পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা
১৬৪৮-[৩] উল্লেখিত রাবী (আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী) হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন কোন লাশ দেখবে, দাঁড়িয়ে যাবে। যারা জানাযার সাথে থাকে তারা যেন (জানাযাহ্ লোকদের কাঁধ থেকে মাটিতে অথবা কবরে) রাখার আগে না বসে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
الْمَشْيُ بِالْجَنَازَةِ وَالصَّلَاةُ عَلَيْهَا
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا رَأَيْتُمُ الْجَنَازَةَ فَقُومُوا فَمَنْ تَبِعَهَا فَلَا يَقْعُدْ حَتَّى تُوضَعَ»
ব্যাখ্যা: জানাযাহ্ অতিক্রমকালে দাঁড়ানোর বিষয়টি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত। এমনকি ইয়াহূদীর বা (অমুসলিমের) ক্ষেত্রে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দাঁড়ানোর প্রমাণ রয়েছে। তবে এ দাঁড়ানো কি ওয়াজিব না মুস্তাহাব তা নিয়ে ইখতিলাফ রয়েছে।
ইবনু ‘আবদুল বার এটাকে ওয়াজিব বলে দাবী করেছেন। ইমাম আহমাদ এবং তার সমমনা কতিপয় ফকীহ এটাকে মুস্তাহাব বলে মনে করেন। ইমাম ইবনু হাযমও এ মতেরই সমর্থক। ইমাম নাবাবী বলেনঃ মুস্তাহাব হওয়াটাই পছন্দনীয় মত। সাহাবীদের মধ্যে ইবনু ‘উমার (রাঃ), আবূ মাস‘ঊদ, ক্বায়স ইবনু সা‘দ, সাহল ইবনু হুনায়ফ প্রমুখ এ মতেরই অনুসারী ছিলেন। পক্ষান্তরে ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ, আবূ হানীফাহ্ ও তার সঙ্গীদয় (রহঃ) এ হুকুম মানসূখ বলে মনে করেন। ইমাম আহমাদ, ইসহাক প্রমুখ কতিপয় ইমাম মানসূখের দাবীকে নাকচ করে দিয়েছেন।
জানাযাহ্ অতিক্রমকালে না দাঁড়িয়ে বসে থাকার কথাও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং বুঝা যায় দাঁড়ানোর হুকুমটি মুস্তাহাব, ওয়াজিব বা আবশ্যক নয়। এ কথা ইবনু হাযম বলেছেন।
যারা জানাযার অনুগামী হবে তারা লাশ না রাখা পর্যন্ত বসবে না। এ রাখা খাটিয়া মাটিতে রাখাও হতে পারে, আবার লাশ ক্ববরে রাখাও হতে পারে।
হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেনঃ মাটিতে রাখার মতটিই প্রাধান্যযোগ্য। ইমাম বুখারী (রহঃ) অধ্যায় তৈরি করেছেনঃ ‘‘যারা জানাযার অনুগমন করবে তারা কাঁধ থেকে জানাযাহ্ নামানোর আগে বসবে না’’। ইমাম আবূ দাঊদও এ মতেরই পক্ষপাতি ছিলেন। হানাফীদের নিকট উত্তম হলোঃ লাশ মাটি দিয়ে শেষ করেই বসবে। তবে বাদায়ে, তাতার খানিয়া এবং ইনায়া গ্রন্থসমূহে তার বিরোধিতা করা হয়েছে। প্রত্যেকেই স্বীয় দলীল পেশ করেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথাঃ ‘‘মানুষ যদি এ আওয়াজ শুনত তাহলে বেহুশ হয়ে যেত’’, এটা বদকার মৃত ব্যক্তির চিৎকার। নেক্কারের কথা হবে আশাব্যঞ্জক ও কোমল। কেউ কেউ বলেছেন, সকল মৃতের কথাই হবে ভয়ংকর। মানুষ তার কথা শুনবেন। এটা পৃথিবীর নেজাম ঠিক রাখার জন্য। ঈমানের বিষয়টিও এর সাথে সম্পৃক্ত, অর্থাৎ এর প্রতি ঈমান আনতে হবে।