১৯৩৮

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উত্তম সদাক্বার বর্ণনা

১৯৩৮-[১০] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল! কোন্ সদাক্বাহ্ (সাদাকা) বেশী উত্তম? তিনি বললেন, কম সম্পদশালীর বেশী (কষ্টশ্লিষ্ট করে) সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দেয়া শুরু করবে তাদেরকে দিয়ে যাদের দেখাশুনা তোমার দায়িত্ব। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «جُهْدُ الْمُقِلِّ وَابْدَأْ بِمَنْ تَعُولُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: يا رسول الله اي الصدقة افضل؟ قال: «جهد المقل وابدا بمن تعول» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীস ও পূর্বোক্ত ‘স্বচ্ছল অবস্থায় দান করা অধিক উত্তম দান’ হাদীসের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করতে গিয়ে বলা যায় দানের ক্ষেত্রে দানকারী, তার ভরসার দৃঢ়তা ও বিশ্বাসের দুর্বলতার ভিত্তিতে ফাযীলাত বিভিন্ন হয়। ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) বলেন, দানকারীর অসচ্ছল অবস্থা, অভাব-অনটনে ধৈর্য ধারণ করা না করা এবং কম সম্পদে তুষ্ট থাকা না থাকার উপর নির্ভর করে। এ অধ্যায়ে বর্ণিত হাদীসসমূহ সে অর্থই প্রমাণ করে। আল্লামা শাওকানী (রহঃ) উপর্যুক্ত দু’ ধরনের হাদীসের মধ্যকার বৈপরীত্য উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান হাদীসের সমর্থনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَيُؤْثِرُوْنَ عَلى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ

অর্থাৎ ‘‘আর তারা তাদেরকে নিজেদের ওপর অগ্রাধিকার দেয় নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও।’’ (সূরাহ্ আল হাশর ৫৯ : ৯)

পূর্বোক্ত স্বচ্ছল অবস্থায় দান করার হাদীসের সমর্থনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَلَا تَجْعَلْ يَدَكَ مَغْلُولَةً إِلى عُنُقِكَ وَلَا تَبْسُطْهَا كُلَّ الْبَسْطِ

অর্থাৎ ‘‘তুমি তোমার হাত তোমার গ্রীবায় আবদি করে রেখ না এবং তা সম্পূর্ণ প্রসারিতও করো না।’’ (সূরাহ্ আল ইসরা/ইসরাঈল ১৭ : ২৯)

এ দু’ হাদীসের মধ্যে সমন্বয়ে বলা যায়, কেউ যদি তার সমস্ত সম্পদ দান করে ফেললে মানুষের কাছে হাত পাততে হবে/ভিক্ষা করে চলতে হবে এমতাবস্থায় তার জন্য স্বচ্ছল অবস্থায় দান করা অধিক উত্তম। আবার কেউ যদি অভাব-অনটনে ধৈর্যধারণ করে তার অতি প্রয়োজনীয় সম্পদ থেকে দান করে তাহলে তা হবে সর্বোত্তম দান।

এমনও হতে পারে যে, স্বচ্ছলতা/ধনাঢ্যতা বলতে অন্তরের ধনাঢ্যতা বুঝানো হয়েছে। যেমনভাবে বুখারী-মুসলিমে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে এসেছে- ‘‘ধন-সম্পদের আধিক্যই ধনাঢ্যতা নয়, অন্তরের ধনাঢ্যতাই আসল ধনাঢ্যতা।’’ (স্বচ্ছলতা বলতে অন্তরের ধনাঢ্যতা বুঝালে আর কোন বৈপরীত্য থাকে না।)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة)