পরিচ্ছেদঃ ৩০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সুন্নাত ও এর ফযীলত
১১৬২-[৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নফল সালাতের ব্যাপারে ’আয়িশাকে প্রশ্ন করেছি। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে আমার ঘরে যুহরের পূর্বে চার রাক্’আত সালাত আদায় করতেন। তারপর মসজিদে যেতেন। সেখানে লোকেদের নিয়ে (জামা’আতে যুহরের ফরয) সালাত আদায় করতেন। তারপর তিনি কামরায় ফিরে আসতেন এবং দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করতেন। (ঠিক এভাবে) তিনি লোকদেরকে নিয়ে মাগরিবের সালাত মসজিদে আদায় করতেন। তারপরে হুজরায় ফিরে এসে দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করতেন। রাতে তিনি (তাহাজ্জুদের) সালাত কখনো নয় রাক্’আত পড়তেন। এর মাঝে বিতরের সালাতও শামিল ছিল। আর রাতে তিনি দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে ও দীর্ঘ সময় বসে বসে সালাত আদায় করতেন, যে সময় তিনি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতেন? দাঁড়ানো থেকেই রুকূ’ সাজদায় চলে যেতেন। আর যখন বসে বসে সালাত আদায় করতেন, বসা থেকেই রুকূ’ ও সাজদায় চলে যেতেন। সুবহে সাদিকের সময় ফাজ্রের (ফজরের) দু’ রাক্’আত সুন্নাত আদায় করে নিতেন। (মুসলিম; আবূ দাঊদ আরো কিছু বেশী শব্দ নকল করেছেন [অর্থাৎ ফজরের (ফজরের) দু’ রাক্’আত সুন্নাত আদায় করে তিনি মসজিদে চলে যেতেন। সেখানে লোকজনসহ ফাজ্রের (ফজরের) ফরয সালাত আদায় করতেন])[1]
بَابُ السُّنَنِ وَقَضَائِلِهَا
وَعَن عبد الله بن شَقِيق قَالَ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ صَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ تَطَوُّعِهِ فَقَالَتْ: كَانَ يُصَلِّي فِي بَيْتِي قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعًا ثُمَّ يَخْرُجُ فَيُصَلِّي بِالنَّاسِ ثُمَّ يَدْخُلُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَكَانَ يُصَلِّي بِالنَّاسِ الْمَغْرِبَ ثُمَّ يَدْخُلُ فَيصَلي رَكْعَتَيْنِ وَيُصلي بِالنَّاسِ الْعِشَاءَ وَيَدْخُلُ بَيْتِي فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَكَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ تِسْعَ رَكَعَاتٍ فِيهِنَّ الْوَتْرُ وَكَانَ يُصَلِّي لَيْلًا طَوِيلًا قَائِمًا وَلَيْلًا طَوِيلًا قَاعِدا وَكَانَ إِذَا قَرَأَ وَهُوَ قَائِمٌ رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ قَائِم وَإِذا قَرَأَ قَاعِدًا رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ قَاعِدٌ وَكَانَ إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ. وَزَادَ أَبُو دَاوُدَ: ثُمَّ يَخْرُجُ فَيُصَلِّي بِالنَّاسِ صَلَاة الْفجْر
ব্যাখ্যা: (ثُمَّ يَدْخُلُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ) অতঃপর ঘরে প্রবেশ করে দুই রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) করতেন হাদীসের এ অংশটুকু ঘরে সুন্নাত সালাত আদায় করা মুস্তাহাব হওয়ার দলীল।
(وَكَانَ إِذَا قَرَأَ وَهُوَ قَائِمٌ رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ قَائِم) যখন তিনি সালাতে দাঁড়িয়ে কুরআন পাঠ করতেন তখন তিনি দাঁড়িয়েই রুকূ' সিজদা্ করতেন। অর্থাৎ তিনি দাঁড়ানো অবস্থা থেকেই রুকূ‘তে যেতেন অতঃপর সিজদা্ করতেন, রুকূ‘তে যাওয়ার পূর্বে বসতেন না।
(وَإِذا قَرَأَ قَاعِدًا رَكَعَ وَسَجَدَ وَهُوَ قَاعِدٌ) তিনি যখন সালাতে বসে কুরআন পাঠ করতেন তখন তিনি বসেই রুকূ' ও সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করতেন অর্থাৎ রুকূ‘তে যাওয়ার পূর্বে তিনি দাঁড়াতেন না। এ হাদীস থেকে প্রমাণ পাওয়া যায যে, যিনি দাঁড়িয়ে ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠ করবেন তিনি দাঁড়ানো অবস্থা থেকেই রুকূ‘তে যাবেন আর যিনি বসে কেরআত পাঠ করবেন তিনি বসা অবস্থাতেই রুকূ‘ ও সিজদা্ করবেন।
বুখারী ও মুসলিমে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বৃদ্ধ হওয়ার আগে কখনো বসে সালাত আদায় করতে দেখেননি। বৃদ্ধ হওয়ার পর তিনি সালাতে বসে ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠ করতেন, যখন রুকূ‘তে যাওয়ার ইচ্ছা করতেন তখন তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন অতঃপর ত্রিশ অথবা চল্লিশ আয়াতের মতো দাঁড়ানো অবস্থায় পাঠ করার পর রুকূ‘ ও সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করতেন। দ্বিতীয় রাক্‘আতেও তিনি অনুরূপ করতেন। এ হাদীসে এ প্রমাণ মিলে যে, যিনি সালাতে বসে ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠকরণ তার জন্য রুকূ‘র পূর্বে দাঁড়িয়ে ক্বিরাআতের কিছু অংশ পাঠ করা বৈধ। উক্ত দুই হাদীসের মধ্যে সমন্বয় এই যে, কখনো তিনি প্রথম হাদীসে বর্ণিত অবস্থায় সালাত আদায় করতেন। আবার কখনো দ্বিতীয় হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতিতে সালাত আদায় করতেন। অতএব উভয় পদ্ধতিই বৈধ।