৫৮৭

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - প্রথম ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সালাত আদায়

এ অধ্যায়ে তাড়াতাড়ি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বলতে ফরয সালাতকে বুঝানো হয়েছে। কেননা মূলনীতি হলো ফরয সালাতকে প্রথম ওয়াক্তে তাড়াতাড়ি আদায় করে নেয়া। যেহেতু আল্লাহ তা’আলা বলেন,وَسَارِعُوا إِلى مَغْفِرَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ

’’তোমরা আল্লাহর মাগফিরাতের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও।’’ (সূরাহ্ আ-লি ’ইমরান ৩: ১৩৩)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ’’তোমরা কল্যাণের কাজে তাড়াতাড়ি অগ্রসর হও।’’

(সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ ২: ১৪৮)

তবে বিশেষ কল্যাণের কারণে শারী’আত প্রণেতা যে সালাতকে দেরী করে আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছেন তা দেরী করে আদায় করাই উত্তম। যেমন, ’ইশার সালাত এবং প্রচন্ড গরমের সময় যুহরের সালাত।


৫৮৭-[১] সাইয়্যার ইবনু সালামাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ও আমার আব্বা আবূ বারযাহ্ আল আসলামী (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। আমার আব্বা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কিভাবে আদায় করতেন? তিনি উত্তরে বললেন, যুহরের সালাত- যে সালাতকে তোমরা প্রথম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বলো, সূর্য ঢলে পড়লেই আদায় করতেন। ’আসরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন এমন সময়, যার পর আমাদের কেউ মদীনার শেষ প্রান্তে তার বাড়ীতে ফিরতে পারতেন, অথচ সূর্য তখনও পরিষ্কার থাকতো। বর্ণনাকারী বলেন, মাগরিবের সালাত সম্পর্কে কী বলেছেন, আমি তা ভুলে গেছি। আর ’ইশার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ), যাকে তোমরা ’আতামাহ্’ বল, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দেরী করে আদায় করতেই ভালোবাসেন এবং ’ইশার সালাতের আগে ঘুম যাওয়া বা সালাতের পরে কথা বলাকে পছন্দ করতেন না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফজরের (ফজরের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ করতেন, যখন কেউ নিজের সঙ্গে বসা ব্যক্তিকে চিনতে পারতো এবং এ সময় ষাট হতে একশত আয়াত তিলাওয়াত করতেন।[1] অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ’ইশার সালাতকে রাতের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত পিছিয়ে নিতেও দ্বিধা করতেন না এবং ’ইশার সালাতের আগে ঘুম যাওয়া ও পরে কথা বলাকে অপছন্দ করতেন। (বুখারী ও মুসলিম)[2]

بَابُ تَعْجِيْلِ الصَّلَوَاتِ

عَنْ سَيَّارِ بْنِ سَلَامَةَ قَالَ: دَخَلْتُ أَنَا وَأَبِي عَلَى أَبِي بَرْزَةَ الْأَسْلَمِيِّ فَقَالَ لَهُ أَبِي كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الْمَكْتُوبَةَ فَقَالَ كَانَ يُصَلِّي الْهَجِيرَ الَّتِي تَدْعُونَهَا الْأُولَى حِينَ تَدْحَضُ الشَّمْسُ وَيُصلي الْعَصْر ثُمَّ يَرْجِعُ أَحَدُنَا إِلَى رَحْلِهِ فِي أَقْصَى الْمَدِينَةِ وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ وَنَسِيتُ مَا قَالَ فِي الْمغرب وَكَانَ يسْتَحبّ أَن يُؤَخر الْعشَاء الَّتِي تَدْعُونَهَا الْعَتَمَةَ وَكَانَ يَكْرَهُ النَّوْمَ قَبْلَهَا والْحَدِيث بعْدهَا وَكَانَ يَنْفَتِل مِنْ صَلَاةِ الْغَدَاةِ حِينَ يَعْرِفُ الرَّجُلُ جَلِيسَهُ وَيَقْرَأُ بِالسِتِّينَ إِلَى الْمِائَةِ. وَفِي رِوَايَةٍ: وَلَا يُبَالِي بِتَأْخِيرِ الْعِشَاءِ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ وَلَا يُحِبُّ النَّوْمَ قَبْلَهَا وَالْحَدِيثَ بَعْدَهَا

عن سيار بن سلامة قال: دخلت انا وابي على ابي برزة الاسلمي فقال له ابي كيف كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يصلي المكتوبة فقال كان يصلي الهجير التي تدعونها الاولى حين تدحض الشمس ويصلي العصر ثم يرجع احدنا الى رحله في اقصى المدينة والشمس حية ونسيت ما قال في المغرب وكان يستحب ان يوخر العشاء التي تدعونها العتمة وكان يكره النوم قبلها والحديث بعدها وكان ينفتل من صلاة الغداة حين يعرف الرجل جليسه ويقرا بالستين الى الماىة. وفي رواية: ولا يبالي بتاخير العشاء الى ثلث الليل ولا يحب النوم قبلها والحديث بعدها

ব্যাখ্যা: তাবি‘ঈ সাহাবীর কাছে জানতে চাইছেন, ফরয সালাতগুলোর মধ্য হতে কোন সালাতটি কোন সময় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদায় করতেন। তিনি উত্তর দিচ্ছেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহর আদায় করতেন ঠিক ঐ সময় যখন সূর্য মাথার উপর পৌঁছার পর পশ্চিম দিকে গড়তে আরম্ভ করতো।

তারপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আসর আদায় করতেন এমন সময় যে, তাঁর পিছনে ‘আসর আদায়ের পর একজন সাহাবী মদীনার শেষ সীমানায় তার নিজ বাড়ী ফিরে যাওয়ার পর সূর্য উজ্জ্বল সাদা চকচকে থাকতো। সাহাবীর উপরোক্ত উক্তি প্রমাণ করে যে, একটি বস্ত্তর ছায়া তার সমপরিমাণ হওয়ার সাথে সাথে ‘আসর আদায় করা হয়েছিল।

সাহাবী (রাঃ) বললেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘ইশার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) রাত্রের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত বিলম্ব করা পছন্দ করতেন এবং ‘ইশার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের পর গল্প-গুজব করা পছন্দ করতেন না। কারণ তাহাজ্জুদ ও ফাজর (ফজর) ছুটে যাওয়ার আশংকা থাকে।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ফজরের (ফজরের) সালাত হতে সালাম ফিরাতেন তখন একজন মুসল্লী তার পাশে বসে থাকা সাথীকে চিনতে পারতো।

এ হাদীস প্রমাণ করে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাজর (ফজর) গালাস, অর্থাৎ- ভোরের অন্ধকারে শুরু করেছিলেন। কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বড়ই ধীরস্থিরভাবে ৬০-১০০ আয়াত পর্যন্ত ফাজর (ফজর) সালাতে তিলাওয়াত করতেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)