১৮০৮

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যেসব জিনিসের যাকাত দিতে হয়

১৮০৮-[১৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) এর স্ত্রী যায়নাব (রাঃ)বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে বললেন, হে মেয়েরা! তোমাদের মালের যাকাত আদায় করো, অলংকার হলেও। কেননা কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তোমাদের বেশিরভাগই জাহান্নামী হবে। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ زَيْنَبَ امْرَأَةِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَتْ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ وَلَوْ مِنْ حُلِيِّكُنَّ فَإِنَّكُنَّ أَكْثَرُ أَهْلِ جَهَنَّمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن زينب امراة عبد الله قالت: خطبنا رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: «يا معشر النساء تصدقن ولو من حليكن فانكن اكثر اهل جهنم يوم القيامة» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে মহিলাদের সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করতে বলা হয়েছে, যদিও সোনা ও রূপার অলঙ্কার থেকে হয়। ইমাম আত্ তিরমিযীও উক্ত হাদীস থেকে তাই বুঝেছেন।

তিনি অধ্যায় রচনা করেছেনঃ (অলঙ্কারে যাকাত ওয়াজিবের অধ্যায়)

কারণ এখানে ‘আমর-এর সিগা ব্যবহার করা হয়েছে। আর ‘আমরের সিগা ওয়াজিবের জন্য ব্যবহার হয়। আর লেখকও তাই বুঝেছেন।

দ্বিতীয় মত যে, ‘আমরের সিগা নুদুবের বা মুস্তাহাবের অর্থে আসে ফল যাকাত দেয়ার ক্ষেত্রে। কারণ এ হাদীসে শুধুমাত্র মহিলাদেরকে খিতাব করা হয়েছে। সেখানে যাদের উপর যাকাত ফরয তারা সকলেই হাযির ছিল না। পক্ষান্তরে অনেকে এ মত ব্যক্ত করেছেন যে, এ হাদীসটি শুধুমাত্র অলঙ্কার বুঝায় না বরং অন্য সম্পদও বুঝায়। আবার অনেকের মতে এখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে বিশেষ করে নফল যাকাতের কিষয়টি বুঝিয়েছেন। হানাফী মাযহাব মতে উক্ত হাদীস অলঙ্কারে যাকাত ওয়াজিব বুঝায়।

ইমাম নাবাবী (রহঃ) এটাকে নফল সদাক্বাহ্ (সাদাকা) বলে ব্যক্ত করেছেন।

মোটকথা ‘উলামাদের মধ্যে অলঙ্কারে যাকাত ওয়াজিব কি-না তা নিয়ে মতবিরোধ আছে। ইমাম আবূ হানীফার মতে ওয়াজিব হবে। আর এ মত হলো ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ), সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব, ‘আতবা ও অন্যান্যদের। আর এটা ইমাম আহমাদ ও ইমাম শাফি‘ঈর একটা মত। আর ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ, ইমাম শাফি‘ঈর প্রসিদ্ধ মত যে, অলঙ্কারের যাকাত ফরয নয়। আর এটা ‘আয়িশাহ্, আনাস, ইবনু ‘উমার ও ‘আম্মার-এর মত। আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ রহমানী বলেনঃ উত্তম মত হলো সোনা-রূপার অলঙ্কারে যাকাত ওয়াজিব। দলীল হলোঃ

وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُوْنَهَا

‘‘আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তুমি (হে মুহাম্মাদ!) তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক এক শাস্তির সুসংবাদ শুনিয়ে দাও।’’ (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৩৪)

আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীসঃ পাঁচ উকিয়্যাহ্ রৌপ্যের নিচে যাকাত ওয়াজিব নয়। অতঃপর যখন দু’শত দিরহাম (পাঁচ উকিয়্যাহ্) হবে তখন তার মধ্যে যাকাত ফরয হবে। আর যে হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, ‘‘অলঙ্কারের যাকাত নেই’’। উক্ত হাদীস সহীহ নয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة)