পরিচ্ছেদঃ ৪৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৫৫-[৩] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা (কুরবানীতে) মুসিন্নাহ্ ছাড়া কোন পশু যাবাহ করবে না। হ্যাঁ, যদি মুসিন্নাহ্ পাওয়া না যায় তবে দুম্বার জাযা’আহ্ যাবাহ করতে পার। (মুসলিম)[1]
بَابٌ فِي الْأُضْحِيَّةِ
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَذْبَحُوا إِلَّا مُسِنَّةً إِلَّا أَنْ يَعْسُرَ عَلَيْكُمْ فَتَذْبَحُوا جَذَعَةً مِنَ الضَّأْن» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (مُسِنَّةً) যখন পশুর দাঁত গজায় মানুষের দাঁতের মতো না যখন বড় হয়। আর ইবনু কাসীর বলেনঃ এ নামে নামকরণের উদ্দেশ্য হল তার বয়স জানা যায় যে কোন এক দাঁতের মাধ্যমে তবে মানুষের ক্ষেত্রে এমনটি না। আর লিসানুল আরব অভিধান গ্রন্থে রয়েছে গরু ও ছাগলের ক্ষেত্রে যে দুধের দাঁত পড়ে সে নতুন দাঁত উদগত হয়েছে তাকে মুসিন্নাহ বলে। অনুরূপ ইবনু হাজারও বলেছেন। আর শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলবী মুয়াত্তার শারাহ-তে নাফি'-এর বক্তব্য যে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) তিনি কুরবানীতে যা মুসিন্নাহ্ নয় তা হতে বেঁচে থাকতেন। এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, যার সামনের দু’দাঁত গজায়নি।
ইমাম নাবাবী বলেন, ‘উলামারা বলেছেন যেকোন পশুর তথা উট, গরু, ছাগল ইত্যাদির দাঁত বিশিষ্টকে মুসিন্নাহ বলে। আর হাদীসটি উদ্বুদ্ধ করে কুরবানীর পশুর পরিপূর্ণ ও উত্তম যেন হয়। আমি (ভাষ্যকার) বলিঃ হাদীসটি প্রমাণ করে দাঁতহীন পশু কুরবানী করা বৈধ না। বিশেষ করে এ দলীলটি যে ‘‘কিন্তু যদি মুসিন্নাহ্ সংগ্রহ করতে অসুবিধা হয় তাহলে মেষের মধ্যে জাযা‘আগুলো যাবাহ করবে।’’ উল্লেখ্য জাযা‘আহ্ বল হয় যার দাঁত গজায়নি। এ হাদীস আরও প্রমাণ করে শুধুমাত্র ভেঁড়ার ক্ষেত্রে জাযা‘আহ্ বৈধ তবে জমহূর ‘উলামারা বলেছেন অন্য পশুর ক্ষেত্রেও বৈধ। আর জেনে রাখা দরকার যে চতুস্পদ জন্তু ব্যতিরেকে কুরবানী বৈধ না যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ
لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللّهِ عَلى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيْمَةِ الْأَنْعَامِ
‘‘যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুস্পদ জন্তু যাবাহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’’ (সূরাহ্ আল হাজ্জ ২২ : ৩৪)
আর চতুস্পদ জন্তু বলতে উট, গরু, ছাগল আর ছাগলের মধ্যে ভেঁড়াও অন্তর্ভুক্ত। কেননা এগুলো ব্যতিরেকে অন্য কোন জন্তু যাবাহের বিষয়ে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে প্রমাণিত হয়নি। মহিষের ব্যাপারে হানাফী মাযহাব ও অন্যান্যদের মতে বৈধ, কেননা তারা বলেন মহিষ গরুরই এক প্রকার, এর সমর্থন করে যে মহিষের যাকাত গরুর মতো। আর একটি হাদীসেও উল্লেখ যা কানযুল হাক্বায়িক্ব-এ এসেছে যে, মহিষও সাত ভাগে কুরবানীতে বৈধ।
আর উল্লেখিত হাদীস যে উদ্দেশে বর্ণিত হয়েছে তার অবস্থা সেরূপ জানা যায় না। আমার (ভাষ্যকারের) নিকট গ্রহণযোগ্য হল ব্যক্তি সীমাবদ্ধ করবে কুরবানীতে যা সহীহ সুন্নাহ হতে বর্ণিত আর অন্যদিকে ভ্রূক্ষক্ষপ করবে না। যা সহীহভাবে প্রমাণিত না রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আর না সাহাবী ও তাবি‘ঈনদের হতে। তবে মাযহাব অনুযায়ী মহিষ কুরবানী দেয় তাহলে তার ওপর কোন ভৎর্সনা নেই। এটা আমার নিকট আল্লাহ তা‘আলাই বেশি ভাল জানেন।