১৭১৭

পরিচ্ছেদঃ ৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির দাফনের বর্ণনা

১৭১৭-[২৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ মারা গেলে তাকে আটকিয়ে রেখ না। বরং তাকে তার কবরে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দাও। তার (কবরে দাঁড়িয়ে) মাথার কাছে সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্-র প্রথমাংশ এবং তার দুই পায়ের কাছে সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্-র শেষাংশের আয়াতগুলো পড়বে। (বায়হাক্বী; এ বর্ণনাটিকে শু’আবুল ঈমানে উদ্ধৃত করেছেন এবং বলেছেন, এটি মাওকূফ হাদীস)[1]

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمْ فَلَا تَحْبِسُوهُ وَأَسْرِعُوا بِهِ إِلَى قَبْرِهِ وَلْيُقْرَأْ عِنْدَ رَأْسِهِ فَاتِحَةُ الْبَقَرَةِ وَعِنْدَ رِجْلَيْهِ بِخَاتِمَةِ الْبَقَرَةِ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَان. وَقَالَ: وَالصَّحِيح أَنه مَوْقُوف عَلَيْهِ

وعن عبد الله بن عمر قال: سمعت النبي صلى الله عليه وسلم يقول: «اذا مات احدكم فلا تحبسوه واسرعوا به الى قبره وليقرا عند راسه فاتحة البقرة وعند رجليه بخاتمة البقرة» . رواه البيهقي في شعب الايمان. وقال: والصحيح انه موقوف عليه

ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, মৃত ব্যক্তিকে দ্রুত দাফন করতে হবে। কোন প্রকার ওযর-আপত্তি থাকলেও মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার ক্ষেত্রে মোটেও দেরী করা যাবে না। আল্লামা ইবনু হুমাম (রহঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে তার মৃত্যুর পরে দ্রুত দাফন করা মুস্তাহাব। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী وَاَسْرِعُوْا بِه اِلى قَبْرِه অর্থাৎ তাকে (মৃত ব্যক্তিকে) দ্রুত কবরস্থানে নিয়ে যাবে। এর দ্বারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত ব্যক্তিকে দ্রুত দাফন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। সুতরাং এটা এ দলীল পেশ করছে যে, মৃত ব্যক্তিকে দ্রুত দাফন করা সুন্নাত।

মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর তার মাথার কাছে সূরাহ্ বাক্বারার প্রথমাংশ এবং পায়ের কাছে শেষাংশ পড়তে হবে। আর সূরাহ্ বাক্বারার প্রথম অংশ বলতে বুঝানো হয়েছে প্রথম থেকে مفلحون পর্যন্ত। আর সূরাহ্ বাক্বারার শেষাংশ বলতে বুঝানো হয়েছে امن الرسول থেকে শেষ পর্যন্ত।

আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, সূরাহ্ বাক্বারার প্রথম অংশ নির্দিষ্ট করার কারণ হল যে, এর মধ্যে কুরআনের গুণাগুণ বর্ণনা করা হয়েছে। আর তা হল هدى للمتقين এর মধ্যে আরো অনেক গুণাবলী রয়েছে। যেমন অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের কথা, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বায়িমের কথা এবং যাকাত আদায়ের কথা। আর শেষাংশে আল্লাহ, মালাক (ফেরেশতা), রসূল ও তার কিতাবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের কথা বলা হয়েছে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও দয়া-অনুগ্রহ চাওয়া হয়েছে। আল্লাহর ওপরই সমস্ত কিছু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছে। আর একজন মানুষকে পরকালীন জীবনে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই তাকে দুনিয়াতে এর সবগুলোর প্রতি ‘আমল করতে হবে।

এ হাদীসে ক্ববরের কাছে সূরাহ্ বাক্বারার প্রথম অংশ ও শেষ অংশ পড়ার পক্ষে দলীল বটে কিন্তু হাদীসটি মাওকূফ এবং এ হাদীসটিকে আবূ যুর‘আ, আবূ হাতিম, হাফিয ইবনু হাজার এবং ইবনু মু‘ঈন য‘ঈফ বলেছেন। কুরআন তিলাওয়াতসহ অন্যান্য ‘ইবাদাতের নেকী মৃত ব্যক্তির নিকট পৌঁছে কিনা এ ব্যাপারে বিদ্বানগণের মধ্যে মতানৈক্য আছে। ইমাম আহমাদ (রহঃ) এবং আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে পৌঁছে। তবে ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) এবং ইমাম মালিক (রহঃ)-এর মতে পৌঁছে না। যাদের নিকট পৌঁছে তাদের মতের পক্ষে যত দলীল পেশ করেছেন সবগুলো দুর্বল, কোনটি দলীলযোগ্য নয়। কুরআন, সহীহ হাদীস এবং ইজমা থেকে কোন দলীল পাওয়া যায় না। সুতরাং সালফে সালিহীন থেকে এমন ‘আমলের কোন সন্ধান পাওয়া যায় না। আনুষ্ঠানিকতার কথাতো বলাই বাহুল্য।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৫: জানাযা (كتاب الجنائز)