পরিচ্ছেদঃ
২৪। যে ব্যাক্তি তাঁর বাড়ী হতে সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য বের হয়, অতঃপর এ দু’আ বলেঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করেছি তোমার নিকট প্রার্থনাকারীদের সত্য জানার দ্বারা, আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি আমার এ চলাকে সত্য জানার দ্বারা। কারন আমি অহংকার করে আর অকৃতজ্ঞ হয়ে বের হয়নি ... তখন আল্লাহ তাঁর চেহারা সমেত তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হন এবং তাঁর জন্য এক হাজার ফেরেশতা ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
হাদীসটি দুর্বল।
এটি ইবনু মাজাহ (১/২৬১-২৬২), আহমাদ (৩/২১), বাগাবী "হাদীসু আলী ইবনুল যায়াদ" গ্রন্থে (৯/৯৩/৩) ও ইবনুস সুন্নী (নং ৮৩) ফুযায়েল ইবনু মারযুক সূত্রে আতিয়া আল-আওফী হতে বর্ণনা করেছেন।
দুটি কারণে হাদীসটির সনদ দুর্বলঃ ।
১। ফুযায়েল ইবনু মারযুক দুর্বল বর্ণনাকারী। একদল তাকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। আর একদল তাকে নির্ভরযোগ্য আখ্যা দিয়েছেন।
আবু হাতিম বলেনঃ তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল। তিনি আরো বলেনঃ তার হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যাবে না।
হাকিম বলেনঃ তিনি সহীহার শর্তের মধ্যে পড়েন না। ইমাম মুসলিম তার সূত্রে হাদীস বর্ণনা করার কারণে দোষী হয়েছেন। নাসাঈ বলেনঃ তিনি দুর্বল।
ইবনু হিব্বান তার “আস-সিকাত” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি ভুল করতেন। তিনি "আয-যুয়াফা" গ্রন্থে আরো বলেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্যদের বিপক্ষে ভুল করতেন এবং আতিয়া হতে জাল (বানোয়াট) হাদীস বর্ণনা করতেন।
লক্ষ্য করুন তাকে আবু হাতিম ও নাসাঈর সাথে হাকিম এবং ইবনু হিব্বানও দুর্বল বলেছেন, অথচ তারা দু’জন নির্ভরযোগ্য বলার ক্ষেত্রে শিথিলতা প্রদর্শনকারীদের অন্তর্ভুক্ত। কাওসারী যে বলেছেনঃ শুধুমাত্র আবু হাতিমই তাকে দুর্বল বলেছেন। কথাটি যে সঠিক নয় তার প্রমাণ মিলে গেছে।
তিনি যে বলেছেন, দোষারোপটি ব্যাখ্যাকৃত নয়, সেটিও ঠিক নয়। কারণ আবূ হাতিম বলেনঃ তিনি বহু ভুল করতেন। হাফিয ইবনু হাজার তার এ কথার উপর নির্ভর করেছেন।
এছাড়া তিনি বলেছেন যে, বুস্তি তাকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন। বুস্তি হচ্ছেন ইবনু হিব্বান। তিনি কি বলেছেন আপনারা তা অবগত হয়েছেন।
২। হাদীসটি দুর্বল হওয়ার আরো একটি কারণ হচ্ছে আতিয়া আল-আওফী নামক দুর্বল বর্ণনাকারী। হাফিয ইবনু হাজার “আত-তাকরীব" গ্রন্থে বলেনঃ তিনি সত্যবাদী, তবে বহু ভুল করতেন। এছাড়া তিনি একজন শিয়া মতাবলম্বী মুদাল্লিস বর্ণনাকারী ছিলেন। অতএব তাকে দোষ দেয়াটা ব্যাখ্যাকৃত দোষারোপ।
ইবনু হিব্বান “আয-যুয়াফা" গ্রন্থে বলেনঃ তিনি আবু সাঈদ (রাঃ) হতে কতিপয় হাদীস শুনেন। অতঃপর যখন আবু সাঈদ (রাঃ) মারা গেলেন, তখন তিনি কালবীর মজলিসে বসা শুরু করলেন। যখন কালবী বলতেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন..., তখন তিনি তা হেফয করে নিতেন। কালবীর কুনিয়াত ছিল আবূ সাঈদ। তিনি তার থেকে বর্ণনা করতেন। তাকে যখন বলা হত এ হাদীসটি আপনাকে কে বর্ণনা করেছেন? তখন তিনি বলতেনঃ আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন আবু সাঈদ। ফলে লোকেরা ধারণা করত যে, তিনি আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ)-কে বুঝাচ্ছেন, অথচ আসলে হবে কালবী। এ জন্য তার হাদীস লিপিবদ্ধ করাই হালাল নয়। তবে আশ্চর্য হবার উদ্দেশ্যে লিখা যেতে পারে।
যাহাবীও “আল-মীযান” গ্রন্থে তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম তিরমিয়ী আতিয়ার হাদীসকে হাসান বলেছেন। কিন্তু তার একথা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ তিরমিযী এ ক্ষেত্রে শিথিলতা প্রদর্শনকারী হিসাবে পরিচিত। ইবনু দাহিয়া বলেনঃ তিনি বহু জাল এবং দুর্বল হাদীসের সনদকেও সহীহ বা হাসান বলে উল্লেখ করেছেন। এ কারণে ইমাম যাহাবী বলেনঃ আলেমগণ ইমাম তিরমিযীর বিশুদ্ধকরণের উপর নির্ভর করেননি।
আবুস সিদ্দীক হাদীসটির মুতাবায়াত করেছেন। কিন্তু তার সনদে আব্দুল হাকিম ইবনু যাকওয়ান রয়েছেন। তার সম্পর্কে ইবনু মাঈন বলেনঃ তাকে আমি চিনি না। ইবনু হিব্বান তাকে নির্ভরযোগ্য বললেও তা গ্রহণযোগ্য নয়। এর ব্যাখ্যা পূর্বেই দেয়া হয়েছে।
হাদীসটি দুর্বল হওয়ার তৃতীয় কারণ হচ্ছে ইযতিরাব। একবার এসেছে মারফু’ হিসাবে আরেকবার এসেছে মওকুফ হিসাবে। এছাড়া ইবনুস সুন্নী “আমলুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ" গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তার সনদে বর্ণনাকারী ওয়াযে রয়েছেন, তিনি বিলাল হতে বর্ণনা করেছেন। এ ওয়াযে সম্পর্কে আবু হাতিম বলেনঃ তিনি নিতান্তই দুর্বল, তিনি কিছুই না।
তিনি তার ছেলেকে বলেনঃ তার হাদীসগুলো নিক্ষেপ কর, কারণ সেগুলো মুনকার।
হাকিম বলেনঃ তিনি কতিপয় বানোয়াট হাদীস বর্ণনা করেছেন। অন্যরাও অনুরূপ বলেছেন।
মোটকথা হাদীসটি উভয় সূত্রেই দুর্বল। একটি সূত্র অন্যটি হতে বেশী দুর্বল। বূসয়রী, মুনযেরী ও অন্যান্য ইমামগণ হাদীসটিকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।
من خرج من بيته إلى الصلاة فقال: اللهم إني أسألك بحق السائلين عليك، وأسألك بحق ممشاي هذا، فإني لم أخرج أشرا ولا بطرا ... أقبل الله عليه بوجهه واستغفر له ألف ملك
ضعيف
-
" إن تعدد الطرق إنما يرفع الحديث إلى مرتبة الحسن لغيره إذا كان الضعف في الرواة من جهة الحفظ والضبط
فقط، لا من ناحية تهمة الكذب، فإن كثرة الطرق لا تفيد شيئا إذ ذاك ".
ومن هنا يتبين للقاريء اللبيب لم سكت الشيخ عن بيان حال الوازع هذا!
وجملة القول أن هذا الحديث ضعيف من طريقيه وأحدهما أشد ضعفا من الآخر، وقد ضعفه البوصيرى والمنذري وغيرهما من الأئمة، ومن حسنه فقد وهم أو تساهل، وقد تكلمت على حديث بلال هذا، وكشفت عن تدليس الكوثري فيما سيأتي (6252)