১১৪০

পরিচ্ছেদঃ ২৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুক্তাদীর ওপর ইমামের যা অনুসরণ করা কর্তব্য এবং মাসবূকের হুকুম

১১৪০-[৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এমন সময় একদিন বিলাল (রাঃ)সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়েরর জন্যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ডাকতে আসলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আবূ বকরকে লোকদের সালাত আদায় করাতে বলো। ফলে আবূ বকর (রাঃ) সে কয়দিনের সালাত আদায় করালেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন একটু সুস্থতা মনে করলেন। তিনি দু’ সাহাবীর কাঁধে ভর দিয়ে দু’পা মাটির সাথে হেঁচড়িয়ে সালাতের জন্যে মসজিদে আসলেন। মসজিদে প্রবেশ করলে আবূ বকর (রাঃ) রসূলের আগমন টের পেলেন ও পিছু হটতে আরম্ভ করলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখে সেখান থেকে সরে না আসার জন্যে আবূ বকরকে ইঙ্গিত করলেন। এরপর তিনি আসলেন এবং আবূ বকরের বাম পাশে বসে গেলেন। আর আবূ বকর দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে বসে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আবূ বকর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের ইক্বতিদা করছেন। আর লোকেরা আবূ বকরের সালাতের ইকতেদা করে চলছেন। (বুখারী, মুসলিম; উভয়ের আর এক বর্ণনা সূত্রে আছে, আবূ বকর লোকদেরকে রসূলের তাকবীর স্বজোড়ে শুনাতে লাগলেন।)[1]

بَابُ مَا عَلَى الْمَأْمُومِ مِنَ الْمُتَابَعَةِ وَحُكْمِ الْمَسْبُوْقِ

وَعَن عَائِشَة قَالَتْ: لَمَّا ثَقُلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَاءَ بِلَال يوذنه لصَلَاة فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ» فَصَلَّى أَبُو بَكْرٍ تِلْكَ الْأَيَّامَ ثُمَّ إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَدَ فِي نَفْسِهِ خِفَّةً فَقَامَ يُهَادَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ وَرِجْلَاهُ يخطان فِي الْأَرْضِ حَتَّى دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَلَمَّا سَمِعَ أَبُو بكر حسه ذهب أخر فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَن لَا يتَأَخَّر فجَاء حَتَّى يجلس عَن يسَار أبي بكر فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي قَائِمًا وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي قَاعِدًا يَقْتَدِي أَبُو بَكْرٍ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالنَّاسُ مقتدون بِصَلَاة أبي بكر
وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا: يُسْمِعُ أَبُو بَكْرٍ النَّاسَ التَّكْبِير

وعن عاىشة قالت: لما ثقل رسول الله صلى الله عليه وسلم جاء بلال يوذنه لصلاة فقال: «مروا ابا بكر ان يصلي بالناس» فصلى ابو بكر تلك الايام ثم ان النبي صلى الله عليه وسلم وجد في نفسه خفة فقام يهادى بين رجلين ورجلاه يخطان في الارض حتى دخل المسجد فلما سمع ابو بكر حسه ذهب اخر فاوما اليه رسول الله صلى الله عليه وسلم ان لا يتاخر فجاء حتى يجلس عن يسار ابي بكر فكان ابو بكر يصلي قاىما وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم يصلي قاعدا يقتدي ابو بكر بصلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم والناس مقتدون بصلاة ابي بكر وفي رواية لهما: يسمع ابو بكر الناس التكبير

ব্যাখ্যা: (لَمَّا ثَقُلَ رَسُولَ اللّهِ ﷺ) অর্থাৎ যে রোগে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুবরণ করেছেন ঐ রোগে যখন তিনি ভারি হয়ে পড়লেন।

(بالصَلَاة) অর্থাৎ সালাতের সময়ের উপস্থিত সম্পর্কে। এখানে শেষ ‘ইশা উদ্দেশ্য।

مُرُوا أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ এ হাদীসাংশের মাধ্যমে আহলুস্ সুন্নাহ বা সুন্নাতের অনুসারীগণ আবূ বাকর (রাঃ)-এর খিলাফাতের ব্যাপারে প্রমাণ গ্রহণ করেছেন এবং তার কারণ হল নিশ্চয়ই সালাতের নেতৃত্ব বা ইমামতি যা বড় (কুবরা) ইমামাতি, আর দুনিয়ার নেতৃত্ব বা ইমামাতি যা ছোট (সুগরা) ইমামাতি এটি মূলত ইমামাতে কুবরা এর দায়িত্বের আওতাভুক্ত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ঐ অবস্থাতে সালাতের ইমাম হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আর এটি মূলত আবূ বাকর-এর কাছে ইমামাতে কুবরা হস্তান্তরের সর্বাধিক শক্তিশালী আলামত। এটা যেমন আমাদের বাদশারা মৃত্যুর সময় তাদের সন্তানদের কাউকে কর্তৃত্বের সিংহাসনে বসিয়ে থাকেন। এখন বাদশাহ তার কর্তৃত্ব সন্তানের নিকট হস্তান্তর করলে কেউ কি তাতে সন্দেহ করতে পারে? (সন্দেহ করতে পারে না) অতএব রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকরের নিকট ইমামাতে কুবরা হস্থান্তরকরণে এটিই ঐ ব্যক্তির জন্য শক্তিশালী দলীল যার বক্ষকে আল্লাহ প্রশস্ত করেছেন। পার্থক্য স্পষ্ট থাকার কারণে ইমামাতে সুগরার উপর ইমামাতে কুবরা ক্বিয়াসী অধ্যায়ের আওতাভুক্ত না। শী‘আ সম্প্রদায় যেমন দাবি করেছে তাদের উক্তি প্রমাণ যদি শক্তিশালী স্পষ্ট হত তাহলে বিষয়টির সূচনালগ্নে তাদের মাঝে মতানৈক্য অর্জন হত না। এ ধরনের মন্তব্য জরুরী ভিত্তিতে বাতিল। কেননা রসূলের মরণের পর সময়টুকু হতাশাপূর্ণ সময় ছিল। কতই না স্পষ্ট বিষয় এমন আছে যা এ ধরনের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা লাভ করে।

(ثُمَّ إِنَّ النَّبِيَّ ﷺ وَجَدَ فِي نَفْسِه خِفَّةً) বাহ্যিক দৃষ্টিতে বুঝা যাচ্ছে অসুস্থতার শিথিলতা অনুভবের মুহূর্তটা ছিল মৃত্যুর পাঁচদিন পূর্বে বৃহস্পতিবার যুহরের সময়।

(بَيْنَ رَجُلَيْنِ) অর্থাৎ উভয়ের মাঝে ভর করে কঠিন দুর্বলতার দরুন ঝেঁকে ঝেঁকে হাঁটছিলেন। দু’ হাতের এক হাত একজনের কাঁধে অপর হাত অন্যজনের কাঁধে। আর উভয় ব্যক্তি হল ‘আব্বাস বিন ‘আবদুল মুত্ত্বালিব এবং ‘আলী বিন আবী ত্বলিব। যেমন তৃতীয় পরিচ্ছেদে আগত হাদীসে এসেছে এবং ইবনু হিব্বানে বর্ণনাতে এসেছে তিনি তাঁর অন্তরে অসুস্থতার হালকা অনুভব করলে বারীরাহ্ ও নাওবাহ্ এর মাঝে করে বের হলেন।

আর উভয় হাদীসের মাঝে সমন্বয় সাধন করা হয় এভাবে যেমন নাবাবী বলেনঃ তিনি ঘর থেকে মাসজিদ পর্যন্ত এ দু’ ব্যক্তির মাঝে করে বের হলেন এবং ঐ স্থান থেকে সালাতে দাঁড়ানোর স্থান পর্যন্ত ‘আব্বাস ও ‘আলী (রাঃ) এর মাঝে করে বের হলেন। আবূ হাতিম বলেন, দু’ দাসীর মাঝে করে দরজা পর্যন্ত গেলেন এবং দরজা থেকে ‘আব্বাস ও ‘আলী (রাঃ) তাঁকে গ্রহণ করে মসজিদে নিয়ে যান। একমতে বলা হয়েছে হাদীসটিকে বহু সংখ্যার উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। আর এর উপর প্রমাণ বহন করে দারাকুত্বনীতে যা বর্ণিত আছে তা। তাতে আছে নিশ্চয় তিনি উসামাহ্ বিন যায়দ এবং ফাযল বিন ‘আব্বাস-এর মাঝে করে বের হয়েছিলেন। আর মুসলিমে যা আছে তা হল, নিশ্চয় তিনি ফাযল বিন ‘আব্বাস ও ‘আলী (রাঃ) এর মাঝে করে বের হলেন। আর তা মায়মূনার গৃহ থেকে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) এর গৃহের দিকে আসার সময়।

(وَرِجْلَاهُ يَخُطَّانِ فِي الْأَرْضِ) অর্থাৎ তাঁর পাদ্বয় মাটিতে দাগ টানছিল। কেননা দুর্বলতার কারণে তিনি পাদ্বয়কে মাটি থেকে উঠাতে পারছিলেন না। নাবাবী বলেন, অর্থাৎ তিনি পাদ্বয়কে মাটি থেকে উঠাতে পারছিলেন না। মাটিতে রাখতে পারছিলেন না এবং পাদ্বয়ের উপর ভর করতে পারছিলেন না।

(فَلَمَّا سَمِعَ أَبُوْ بَكْرٍ حِسَّه) সিনদী বলেনঃ অতঃপর আবূ বাকর-এর অনুভূতি তথা অন্তর যখন বুঝতে পারল। একমতে বলা হয়েছে রসূলের নড়া-চড়া বা হালকা আওয়াজ।

(يتَأَخَّر) নিজ স্থান থেকে পিছিয়ে আসতে চাইল যাতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্থানে দাঁড়াতে পারে।

(حَتّى يَجْلِسَ عَنْ يَّسَارِ أبيِ بَكْرٍ) এটিই হল ইমামের স্থান। আর এতে আগত বর্ণনাতে বসার সম্পর্কে যে অস্পষ্টতা রয়েছে তা নির্ধারণ করে দিচ্ছে।

এতে ঐ বিষয়ের উপর প্রমাণ রয়েছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকরকে তাঁর ডান দিকে করার কারণে তিনি ইমাম ছিলেন, মুক্তাদী ছিলেন না। ‘আয়নী বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকরের ডানে কেবল এজন্য বসেনি; কেননা বামদিক ছিল রসূলের হুজরা বা কক্ষের দিক, সুতরাং তা রসূলের কাছে সর্বাধিক সহজ ছিল।

(يَقْتَدِي أَبُو بَكْرٍ بِصَلَاةِ رَسُولِ اللّهِ ﷺ) এ অংশটুকুতে ঐ সকল লোকদের দাবীকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে যারা ধারণা করে থাকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকরের মুক্তাদী বা সালাতের অনুসরণকারী ছিলেন।

(وَالنَّاسُ مقتدون بِصَلَاة أبي بكر) অর্থাৎ এমনভাবে যে, আবূ বাকর মুক্তাদীদেরকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তাকবীর শোনাচ্ছিল। কুস্তুলানী বলেনঃ মুক্তাদীরা আবূ বাকরের সালাতের মাধ্যমে রসূলের সালাতের দলীল গ্রহণ করেছিলেন। রসূলের সালাতের অনুসরণ করছিল। ক্বারী বলেনঃ তারা তাই করছিল যা আবূ বাকর করছিল। কেননা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা ছিল এবং আবূ বাকর তাঁর পাশে দাঁড়ানো ছিল। আবূ বাকর সম্প্রদায়ের ইমাম ছিল এমন না। বরং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকরের ইমাম ছিল। কেননা মুক্তাদীর অনুসরণ করা বৈধ না।

সুতরাং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম, আর আবূ বাকর এবং মানুষেরা তাঁর মুক্তাদী ছিল। জেনে রাখা উচিত যে, ‘আয়িশার হাদীসের ক্ষেত্রে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে আর তা হল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি ইমাম ছিলেন নাকি মুক্তাদী ছিলেন? এটি বুখারী, মুসলিম ও অনুরূপভাবে আহমাদের মুসনাদ কিতাবে আছে। মালিক-এর কিতাবে ‘‘ইমামের বসা সালাত আদায় করা’’ অধ্যায়ে আছে। নাসায়ীতে ‘‘যে ইমামের অনুসরণ করবে তার অনুসরণ করা’’ অধ্যায়ে এবং বাযযারও এটিকে বর্ণনা করেছেন যেমন হাফিয ইবনু হাজার ফাতহুল বারীতে বলেছেন। ইবনু হিব্বান উল্লেখ করেছেন যেমন হাফিয ইবনু হাজার ফাতহুল বারীতে বলেছেন। ইবনু হিব্বান উল্লেখ করেছেন যেমন যায়লাঈ বলেছেনঃ ইবনু মাজাহ ‘‘অসুস্থ অবস্থাতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাত, যা উপকারিতা দিচ্ছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম এবং আবূ বাকর মা‘মূম ছিলেন’’ এ অধ্যায়ে।

ইবনু হাযম মুহাল্লা গ্রন্থের ৩য় খন্ডে ৬৭ পৃষ্ঠাতে। ইবনুল জারূদ মুনতাক্বা গ্রন্থে ১৬৬ পৃষ্ঠাতে। আহমাদ মুসনাদের ৬ষ্ঠ খন্ডে ১৫৯ পৃষ্ঠাতে। বায়হাক্বী তার সুনান গ্রন্থে ৩য় খন্ডে ৮২ পৃষ্ঠাতে। ইবনু মুনযির ও ইবনু খুযায়মাহ্ বর্ণনা করেন যেমন হাফিয বলেছেন, তিরমিযী ‘‘ইমাম যখন বসে সালাত আদায় করবে তখন তোমরাও বসে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে; যা উপকারিতা দিচ্ছে নিশ্চয়ই আবূ বাকরই ইমাম ছিল।’’ এ অধ্যায়ের পরের অধ্যায়ে। ইবনু খুযায়মাহ্ একে মুহাম্মাদ বিন বাশশার থেকে, তিনি আবূ দাঊদ আত্ ত্বয়ালিসী থেকে তিনি শু‘বাহ্ থেকে, তিনি আ‘মাশ থেকে, তিনি ইবরাহীম থেকে, তিনি আসওয়াদ থেকে, তিনি ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেনঃ এমন কিছু আছে যারা বলে আবূ বাকর কাতারে রসূলের সামনে আগে ছিল। আবার এমন কেউ আছে যারা বলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনিই আগে ছিলেন।

এ বর্ণনার বাহ্যিক দিক হল; ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) উল্লেখিত অবস্থা স্বচক্ষে দেখেননি। হাফিয বলেনঃ তবে এ ব্যাপারে বর্ণনাসমূহ দৃঢ়তার সাথে একত্রিত হয়েছে যা ঐ অবস্থার উপর প্রমাণ বহন করে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি ঐ সালাতের ইমাম ছিলেন। সে বর্ণনাগুলো থেকে এটি মূসা বিন আবী ‘আয়িশার বর্ণনা। যা ৩য় পরিচ্ছেদে আসবে। অতঃপর এ ব্যাপারে মতানৈক্য উল্লেখ করার পর বলেন, অতঃপর বিদ্বানদের মধ্যে থেকে যে প্রাধান্য দেয়া এর পথ অবলম্বন করেছেন তিনি ঐ বর্ণনাটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন যে বর্ণনাতে আবূ বাকর মুক্তাদী থাকার কথা দৃঢ়তার সাথে বলা হয়েছে। কেননা আবূ মু‘আবিয়াহ্ (যে হাদীসটিকে এ শব্দে বর্ণনা করেছে যে, আবূ বাকর রসূলের সালাতের অনুসরণ করছিলেন এবং মানুষ আবূ বাকরের সালাতের অনুসরণ করছিল।) আ‘মাশ-এর হাদীসে অন্য অপেক্ষা বেশি সংরক্ষণকারী।

আর তাদের থেকে এমন কেউ আছে যে এর বিপরীত পথ অবলম্বন করেছে এবং আবূ বাকর ইমাম থাকার কথা প্রাধান্য দিয়েছে। তাদের মধ্য হতে এমনও আছে যে সকল হাদীসের মাঝে সমন্বয় সাধনের পথ অবলম্বন করেছে। (যেমন ইবনু হিব্বান, বায়হাক্বী ও ইবনু হাযম) অতঃপর ঘটনাটিকে তিনি বহু ঘটনার উপর চাপিয়ে দিয়েছেন ‘‘অর্থাৎ নিশ্চয়ই আবূ বাকর একবার ইমাম ছিলেন আরেকবার মুক্তাদী ছিলেন’’ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) ব্যতীত সাহাবীদের হতে মতানৈক্যপূর্ণ বর্ণনা একে সমর্থন করেছে। অতঃপর এ বিষয়ে ইবনু ‘আব্বাস-এর একটি হাদীস আছে, নিশ্চয় আবূ বাকর (রাঃ) একজন মুক্তাদী ছিলেন, যেমন মূসা বিন আবী ‘আয়িশার বর্ণনাতে অচিরেই আসছে। এভাবে ইবনু মাজাতে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে আরক্বাম বিন শুরাহবীল-এর বর্ণনাতে এবং আনাসের হাদীসে আছে নিশ্চয় আবূ বাকর ইমাম ছিলেন। ইমাম তিরমিযী ও নাসায়ী একে সংকলন করেছেন।

‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী বলেনঃ অমি বলব, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে আরকামের হাদীস ইমাম আহমাদও তার কিতাবের প্রথম খন্ডে ২৩১, ২৫৫ ও ২৫৬ পৃষ্ঠাতে সংকলন করেছেন।

ত্বহাবী শারহুল আসারে ১ম খন্ডে ১৩০ পৃষ্ঠাতে। বায়হাক্বী তার সুনান গ্রন্থে ৩য় খন্ডে ৮১ পৃষ্ঠাতে। সকলের নিকট এ হাদীসের মূল আবূ ইসহাক আস্ সুরাইয়ী এর কাছে। যা তিনি আরক্বাম বিন শুরাহবীল থেকে বর্ণনা করেন। আবূ ইসহাক একজন মুদাল্লিস বর্ণনাকারী। শেষ বয়সে যার স্মৃতিতে বিশৃঙ্খলা চলে এসেছিল। এ হাদীসটিকে তিনি عنعنة পদ্ধতিতে বর্ণনা করেছেন। ইমাম বুখারী বলেনঃ আরক্বাম বিন শুরাহবীল থেকে তার শ্রুত হাদীস উল্লেখ করা হয় না। আনাস (রাঃ)-এর হাদীসকে ইমাম তিরমিযী বিশুদ্ধ বলেছেন। ইমাম আহমাদও একে তৃতীয় খন্ডে ১৫৯, ২৩৩, ২৪৩ পৃষ্ঠাতে উল্লেখ করেছেন। ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী বলেনঃ তবে আমার নিকট প্রাধান্যতর উক্তি হল নিশ্চয়ই ঘটনা একটি।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বাকর-এর ইমামতির ক্ষেত্রে মতানৈক্য একটি সালাতের ব্যাপারে। আর এ মতানৈক্য কেবল বর্ণনাকারীদের হস্তক্ষেপের কারণে। এটিই অধ্যায়ে বর্ণিত হাদীসসমূহের ও সানাদসমূহের বাচনভঙ্গি এবং বুখারী ও মুসলিমের কর্ম থেকে স্পষ্ট। যেমন বুখারী ও মুসলিম তাঁদের সহীহ কিতাবদ্বয়ের মাঝে বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন নির্ভরশীল বর্ণনাকারীদের মাধ্যমে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর সানাদে একমাত্র নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইমামতি ছাড়া অন্য কোন হাদীস সংকলন না করণ ও আনাস (রাঃ)-এর হাদীস সংকলন না করণ। হাফিয বলেনঃ ইমাম শাফি‘ঈ স্পষ্ট করে দিয়েছেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মরণের অসুস্থতায় মানুষকে নিয়ে মসজিদে মাত্র একবার সালাত আদায় করেছেন। আর তা হল এই সালাত যাতে তিনি বসে সালাত আদায় করেছেন। আবূ বাকর তাতে প্রথমে ইমাম ছিলেন তারপর মানুষকে তাকবীর শোনানো অবস্থায় মুক্তাদী হয়ে যান।

ইবনু ‘আবদুল বার বলেনঃ বিশুদ্ধ আসারসমূহ ঐ কথার উপর বর্তায় যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম ছিলেন। এ ঘটনাতে যা অতিবাহিত হয়েছে তা ছাড়াও অনেক উপকারিতা রয়েছে সকল সাহাবীর উপর আবূ বাকরকে অগ্রাধিকার দেয়া, প্রাধান্য দেয়া, কাতার থেকে পিছিয়ে থাকার মাধ্যমে, মর্যাদাবানকে সম্মান জানানোর মাধ্যমে তাদের বয়োজ্যেষ্ঠের সাথে শিষ্টাচার প্রদর্শন।

কেননা আবূ বাকর পিছিয়ে আসতে চেয়েছিলেন যাতে পিছনের কাতারগুলোর সমান হয়ে যান কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তাঁর স্থান হতে সরে আসতে দেননি। হাদীসে ইঙ্গিত করা কথা বলার স্থলাভিষিক্ত। ইঙ্গিতের উপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সীমাবদ্ধ থাকা সম্ভবত তাঁর আওয়াজের দুর্বলতার কারণে। তারও সম্ভাবনা রাখছে ইঙ্গিত মূলত ঐ বিষয়টি জানিয়ে দেয়ার জন্য যে, যে ব্যক্তি সালাতে থাকে তাকে ইঙ্গিতের মাধ্যমে সম্বোধন করে কথা বলা অপেক্ষা উত্তম। হাদীসটিতে জামা‘আতের ব্যাপারে গুরুত্ব এবং তার ক্ষেত্রে কঠোরতাকে অবলম্বন করা হয়েছে যদিও রোগ জামা‘আত বর্জনের অবকাশ দিয়ে থাকে। হাদীসটিতে জামা‘আত বর্জনে অবকাশ উত্তম তথাপিও অসুস্থাবস্থায় জামা‘আতের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা বৈধ এ কারণে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা করেছে।

ত্ববারী বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা কেবল এজন্য করেছেন যাতে তারপর কোন ইমাম তার নিজের মাঝে সর্বনিম্ন আপত্তি পেলেই ইমামতি থেকে পিছিয়ে থাকতে না পারে।  নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকরকে এগিয়ে দেয়ার মাধ্যমে মানুষকে এ কথা বুঝিয়ে দেয়া যে, আবূ বাকর ঐ বিষয়ের যোগ্য। এমনকি তিনি তাঁর পেছনে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন। তিনি আরও প্রমাণ গ্রহণ করেছেন যে, প্রয়োজনে মুক্তাদীর স্থান পরিবর্তন করা বৈধ। আর এর মাধ্যমে তিনি বিনা প্রয়োজনে ইমামের স্থলাভিষিক্ত তৈরি করা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে প্রমাণ গ্রহণ করেছেন। আর তা আবূ বাকরকে করা বৈধ। এটা মূলত ঐ ব্যক্তির মতো যে ব্যক্তি ইমামের কাছে পৌঁছে কাতারের চাপাচাপির কারণে তাঁর সাথে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা করেছে। তিনি আরও দলীল গ্রহণ করেছেন কতক মুক্তাদী কতকের অনুসরণ করা বৈধ হওয়ার ক্ষেত্রে। আর তা শা‘বীর উক্তি এবং ত্ববারী এর বাছাই করা কথা। বুখারী এদিকে ইঙ্গিত করেছেন যেমন গত হয়েছে।

তবে এক্ষেত্রে এভাবে সমালোচনা করা হয়েছে যে, আবূ বাকর কেবল আওয়াজ পৌঁছিয়ে দিচ্ছিলেন। যেমন অচিরেই তা আসছে। আর এর উপর ভিত্তি করেই অনুসরণ বলতে মুক্তাদীদের কর্তৃক আবূ বাকর-এর আওয়াজের অনুসরণ করা। একে আরও সমর্থন করছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা ছিলেন এবং আবূ বাকর দাঁড়ানো ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের কতক কর্ম কতক মুক্তাদীদের নিকট অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। এখান থেকেই আবূ বাকর তাদের ক্ষেত্রে ইমামের মতই। এর ব্যাখ্যা হল নিশ্চয়ই এ থেকে উদ্দেশ্য আবূ বাকর সালাতে ক্বিয়াম (কিয়াম), রুকূ‘, সাজদার ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থার অনুসরণ করছিল। আবূ বাকর যেন তাঁর অনুসরণকারী। যেমন হাদীসে এসেছে ‘‘আর তুমি তাদের সর্বাধিক দুর্বল ব্যক্তির প্রতি খেয়াল রাখবে’’।

এ ধরনের অপব্যাখ্যা খুবই অসম্ভব। একে প্রত্যাখ্যান করেছে তার আগত বাণী ‘‘আবূ বাকর মানুষকে তাকবীর শোনাচ্ছিল’’ ত্ববারী এর মাধ্যমে ঐ ব্যাপারে দলীল গ্রহণ করেছেন যে, ইমাম তার প্রতি মুক্তাদীদের অনুসরণ বিচ্ছিন্ন করে সালাত বিচ্ছিন্ন না করে তিনি নিজেই অন্য আরেকজনের অনুসরণ করা। আর এ দলীল ঐ অবস্থার উপর ভিত্তি করে যে, আবূ বাকর প্রথমে ইমামতি শুরু করে তারপর তাঁর প্রতি মুক্তাদীদের অনুসরণ বিচ্ছিন্ন করে তিনি নিজেই রসূলের অনুসরণ করলেন। এর মাধ্যমে তিনি ঐ ব্যাপারে প্রমাণ গ্রহণ করেছেন যে, আপত্তিবশতঃ বসে সালাত আদায় করে এমন ব্যক্তির জন্য তার মতো আরেক ব্যক্তির বা দাঁড়াতে পারে এমন ব্যক্তির ইমামতি করা বিশুদ্ধ হবে। এটা মালিকী মতাবলম্বীদের মতের বিপরীত। আর এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা গত হয়েছে।

(مُتَّفق عَلَيْهِ) হাদীসটি ইমাম বুখারী কয়েকটি স্থানে বিভিন্ন শব্দে ও সানাদে দীর্ঘাকারে ও সংক্ষিপ্তাকারে সংকলন করেছেন। আর উল্লেখিত বাচনভঙ্গি দীর্ঘ হাদীসের সংক্ষিপ্ত রূপ। ইমাম বুখারী ‘‘একে ব্যক্তি ইমামের অনুসরণ করবে এবং মানুষ মুক্তাদীর অনুসরণ করবে’’ এ অধ্যায়ে সংকলন করেছেন। আর তাতে আছে ‘‘অতঃপর আবূ বাকর যখন সালাতে প্রবেশ করল তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মাঝে নিজ শরীরকে হালকা অনুভব করলেন’’।

তাতে বর্ণনাকারীর উক্তি ‘‘অতঃপর আবূ বাকর ঐ দিনগুলোতে সালাত আদায় করালেন, অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজের হালকা পরিস্থিতি অনুভব করলেন’’ এ অংশটুকু নেই এবং (পিছিয়ে না আসতে) কথাটুকুও নেই। ‘‘অতঃপর তিনি যখন সালাতে প্রবেশ করলেন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  অনুভব করলেন..... শেষ পর্যন্ত’’ এ বাণী দ্বারা উদ্দেশ্য হল, অর্থাৎ অতঃপর তিনি যখন মানুষকে নিয়ে সালাত আদায় করাতে ইমামতির পদে প্রবেশ করলেন এবং তাঁকে তাদের ইমাম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হল এবং এ দায়িত্ব পালনে অটল রইলেন তখন ঐ দিনগুলোর মাঝে কোন একদিন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিজের মাঝে হালকা পরিস্থিতি অনুভব করলেন।

অথবা ঐ দিনগুলোর মাঝে যখন আবূ বাকর সালাতে প্রবেশ করলেন তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মাঝে হালকা পরিস্থিতি অনুভব করলেন এবং উদ্দেশ্য এটা না যে, আবূ বাকর যখন ঐ সালাতে প্রবেশ করলেন তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের মাঝে হালকা পরিস্থিতি অনুভব করলেন। অতএব এ বর্ণনা আগত তৃতীয় পরিচ্ছেদের বর্ণনার বিপরীত হবে না। বুখারী ও মুসলিমের এক বর্ণনাতে এসেছে ‘‘আবূ বাকর মানুষকে তাকবীর শোনাচ্ছিলেন’’ অর্থাৎ আবূ বাকর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তাকবীর শোনাচ্ছিল বিধায় আবূ বাকর একজন মুকাব্বির ছিলেন, ইমাম না।

এ শব্দটি বর্ণনাকারীর এ ‘‘আবূ বাকর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের অনুসরণ করছিল এবং মানুষ আবূ বাকর-এর সালাতের অনুসরণ করছিল’’ এ উক্তির উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করছে এবং ‘‘আবূ বাকর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের মাধ্যমে সালাত আদায় করছিল এবং মানুষ আবূ বাকরের সালাতের মাধ্যমে সালাত আদায় করছিল’’ এ উক্তির ব্যাখ্যা করছে। এতে ঐ ব্যাপারে দলীল রয়েছে যে, মুক্তাদীরা তাকবীরের অনুসরণ করবে এ লক্ষ্যে তাদের তাকবীর শোনানোর জন্য উঁচু আওয়াজ তাকবীর বলা বৈধ রয়েছে।

মুক্তাদীর জন্য মুকাব্বিরের আওয়াজের অনুসরণ করা বৈধ এবং আওয়াজ যে শোনায় ও শুনে উভয়ের সালাত বিশুদ্ধ হবে। এটা অধিকাংশের মত। এ ক্ষেত্রে মালিকী মাযহাবপন্থীদের বিরোধ ও ব্যাখ্যা রয়েছে। যে ব্যাপারে কোন দলীল নেই। হাদীসটিকে ইমাম বায়হাক্বীও ৩য় খন্ডে ৮১ হতে ৯৩ পৃষ্ঠার মাঝে সংকলন করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)