১২৮৮

পরিচ্ছেদঃ ৩৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - দু‘আ কুনূত

আরবী (قنوت) ’কুনূত’ শব্দটি অনেক অর্থে ব্যবহার হয়। ইবনুল ’আরাবী (রহঃ) আত্ তিরমিযীর ব্যাখ্যায় এ শব্দের ১০টি অর্থ উল্লেখ করেছেন। তবে এখানে قنوت দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, সালাতে নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়ানো অবস্থায় দু’আ করা।

প্রিয় পাঠক! জেনে রাখুন যে, এখানে কয়েকটি বিরোধপূর্ণ মাসআলাহ্ রয়েছে।

প্রথমঃ বিতরের সালাতে কুনূত পড়বে কি-না।

দ্বিতীয়ঃ যখন বিতর সালাতে কুনূত পড়বে, তখন কুনূত রুকূ’র আগে পড়বে না-কি পরে?

তৃতীয়ঃ বিতর সালাতে কুনূত পুরা বছরেই পড়তে হবে নাকি। শুধু রমাযান মাসের শেষার্ধেক।

চতুর্থঃ কুনূতের শব্দগুলো (অর্থাৎ মূল দু’আ) তবে এ মাসআলার ব্যাপারে আলোচনা অতিবাহিত হয়। উল্লেখ্য যে, বিতর সালাতে কুনূত পড়ার সময় তাকবীর দেয়া (’আল্ল-হু আকবার’ বলা) ও তাকবীর দেয়ার সময় তাকবীরে তাহরীমার মতো দু’ হাত উত্তোলন করার মাসআলাটি, যেমনভাবে হানাফীগণ করে থাকেন। তবে এ দু’টোর ব্যাপারে (অর্থাৎ তাকবীর দেয়া এবং দু’ হাত উত্তোলন করা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন ধরনের সহীহ বর্ণনা নেই। হ্যাঁ এ দু’ বিষয়ে (তাকবীর ও দু’ হাত উত্তোলন) কতিপয় সাহাবী (রাঃ)-এর আসার রয়েছে। এ ব্যাপারে মুহাম্মাদ ইবনু নাসর আল মারুযী (রহঃ) কিতাবুল বিতরে ’উমার, ’আলী, ইবনু মাস’ঊদ এবং বারা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তারা সকলেই বিতর সালাতে রুকূ’র পূর্বে কুনূত পড়ার সময় তাকবীর দিয়েছেন। তবে শায়খ ইবনুল ’আরাবী আত্ তিরমিযীর ব্যাখ্যায় বলেছেন যে, কুনূতের সময় তাকবীর দেয়ার কোন মারফূ’ হাদীস কিংবা সাহাবীদের নির্ভরযোগ্য কোন আসারও আমি পাইনি এবং তাকবীরে তাহরীমার মতো রফ্’উল ইয়াদায়ন বিষয়েও কোন মারফূ’ হাদীস এ ব্যাপারে পাইনি।

তবে ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ)-এর ’আমল যে তারা (হানাফীরা) উল্লেখ করেছে ইমাম বুখারী (রহঃ)-এর ’’জুয্উ রফ্’উল ইয়াদায়ন’’ ও আল মারুযী (রহঃ)-এর ’’কিতাবুল বিতর’’ থেকে। এছাড়াও ’উমার (রাঃ), আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ), আবূ ক্বিলাবাহ্ ও মাকহূল (রাঃ)-গণের আসার উল্লেখ করেছেন এবং এর দ্বারা কুনূতের সময় দু’হাত উত্তোলনের দলীল গ্রহণ করেছেন। লক্ষণীয় বিষয় হলো, তা এ ব্যাপারে কোন দলীল নয়, বরং তা দু’আর সময় যে হাত উঠানো হয় অনুরূপ হাত উঠানোর প্রমাণ বহন করে। মির’আত প্রণেতা বলেন যে, উল্লেখিত আসারগুলো তাদের (হানাফীদের) চাহিদার উপরে কোন দলীল নয় বরং তা দু’আ অবস্থায় কুনূতে হাত উঠানোর দলীল, যেমন একজন দু’আকারী হাত উঠায়। সুতরাং বিতর সালাতে দু’আয়ে কুনূত অবস্থায় হাত উঠানো জায়িয। যা প্রমাণিত হয় ইবনু মাস্’ঊদ, ’উমার (রাঃ), আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) ও আনাস (রাঃ)-এর ’আমলের মাধ্যমে।

হাফিয আসক্বালানী তাঁর ’তালখিস’ নামক গ্রন্থে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

পঞ্চম মাসআলাহ্ঃ বিতর ব্যতীত অন্য সালাতে বিনা কারণে কুনূত পড়া শারী’আত সম্মত কিনা? একদল ’আলিম তাদের মধ্যে ইমাম আবূ হানীফা, আহমাদ (রহঃ) তা শারী’আত সম্মত নয় বলে মত দিয়েছেন। তারা বলেন, ফাজ্‌র (ফজর) সালাতেও বিনা কারণে কুনূত পড়া সুন্নাহ মুতাবেক নয়। অপর একদল তার মধ্য ইমাম শাফি’ঈ ও মালিক (রহঃ)-এর মতে ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতে কুনূত পড়া সর্বদাই শারী’আত সম্মত। তবে অন্যান্য চার ওয়াক্ত সালাতে যথাক্রমে যুহর, ’আসর, মাগরিব ও ’ইশার সালাতে বিনা কারণে কুনূত না পড়ার বিষয়ে তারা ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তারা মতবিরোধ করেছেন ফাজ্‌রের (ফজরের) ব্যাপারে, ইমাম শাফি’ঈ ও মালিক (রহঃ)-এর মতে ফজরে সর্বদাই কুনূত বৈধ। আর ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও আহমাদ (রহঃ)-এর মতে বিনা কারণে ফজরে কুনূত বৈধ না।

ফাজ্‌রের (ফজরের) কুনূত পড়ার পক্ষের ’উলামাগণের দলীল দারাকুত্বনী (২য় খন্ড, ১১৮ পৃঃ), আহমাদ (৩য় খন্ড, ১৬২ পৃঃ), ত্বহাবী (১ম খন্ড, ১৪৩ পৃঃ)..... আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়া পর্যন্ত ফাজ্‌র (ফজর) সালাতে কুনূত পড়তেন। আত্ তানক্বিহ প্রণেতা বলেন, এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা কুনূতে নাযিলাহ্ পড়তেন। অথবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদাই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) দীর্ঘ করে আদায় করতেন। কেননা (قنوت) শব্দটি আনুগত্য, সালাত, দীর্ঘ ক্বিয়াম (কিয়াম), সালাতে নম্রতা ও নীরবতা ইত্যাদিকে সম্পৃক্ত করে। ইবনুল ক্বইয়্যূম (রহঃ) বলেন, উল্লেখিত হাদীস সহীহ হলেও তা এ নির্দিষ্ট কুনূতের দলীল নয় কারণ সেখানে এমন কথা উল্লেখ নেই যে, এটাই দু’আ কুনুত। বরং তা সালাতে ক্বিয়াম (কিয়াম), নীরবতা, সর্বদাই ’ইবাদাত, দু’আ, তাসবীহ ইত্যাদি বুঝায়। মির’আত প্রণেতা বলেন, আমাদের নিকট ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও আহমাদ (রহঃ)-এর মত অধিক বিশুদ্ধ। কেননা বিতর ছাড়া বিনা কারণে কুনূত পড়া ফাজ্‌র (ফজর) কিংবা অন্যান্য সালাতে শারী’আত সম্মত নয়। ফজরে কুনূত পড়াটা কুনূতে নাযিলাহ্ এর সাথে নির্দিষ্ট। কেননা বিতর ব্যতীত অন্য সালাতে কুনূত পড়াটা বিশুদ্ধ মারফূ’ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।

৬ষ্ঠ মাসআলাহ্ঃ যখন মুসলিমগণ কোন বিপদ মুসীবাত বা শত্রুর কিংবা অনুরূপ কোন বিপদের কারণে কুনূতে নাযিলার প্রয়োজন মনে করবে। তখন বিতর ছাড়া অন্য সালাতে কুনূত পড়া কি বৈধ? যদি বৈধ হয় তবে কি তা ফাজ্‌র (ফজর) কিংবা উচ্চস্বরে ক্বিরাআত (কিরআত) বিশিষ্ট সালাতের মধ্য সীমিত থাকবে নাকি পাঁচ ওয়াক্ত সালাতেও তা বৈধ হবে। এ ব্যাপারে জমহূর হাদীস বিশারদগণ ও ইমাম শাফি’ঈ (রহঃ)-এর মতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে কুনূতে নাযিলাহ্ পড়া শারী’আত সম্মত। তবে হানাফী ও হাম্বালীদের মতে তা ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের সাথে খাস।

মির্’আত প্রণেতা বলেন যে, অধিক গ্রহণযোগ্য মত হলো জমহূর হাদীস বিশারদ ও শাফি’ঈ (রহঃ)-এর মত। অর্থাৎ কুনূতে নাযিলাহ্ পাঁচ ওয়াক্ত সালাতেই বৈধ। কারণ এ ব্যাপারে একাধিক সহীহ হাদীস রয়েছে। কিন্তু কুনূতে নাযিলাহ্ ফাজ্‌র (ফজর) কিংবা জিহরী (জেহরী) ক্বিরাআত (কিরআত) বিশিষ্ট সালাতের সাথে নির্দিষ্ট এ মর্মে কোন কোন সহীহ কিংবা য’ঈফ হাদীসও নেই।

সপ্তম মাসআলাহ্ঃ কুনূতে নাযিলাটি রুকূ’র আগে পড়তে হবে, নাকি রুকূ’র পড়ে। ইমাম শাফি’ঈ ও আহমাদ (রহঃ)-এর মতে কুনূতে নাযিলাহ্ রুকূ’র পরে পড়তে হবে। তবে আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) তার বিপরীত মত ব্যক্ত করেছেন। মির্’আত প্রণেতা বলেন যে, কুনূতে নাযিলা রুকূ’র পড়ে পড়তে হবে এটাই সর্বপছন্দনীয় মত। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এর বিকল্প কোন সিদ্ধান্ত প্রমাণিত হয়নি। তবে রুকূ’র পূর্বে কুনূতে নাযিলা পড়লে তা জায়িয হবে কারণ এ ব্যাপারে সাহাবী (রাঃ)-দের কারো কারো ’আমল রয়েছে।


১২৮৮-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন লোককে বদ্দু’আ অথবা কোন লোককে দু’আ করতে চাইলে রুকূ’র পরে কুনূত পড়তেন। তাই কোন কোন সময় তিনি, ’সামি’আল্ল-হু লিমান হামিদাহ, রব্বানা- লাকাল হামদু’ বলার পর এ দু’আ করতেন,

’আল্ল-হুম্মা আনজিল ওয়ালীদ ইবনিল ওয়ালীদ। ওয়া সালামাতাবনি হিশা-ম, ওয়া ’আইয়্যা-শাবনি রবী’আহ্, আল্লা-হুম্মাশদুদ ওয়াত্ব আতাকা ’আলা- মুযারা ওয়াজ্’আলহা- সিনীনা কাসিনী ইউসুফা’।

অর্থাৎ ’হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে, সালমাহ্ ইবনু হিশামকে, ’আইয়্যাশ ইবনু আবূ রবী’আকে তুমি মুক্তি দান করো। হে আল্লাহ! ’মুযার জাতির’ ওপরে তুমি কঠিন ’আযাব নাযিল করো। আর এ ’আযাবকে তাদের ওপর ইউসুফ (আঃ)-এর বছরগুলোর ন্যায় দুর্ভিক্ষের রূপ ধারণ করে দাও।’ তিনি উচ্চস্বরে এ দু’আ পড়তেন।

কোন কোন সালাতে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ’আরাবে এসব গোত্রের জন্যে এভাবে দু’আ করতেন, ’হে আল্লাহ! তুমি অমুক অমুকের ওপর অভিশাপ বর্ষণ করো।’ তারপর আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেছেন, ’লাইসা লাকা মিনাল আমরি শাইয়ুন’ অর্থাৎ ’’এ ব্যাপারে আপনার কোন দখল নেই’’- (সূরাহ্ আ-লি ’ইমরান ৩: ১২৮)। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَاب الْقُنُوْتِ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ عَلَى أَحَدٍ أَوْ يَدْعُوَ لِأَحَدٍ قَنَتَ بَعْدَ الرُّكُوعِ فَرُبَّمَا قَالَ إِذَا قَالَ: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ: اللَّهُمَّ أَنْج الْوَلِيد بن الْوَلِيد وَسَلَمَة ابْن هِشَام وَعَيَّاش بن رَبِيعَةَ اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ وَاجْعَلْهَا سِنِينَ كَسِنِي يُوسُفَ يَجْهَرُ بِذَلِكَ وَكَانَ يَقُولُ فِي بَعْضِ صَلَاتِهِ: اللَّهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا لِأَحْيَاءٍ مِنَ الْعَرَبِ حَتَّى أَنْزَلَ اللَّهُ: (لَيْسَ لَك من الْأَمر شَيْء)
الْآيَة)

عن ابي هريرة: ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان اذا اراد ان يدعو على احد او يدعو لاحد قنت بعد الركوع فربما قال اذا قال: سمع الله لمن حمده ربنا لك الحمد: اللهم انج الوليد بن الوليد وسلمة ابن هشام وعياش بن ربيعة اللهم اشدد وطاتك على مضر واجعلها سنين كسني يوسف يجهر بذلك وكان يقول في بعض صلاته: اللهم العن فلانا وفلانا لاحياء من العرب حتى انزل الله: (ليس لك من الامر شيء) الاية)

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কারো জন্য বা কারো বিরুদ্ধে দু‘আ করতেন তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রুকূ‘র পড়ে কুনূত পড়তেন। এ ব্যাপারে ক্বারী (রহঃ) বলেন যে, সেটা কুনূতকে ফাজ্‌রের (ফজরের) সাথে খাস করবে অথবা সকল সালাতের জন্য তা ‘আম হবে। মির‘আত প্রণেতা (রহঃ) বলেনঃ কুনূত ফাজ্‌রের (ফজরের) সাথে নির্দিষ্ট করণের কোন দলীল নেই। বরং সামনে আসছে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীস যা ক্বারী (রহঃ)-এর কথা বাতিল করবে এবং আলোচ্য হাদীস প্রমাণ করে যে, ফরয সালাতেও কুনূত পড়া শারী‘আত সম্মত এবং নিশ্চয় এটা কোন ক্বওমের বিরুদ্ধে বা কোন ক্বওমের সমর্থনে দু‘আর ইচ্ছার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর এর সমর্থনে আনাস (রাঃ), আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ), জমহূর হাদীস বিশারদের সিদ্ধান্ত সকল ফরয সালাতের শেষ রাক্‘আতে কুনূত নাযিলাহ্ পড়া সুন্নাহ সম্মত। যা ইমাম ত্বহাবী (রহঃ)-এর কথাকে (যে, যুদ্ধ কিংবা অন্যান্য দুর্যোগ অবস্থায় ফজরে কুনূত পড়া উচিত নয়) সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছে।

(اللّهُمَّ أَنْج الْوَلِيْدَ بنِ الْوَلِيْد.....) এখানে ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদ। তিনি ছিলেন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ আল মাখযূমী আল ক্বারশী (রাঃ)-এর ভাই, তিনি বদরের যুদ্ধে মুশরিক সৈন্যদলে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু জাহশ (রাঃ) তাকে বন্দী করেছিলেন, এ বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। আর সালামাহ্ হলো সালামাহ্ ইবনু হিশাম ইবনু মুগীরাহ্ আল মাখযূমী আল্ ক্বারাশী (রাঃ)। তিনি হাবশায় হিজরতকারীদের একজন ছিলেন, তিনি শ্রেষ্ঠ সাহাবীগণেরও একজন ছিলেন, আবূ জাহল ইবনু হিশাম-এর ভাই ও খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ)-এর চাচাত ভাই ছিলেন। ইসলাম সূচনা পূর্বে তিনি মক্কায় বন্দী হয়েছিলেন তাকে বিভিন্নভাবে শাস্তি দেয়া হয়েছিল ও মদীনাহ্ হিজরত থেকে জোরপূর্বক বিরত রাখা হয়েছিল। এ কারণে তিনি বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মুক্তি কামনায় কুনূতে দু‘আ করেছিলেন।

আর ‘আইয়্যাশ (রাঃ) ছিলেন আবূ জাহল-এর বৈপিত্রেয় ভাই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দারুল আরকামে প্রবেশের পূর্ব সময়ে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং মুহাজিরদের সাথে মদীনায় হিজরত করেছিলেন কিন্তু আবূ জাহল ও হারিস (হিশাম-এর দু’ পুত্র) মিথ্যা ধোঁকা দিয়ে তাকে মক্কায় ফিরে আনলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য কুনূতের মাধ্যমে দু‘আ করছিলেন। ফলে তিনি তার উল্লেখিত বন্ধুদের সাথে পলায়ন করে মদীনায় গমন করেন।

উপরোক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বিতর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ছাড়াও অন্যান্য সালাতে মুসলিমের মুক্তির জন্য কুনূতের মাধ্যমে দু‘আ করা জায়িয।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)