১০৬৬

পরিচ্ছেদঃ ২৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৬৬-[১৫] উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আমাদেরকে নিয়ে ফজরের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাম ফিরানোর পর বললেন, অমুক লোক কি হাযির আছে? সাহাবীগণ বললেন, না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পুনরায় বললেন, অমুক লোক কি হাযির আছে? সাহাবীগণ বললেন, না। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সব সালাতের মাঝে এ দু’টি সালাত (ফাজর ও ’ইশা) মুনাফিক্বদের জন্যে খুবই কষ্টসাধ্য। তোমরা যদি জানতে এ দু’টি সালাতের মাঝে কত পুণ্য, তাহলে তোমরা হাঁটুর উপর ভর করে হলেও সালাতে আসতে।

সালাতের প্রথম কাতার মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাদের) কাতারের মতো (মর্যাদাপূর্ণ)। তোমরা যদি প্রথম কাতারের ফাযীলাত জানতে তবে এতে অংশগ্রহণ করার জন্য তাড়াতাড়ি পৌঁছার চেষ্টা করতে। আর একা একা সালাত আদায় করার চেয়ে অন্য একজন লোকের সঙ্গে মিলে সালাত আদায় করা অনেক সাওয়াব। আর দু’জনের সাথে মিলে সালাত আদায় করলে একজনের সাথে সালাত আদায় করার চেয়ে অধিক সাওয়াব পাওয়া যায়। আর যত বেশী মানুষের সঙ্গে মিলে সালাত আদায় করা হয়, তা আল্লাহর নিকট তত বেশী প্রিয়। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

وَعَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا الصُّبْحَ فَلَمَّا سَلَّمَ قَالَ: «أَشَاهِدٌ فُلَانٌ؟» قَالُوا: لَا. قَالَ: «أَشَاهِدٌ فُلَانٌ؟» قَالُوا: لَا. قَالَ: «إِنَّ هَاتَيْنِ الصَّلَاتَيْنِ أَثْقَلُ الصَّلَوَاتِ عَلَى الْمُنَافِقِينَ وَلَو تعلمُونَ مَا فيهمَا لأتيتموهما وَلَوْ حَبْوًا عَلَى الرُّكَبِ وَإِنَّ الصَّفَّ الْأَوَّلَ عَلَى مِثْلِ صَفِّ الْمَلَائِكَةِ وَلَوْ عَلِمْتُمْ مَا فضيلته لابتدرتموه وَإِن صَلَاة الرجل من الرَّجُلِ أَزْكَى مِنْ صَلَاتِهِ وَحْدَهُ وَصَلَاتَهُ مَعَ الرَّجُلَيْنِ أَزْكَى مِنْ صَلَاتِهِ مَعَ الرَّجُلِ وَمَا كَثُرَ فَهُوَ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن ابي بن كعب قال: صلى بنا رسول الله صلى الله عليه وسلم يوما الصبح فلما سلم قال: «اشاهد فلان؟» قالوا: لا. قال: «اشاهد فلان؟» قالوا: لا. قال: «ان هاتين الصلاتين اثقل الصلوات على المنافقين ولو تعلمون ما فيهما لاتيتموهما ولو حبوا على الركب وان الصف الاول على مثل صف الملاىكة ولو علمتم ما فضيلته لابتدرتموه وان صلاة الرجل من الرجل ازكى من صلاته وحده وصلاته مع الرجلين ازكى من صلاته مع الرجل وما كثر فهو احب الى الله» . رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: (إِنَّ هَاتَيْنِ الصَّلَاتَيْنِ) ‘‘এ দু’টি সালাত’’ অর্থাৎ ‘ইশা ও ফাজর (ফজর) (أَثْقَلُ الصَّلَوَاتِ عَلَى الْمُنَافِقِينَ) মুনাফিক্বদের উপর খুব বেশী ভারী। এতে বুঝা যায় যে, সকল সালাতই মুনাফিক্বদের জন্য ভারী। কিন্তু ‘ইশা অধিক ভারী এ কারণে যে, তখন আরামের সময় আর ফাজরের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) এ জন্য ভারী যে, তা স্বাদের ঘুমের সময়। যেহেতু মুনাফিক্ব ব্যক্তি সালাতের সাওয়াবে বিশ্বাসী নয় কাজেই তাতে তার প্রতি ধর্মীয় কোন আবেদন নেই।

মূলত মুনাফিক্ব ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশে সালাত আদায় করে থাকে। আর এ সালাত দু’টি রাতের অন্ধকারে অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে তার স্বার্থ অনুপস্থিত, যেহেতু লোকজন তার সালাতের গমনাগমন দেখতে পাবে না ফলে তাতে দুনিয়াবী আবেদনও অনুপস্থিত ফলে এ সালাত আদায় করা তাদের জন্য কষ্টকর।

(وَمَا كَثُرَ فَهُوَ أَحَبُّ إِلَى اللّهِ) যাতে লোকের সমাগম বেশী হয় তা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। এতে বুঝা গেল যে, যে জামা‘আতের লোক সংখ্যা বেশী তা ঐ জামা‘আতের চাইতে উত্তম যাতে লোক সংখ্যা কম। এতে জামা‘আতের মর্যাদার ভিন্নতা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত, যদিও জামা‘আত হিসেবে সকল জামা‘আতই সাতাশ গুণ মর্যাদার অধিকারী। এ হাদীস তাদের অভিমতকে প্রত্যাখ্যান করে যারা বলে যে, সকল জামা‘আতের মর্যাদাই সমান, চাই লোক সংখ্যা বেশী হোক বা কম হোক।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)