পরিচ্ছেদঃ ১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সিজদা্ ও তার মর্যাদা
৮৯৪-[৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর বান্দারা তাদের রবের বেশি নিকটে যায় সাজদারত অবস্থায়। তাই তখন বেশি বেশি করে আল্লাহর কাছে দু’আ করবে। (মুসলিম)[1]
بَابُ الْسُّجُوْدِ وَفَضْلِه
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الْعَبْدُ مِنْ رَبِّهِ وَهُوَ ساجد فَأَكْثرُوا الدُّعَاء» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: সাজদার মাধ্যমে সবচাইতে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার যুক্তি হলো সে আল্লাহকে আহবানকারী, কেননা আল্লাহ তা‘আলা আহবানকারীর অতি নিকটবর্তী, যেমন আল্লাহ বলেন-
وَاِذَا سَأَلَكَ عِبَادِىْ عَنِّىْ فَاِنِّىْ قَرِيْبٌ اُجِيْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ
‘‘আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে, বস্ত্তত আমি রয়েছি অতি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে তাদের প্রার্থনা কবূল করেনি যখন তারা আমার নিকট প্রার্থনা করে।’’ (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ : ১৮৬)
কেননা সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হলো বিনয় প্রকাশ, নিজকে তুচ্ছ বা অতি নগণ্য ও চেহারাকে ধূসরিত করার চূড়ান্ত নমুনা। আর বান্দার এ অবস্থাটা আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়।
ত্ববারানী তাঁর ‘কাবীর’ গ্রন্থে ভালো সানাদে ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ হতে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ তা‘আলা আদমকে সৃষ্টি করার পর প্রথম আদেশের বিষয় ছিল সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) এর মাধ্যমে যারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করার হাসিল করে নিয়েছে। কিন্তু ইবলীসের বিরোধিতা করে আল্লাহর সাথে প্রথম নাফরমানী করেছে।
কারো বক্তব্যঃ বান্দা যে পরিমাণ নিজকে দূরে রাখে (সাজদার মাধ্যমে) সে তার রবের নিকট তার চেয়ে আরো বেশী নিকটবর্তী হয়।
আর সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হলো বিনয় ভাব প্রকাশের ও অহংকার মুক্ত এবং নিজকে তুচ্ছ ভাবার এক চূড়ান্ত নমুনা।
ইমাম কুরতুবী বলেনঃ এ নৈকট্য সম্মান মর্যাদা ও অবস্থানের দৃষ্টিকোণ থেকে দূরত্ব বা পরিমাপের সাথে সংশ্লিষ্ট না।
(فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ) তোমরা সাজদায় বেশি বেশি দু‘আ করো। কেননা এটা আল্লাহর অতি কাছাকাছি হওয়ার স্থান আর এ অবস্থায় দু‘আ কবূল হয়। কেননা মুনীব তার দাসকে তখনই বেশি ভালোবাসে যখন তার আনুগত্য করে এবং তার জন্য বিনয়ী হয়। আর তখন দাস মুনীবের কাছে যা আবেদন করে তাই তিনি মঞ্জুর করে।
হাদীসটি সাজদায় বেশি বেশি দু‘আ পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছে। আর এ হাদীসটি দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হবে না যারা বলে যে, সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) ক্বিয়ামের চেয়ে উত্তম।