اني رايته فصام وامر الناس بصيامه. رواه ابو داود والدارمي

ব্যাখ্যা: (تَرَاءَى النَّاسُ الْهِلَالَ) ‘‘লোকেরা একে অপরকে চাঁদ দেখাল’’ অর্থাৎ- লোকজন চাঁদ দেখার জন্য সমবেত হল এবং চাঁদ খুঁজতে থাকল।

(فَأَخْبَرْتُ أَنِّىْ رَأَيْتُه) ‘‘আমি অবহিত করলাম যে, আমি চাঁদ দেখেছি।’’

(أَمَرَ النَّاسَ بِصِيَامِه) ‘‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজনকে সিয়াম পালনের নির্দেশ দিলেন।’’

এতে জানা গেল যে, একজনের সংবাদ গ্রহণযোগ্য এবং রমাযানের চাঁদ সাব্যস্ত হওয়ার ক্ষেত্রে ইমাম শাফি‘ঈর প্রথম অভিমত এটাই। তবে তার সর্বশেষ অভিমত হল চাঁদ সাব্যস্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির সাক্ষ্য প্রয়োজন। ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল-এর অভিমতও তাই। পক্ষান্তরে ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও আবূ ইউসুফ (রহঃ)-দ্বয়ের অভিমত এই যে, রমাযানের চাঁদ সাব্যস্ত হওয়ার জন্য একজন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির সাক্ষ্যই যথেষ্ট। যদিও তিনি দাস হন। অনুরূপভাবে এ ক্ষেত্রে একজন মহিলার সাক্ষ্য যথেষ্ট যদিও তিনি দাসী হন। তবে শাওয়ালের চাঁদ সাব্যস্ত হওয়ার জন্য দু’জন ন্যায়পরায়ণ পুরুষ সাক্ষীর প্রয়োজন অথবা একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলার সাক্ষী প্রয়োজন। তবে ইমাম শাফি‘ঈর নিকট এক্ষেত্রে মহিলার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়।

ইমাম মালিক, আওযা‘ঈ ও ইসহাক ইবনু রাহওয়াইহি-এর মতে রমাযানের চাঁদ হোক আর শাওয়ালের চাঁদ হোক উভয় ক্ষেত্রেই কমপক্ষে তারা ‘আবদুর রহমান ইবনু যায়দ ইবনুল খাত্ত্বাব বর্ণিত হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করেছেন। তিনি (‘আবদুর রহমান) বলেন, আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের সাথে বসেছি এবং তাদেরকে জিজ্ঞেস করেছি। তারা আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা চাঁদ দেখে সিয়াম পালন (শুরু) কর এবং চাঁদ দেখে সিয়াম ভঙ্গ (শেষ) কর এবং কুরবানী কর। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলে মাস ত্রিশদিন পূর্ণ কর। তবে যদি দু’জন মুসলিম সাক্ষ্য প্রদান করে তাহলে সিয়াম পালন (শুরু) কর এবং সিয়াম ভঙ্গ কর। হাদীসটি ইমাম আহমাদ বর্ণনা করেছেন। ইমাম শাওকানী বলেনঃ এ হাদীসের সানাদে কোন ত্রুটি নেই।

জমহূরগণ এ হাদীসের জবাবে বলেনঃ এ হাদীসের স্পষ্ট বক্তব্য হল দু’জনের সাক্ষী গ্রহণ কর আর এর বিপরীত তথা অস্পষ্ট বক্তব্য হলে একজনের সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়। পক্ষান্তরে ইবনু ‘আব্বাস ও ইবনু ‘উমার (রাঃ)-দ্বয় হতে বর্ণিত হাদীসের স্পষ্ট বক্তব্য হল, একজনের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য। আর হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণের নীতিমালা হল, স্পষ্ট বক্তব্য অস্পষ্ট বক্তব্যের উপর প্রাধান্য পাবে। তাই তাকে প্রাধান্য দেয়া ওয়াজিব। অতএব রমাযানের চাঁদ সাব্যস্ত হওয়ার ক্ষেত্রে একজনের সাক্ষী যথেষ্ট।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم)