পরিচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনধারার আরো কিছু বিবরণ:
২৫৮. হাসান ইবনে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার মামা হিন্দ ইবনে আবু হালা (রাঃ) কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থা জানার জন্য জিজ্ঞেস করলাম, যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থা অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে বর্ণনা করতেন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেহাকৃতি ছিল উচ্চ ও মর্যাদাসম্পন্ন। তাঁর চেহারা ছিল পূর্ণিমা রাতের চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল। অতঃপর পূর্ণ বিবরণ পেশ করেন। হাসান (রাঃ) বলেন, এ হাদীস হুসাইন (রাঃ) এর কাছে বেশ কিছু কাল বর্ণনা করিনি। পরে বলা হলে জানা গেল যে, তিনি আমার আগেই এ হাদীসটি শুনেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি এ হাদীসটি কেবল মামার কাছ থেকে শুনেননি; উপরন্তু পিতা আলী (রাঃ) এর কাছ হতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘরে প্রবেশ করা, বাইরে যাওয়া ও অন্যান্য রীতিনীতি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এ সম্পর্কে কোন কিছুই তিনি ছাড়েননি।
হুসাইন (রাঃ) বলেন, আমি আমার পিতা আলী (রাঃ) কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গৃহে প্রবেশ করার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন গৃহে প্রবেশ করতেন, তখন তাঁর গৃহের অবস্থানকে তিনটি ভাগে ভাগ করতেন। এক ভাগ আল্লাহর ইবাদাতের জন্য, এক ভাগ পরিবার-পরিজনের জন্য এবং এক ভাগ নিজের কাজকর্মের জন্য। এ কাজকর্মের সময়কেও তিনি ২ ভাগে বিভক্ত করেন। এক ভাগে নেহায়তই নিজের জন্য এবং এক ভাগ অন্যান্য লোকের জন্য। এ সময়ে বিশেষ বিশেষ সাহাবীগণ তাঁর নিকট আসতেন। তাদের কাছে কোন কিছুর অব্যক্ত থাকত না। এ সকল লোকের মধ্যে আলেমগণ প্রথমে আসার অনুমতি পেতেন। তাদের ধর্মীয় মর্যাদার বিচারে তাদেরকে সময় দিতেন। কেউ এক, কেউ দুই, আবার কেউ ততোধিক প্রয়োজন নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলের প্রয়োজন মিটিয়ে দিতেন এবং তাদেরকে এমন কাজের নির্দেশ দিতেন, যা তাদের নিজেদের এবং পুরো উম্মতের উপকারে আসে।
এ সময় তিনি সমবেতদের লক্ষ্য করে বলতেন, তোমরা যারা এখানে উপস্থিত আছ, তারা আমার বাণী অনুপস্থিতদের কাছে পৌছে দেবে। যারা কোন কারণে আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারনি, তোমরা তাদের জিজ্ঞাসা আমার কাছ থেকে জেনে নিয়ে তাদেরকে জানিয়ে দেবে। কারণ, যে ব্যক্তি এমন কোন নিবেদন বাদশাহের কাছে পৌছায় যে বাদশা পর্যন্ত পৌছতে পারে না, আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন তাঁর কদমকে অটল রাখবেন। তোমরা এ ব্যাপারে সতর্ক হও। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মজলিসে কেবল এসব আলোচনাই চলত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণের থেকে এসব আলাপ-আলোচনাই শুনতেন। সেখানে কোন প্রকার বাহুল্য কথাবার্তা হতো না। সাহাবীরা ধমীয় জ্ঞান আহরণের আগ্রহ নিয়ে আসতেন এবং দ্বীনের স্বাদ গ্রহণ করতেন এবং তারা কল্যাণের দিশারী হয়ে ফিরে যেতেন।
হুসাইন (রাঃ) বলেন, আমি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইরে যাওয়ার সময় কীরূপ করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অহেতুক কথাবার্তা হতে স্বীয় জবানকে সংযত রাখতেন। মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতেন। তাদেরকে কোনভাবেই নিরুৎসাহিত করতেন না। সকল গোত্রের সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মান করতেন এবং তাদের মধ্য হতে তাদের নেতা মনোনীত করতেন। লোকদের আল্লাহর শাস্তির ভয় দেখাতেন। স্বীয় সঙ্গীদের খোজ-খবর রাখতেন এবং লোকদের পারস্পরিক সম্পর্ক অনুসন্ধান করে (কোন প্রকার জটিলতা থাকলে) তা সংশোধন করে দিতেন। ভালোকে সমর্থন করে তাকে শক্তিশালী করতেন এবং খারাপকে খারাপ বলে প্রতিহত করতেন। কোন প্রকার মতবিরোধ সৃষ্টি না করে সবকিছুতেই মধ্যমপস্থা অনুসরণ করতেন। লোকদের সংশোধন করতে কোন প্রকার অলসতা করতেন না। নসীহত ও উপদেশ দানের সময় লোকেরা যেন উদাসীন ও বিরক্ত হয়ে না পড়ে, তিনি সে দিকেও খেয়াল রাখতেন। প্রত্যেক কাজের জন্য তাঁর কাছে বিশেষ ব্যবস্থা থাকত। সত্যের ব্যাপারে কোন প্রকার সংকীর্ণতা ছিল না, সীমা অতিক্রম হতো না। যেসব লোক তাঁর কাছে আসত, তারা উৎকৃষ্ট লোকে পরিণত হতো। যেই ব্যক্তি অপরের মঙ্গল কামনা করত, সে-ই তাঁর নিকট উত্তম ব্যক্তিরূপে সম্মানিত হতো। আর সে ব্যক্তিই তাঁর কাছে মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরূপে মনে হতো, যে অন্যদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগিতায় অতি উৎসাহী ছিল।
হুসাইন (রাঃ) বলেন, আমি আমার মামার কাছে রাসূলুল্লাহ এর মজলিস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠা-বসায় সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকতেন। যখন কোথাও যেতেন, যেখানেই তাঁকে বসতে দিত, তিনি সেখানেই বসতেন। অন্যদেরকেও অনুরূপ করার নির্দেশ দিতেন। তিনি লোকের মাথা ডিঙ্গিয়ে যেতে নিষেধ করেন। এ কথা সত্য যে, তিনি যে আসনেই বসতেন, তাই মধ্যমনির আসনে পরিণত হতো। তিনি উপস্থিত সকলেরই কথা শুনতেন। উপস্থিত সকলেই মনে করত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অধিক মর্যাদা দিচ্ছেন। তাঁর কাছে কেউ আসলে সে নিজে উঠে না যাওয়া পর্যন্ত তিনি উঠতেন না। কেউ তাঁর কাছে কিছু চাইলে তা না দিয়ে তিনি তাকে ফিরিয়ে দিতেন না। না থাকলে নম্রভাবে বুঝিয়ে বলতেন। তাঁর দান সবার জন্যই অবধারিত ছিল। মায়া-মমতায় তিনি সকলের পিতা স্বরূপ ছিলেন। ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর নিকট সবাই সমান ছিল। তাঁর মজলিস ছিল জ্ঞান, লজ্জা, ধৈর্য ও আমানতের। সেখানে কোন প্রকার হট্টগোল হতো না এবং কারো মান-সম্মানেরও ক্ষতি হতো না। সকলেই সমান মর্যাদা পেতেন। তবে তাকওয়ার বিচারে একে অন্যের উপর মর্যাদাসম্পন্ন হতেন। একে অন্যের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার করতেন। বড়কে শ্রদ্ধা ও ছোটকে স্নেহ করতেন। প্রয়োজনধারীকে অগ্রাধিকার দেয়া হতো এবং ভিনদেশীকে হেফাযত করা হতো।[1]
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جُمَيْعُ بْنُ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْعِجْلِيُّ ، قَالَ : أَنْبَأَنَا رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ مِنْ وَلَدِ أَبِي هَالَةَ زَوْجِ خَدِيجَةَ , يُكْنَى أَبَا عَبْدِ اللَّهِ ، عَنِ ابْنٍ لأَبِي هَالَةَ ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ ، قَالَ : سَأَلْتُ خَالِي هِنْدَ بْنَ أَبِي هَالَةَ ، وَكَانَ وَصَّافًا عَنْ حِلْيَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، وَأَنَا أَشْتَهِي أَنْ يَصِفَ لِي مِنْهَا شَيْئًا ، فَقَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَخْمًا مُفَخَّمًا ، يَتَلأْلأُ وَجْهُهُ تَلأْلُؤَ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ " . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ ، قَالَ الْحَسَنُ : فَكَتَّمْتُهَا الْحُسَيْنَ زَمَانًا ، ثُمَّ حَدَّثْتُهُ فَوَجَدْتُهُ قَدْ سَبَقَنِي إِلَيْهِ . فَسَأَلَهُ عَمَّا سَأَلْتُهُ عَنْهُ , وَوَجَدْتُهُ قَدْ سَأَلَ أَبَاهُ عَنْ مَدْخَلِهِ وَمَخْرَجِهِ وَشَكْلِهِ , فَلَمْ يَدَعْ مِنْهُ شَيْئًا .
قَالَ الْحُسَيْنُ : فَسَأَلْتُ أَبِي ، عَنْ دُخُولِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَالَ : " كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى مَنْزلِهِ , جَزَّأَ دُخُولَهُ ثَلاثَةَ أَجْزَاءٍ ، جُزْءًا لِلَّهِ ، وَجُزْءًا لأَهْلِهِ ، وَجُزْءًا لِنَفْسِهِ ، ثُمَّ جَزَّأَ جُزْأَهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّاسِ ، فَيَرُدُّ ذَلِكَ بِالْخَاصَّةِ عَلَى الْعَامَّةِ ، وَلا يَدَّخِرُ عَنْهُمْ شَيْئًا ، وَكَانَ مِنْ سِيرَتِهِ فِي جُزْءِ الأُمَّةِ إِيثَارُ أَهْلِ الْفَضْلِ بِإِذْنِهِ , وَقَسْمِهِ عَلَى قَدْرِ فَضْلِهِمْ فِي الدِّينِ ، فَمِنْهُمْ ذُو الْحَاجَةِ ، وَمِنْهُمْ ذُو الْحَاجَتَيْنِ ، وَمِنْهُمْ ذُو الْحَوَائِجِ ، فَيَتَشَاغَلُ بِهِمْ وَيَشْغَلُهُمْ فِيمَا يُصْلِحُهُمْ , وَالأُمَّةَ مِنْ مُسَاءَلَتِهِمْ عَنْهُ , وَإِخْبَارِهِمْ بِالَّذِي يَنْبَغِي لَهُمْ " , وَيَقُولُ : " لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ مِنْكُمُ الْغَائِبَ ، وَأَبْلِغُونِي حَاجَةَ مَنْ لا يَسْتَطِيعُ إِبْلاغَهَا ، فَإِنَّهُ مَنْ أَبْلَغَ سُلْطَانًا حَاجَةَ مَنْ لا يَسْتَطِيعُ إِبْلاغَهَا , ثَبَّتَ اللَّهُ قَدمَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " ، لا يُذْكَرُ عِنْدَهُ إِلا ذَلِكَ ، وَلا يُقْبَلُ مِنْ أَحَدٍ غَيْرِهِ ، يَدْخُلُونَ رُوَّادًا وَلا يَفْتَرِقُونَ إِلا عَنْ ذَوَاقٍ ، وَيَخْرُجُونَ أَدِلَّةً , يَعْنِي عَلَى الْخَيْرِ .
قَالَ : فَسَأَلْتُهُ عَنْ مَخْرَجِهِ كَيْفَ يَصْنَعُ فِيهِ ؟ قَالَ : قَالَ : فَسَأَلْتُهُ عَنْ مَخْرَجِهِ كَيْفَ يَصْنَعُ فِيهِ ؟ قَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْرِنُ لِسَانُهُ إِلا فِيمَا يَعْنِيهِ ، وَيُؤَلِّفُهُمْ وَلا يُنَفِّرُهُمْ ، وَيُكْرِمُ كَرِيمَ كُلِّ قَوْمٍ وَيُوَلِّيهِ عَلَيْهِمْ ، وَيُحَذِّرُ النَّاسَ وَيَحْتَرِسُ مِنْهُمْ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَطْوِيَ عَنْ أَحَدٍ مِنْهُمْ بِشْرَهُ وَخُلُقَهُ ، وَيَتَفَقَّدُ أَصْحَابَهُ ، وَيَسْأَلُ النَّاسَ عَمَّا فِي النَّاسِ ، وَيُحَسِّنُ الْحَسَنَ وَيُقَوِّيهِ ، وَيُقَبِّحُ الْقَبِيحَ وَيُوَهِّيهِ ، مُعْتَدِلُ الأَمْرِ غَيْرُ مُخْتَلِفٍ ، لا يَغْفُلُ مَخَافَةَ أَنْ يَغْفُلُوا أَوْ يَمِيلُوا ، لِكُلِّ حَالٍ عِنْدَهُ عَتَادٌ ، لا يُقَصِّرُ عَنِ الْحَقِّ وَلا يُجَاوِزُهُ . الَّذِينَ يَلُونَهُ مِنَ النَّاسِ خِيَارُهُمْ ، أَفْضَلُهُمْ عِنْدَهُ أَعَمُّهُمْ نَصِيحَةً ، وَأَعْظَمُهُمْ عِنْدَهُ مَنْزِلَةً أَحْسَنُهُمْ مُوَاسَاةً وَمُؤَازَرَةً " .
قَالَ : فَسَأَلْتُهُ عَنْ مَجْلِسِهِ ، فَقَالَ : قَالَ : فَسَأَلْتُهُ عَنْ مَجْلِسِهِ ، فَقَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لا يَقُومُ وَلا يَجْلِسُ , إِلا عَلَى ذِكْرٍ ، وَإِذَا انْتَهَى إِلَى قَوْمٍ , جَلَسَ حَيْثُ يَنْتَهِي بِهِ الْمَجْلِسُ , وَيَأْمُرُ بِذَلِكَ ، يُعْطِي كُلَّ جُلَسَائِهِ بِنَصِيبِهِ ، لا يَحْسَبُ جَلِيسُهُ أَنَّ أَحَدًا أَكْرَمُ عَلَيْهِ مِنْهُ ، مَنْ جَالَسَهُ أَوْ فَاوَضَهُ فِي حَاجَةٍ , صَابَرَهُ حَتَّى يَكُونَ هُوَ الْمُنْصَرِفُ عَنْهُ ، وَمَنْ سَأَلَهُ حَاجَةً لَمْ يَرُدَّهُ إِلا بِهَا , أَوْ بِمَيْسُورٍ مِنَ الْقَوْلِ ، قَدْ وَسِعَ النَّاسَ بَسْطُهُ وَخُلُقُهُ ، فَصَارَ لَهُمْ أَبًا وَصَارُوا عِنْدَهُ فِي الْحَقِّ سَوَاءً ، مَجْلِسُهُ مَجْلِسُ عِلْمٍ وَحِلْمٍ وَحَيَاءٍ وَأَمَانَةٍ وَصَبْرٍ ، لا تُرْفَعُ فِيهِ الأَصْوَاتُ , وَلا تُؤْبَنُ فِيهِ الْحُرَمُ ، وَلا تُثَنَّى فَلَتَاتُهُ , مُتَعَادِلِينَ ، بَلْ كَانُوا يَتَفَاضَلُونَ فِيهِ بِالتَّقْوَى ، مُتَوَاضِعِينَ يُوَقِّرُونَ فِيهِ الْكَبِيرَ , وَيَرْحَمُونَ فِيهِ الصَّغِيرَ ، وَيُؤْثِرُونَ ذَا الْحَاجَةِ , وَيَحْفَظُونَ الْغَرِيبَ " .
Imaam Hasan bin 'Ali Radiyallahu 'Anhu reports that I asked my (maternal) uncle Hind bin Abi Haalab, who usually described particulars and conditions of Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam. I was longing to hear something about it. On my asking, he described the mubaarak features of Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam. He said: 'Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam had great qualities and attributes in him, others also held him in high esteem. His face glittered like the full moon'. He then described the complete features of Rasulullah Sallallahu
'Alayhi Wasallam (as has been mentioned in the first chapter under hadith number seven). Imaam Hasan Radiyallahu 'Anhu says. 'I did not mention this hadith (due to some reason) to Husayn (Radiyallahu 'Anhu) for some time. Then I once narrated it to him whereupon I found that he had heard it before me. He had asked him (our uncle) already what I had asked. I also found that he had asked our father ('Ali Radiyallahu 'Anhu) about Rasulullah Sallallahu 'Alayhi 'Wasallam entering and coming out of the house. He did not leave out anything about the ways
and manners of Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam. Imaam Husayn Radiyallahu 'Anhu said: 'I asked my father regarding the manner in which Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam entered the house?' He replied: 'When Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam entered the house he distributed his time into three portions; He spent a portion for Allah. (In devotion, performing salaah etc.); A portion towards his family (fulfilling their duties. i.e. laughing, speaking, enquiring about their welfare etc.); and a portion for himself (resting etc.). He distributed his personal portion in two, one for himself and one for the people, in such a manner that the near one's among the Sahaabah Radiyallahu 'Anhum came to visit him. Through these Sahaabah Radiyallahu 'Anhum he conveyed messages to the people. He did not conceal anything from
them. From the portion of the unimah he adopted this method, that he gave preference to the Ahlul-Fadl (i.e. people of 'ilm and 'amal). He distributed this time according to their religious fadl. From among those who came, some had one requirement, some had two requirements, and some had many requirements. Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam fulfilled all their
requirements. He busied them in things that benefited them and the entire ummah. When they questioned Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam on religious matters, he replied to them in a manner that benefited them. He used to say: 'Those that are present, should inform those that are not present regarding these beneficial and necessary matters'. He also used to say: 'Those people
who for some reason (purdah, distance, shyness or awe) cannot put forward their requirements, you should inform me about their requirements, because, that person who informs a king of the need of another, who is unable to put forward that need, Allah Ta'aala will keep that person stead fast on the day of qiyaamah'. Only important and beneficial matters were discussed in his
gathering. He happily listened to these matters from the Sahaabah Radiyallahu 'Anhum. Besides this there was no wasteful or non-beneficial talks in his assemblies. The Sahaabah Radiyallahu 'Anhum came to the assemblies of Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam for their religious
needs, they did not depart before tasting something (by tasting, may be meant the acquiring of religious knowledge. It could mean 'Hissi' tasting too. Whatever Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam possessed, he offered it in humbleness. Whenever close friends gather,
whatever is available is presented to them). The Sahaabah Radiyallahu 'Anhum returned from his assemblies as torch bearers of hidayah and goodness. (They spread. these teachings amongst others). Imaam Husayn Radiyallahu 'Anhu says: 'I asked (my father) regarding the coming out of
Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam from the house'. He replied: 'Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam controlled his tongue and only spoke that which was necessary. He did not waste his time in useless conversations. He made those who came to visit him feel at home he did not make them feel scared or ill at ease. (i.e. When advising them, he did not scold them in a
manner that they become scared, or tell them such things that would keep them away from the deen). He respected and honoured the respected ones of every nation. He also chose a leader for them. He warned the people of Allah's punishrnent (or he emphasised that the people be cautious*). He also protected himself from troubling or harming people. Besides being cautious and commanding others to be cautious, he never lacked in courtesy towards others. He was concerned for the affairs of his friends, made himself aware about the relationships between them and rectified their faults. He praised good deeds and encouraged them. He explained the harmful effects of bad things and removed and stopped these. He followed the middle path in all matters. (He did not at times say this and at other times that). He did not neglect the guiding of
people, it is possible that they became unmindful of their religious duties, or exceeded in a matter resulting in them becoming disheartened. For everything there was a special arrangement .He did not fall back in the truth, nor did he exceed the limits in this.
Those who attended his gatherings were the best of people. The best person in the eyes of Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam was the one who wished everybody well. The one with the highest status in the eyes of Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam was that person who considered, comforted and helped the creation the most'. Sayyidina Imaam Husayn Radiyallahu 'Anhu says: 'I then enquired from him regarding the assemblies of Sayyidina Rasulullah Sallallahu Wasallam'. He replied: 'He began and ended all his sitting with the dhikr of Allah. When he went to a place, he sat where he found a place, and also instructed the people to do so. They should not leap over peoples heads and go ahead. It is a different matter, that where Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam sat, that place became the focal point of the gathering. Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam fulfilled the rights of every person
present. That means, whatever right was due in talking and showing happiness, was fulfilled by him, so much so, that every person present would think that Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam is honouring me the most. The person that came to sit by Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam or came to him for some purpose, Sayyidina Rasulullah Sallallahu
'Alayhi Wasallam would remain seated till that person began to stand up. Whenever one asked him for something, he kindly fulfilled that request, and did not refuse it, (if he did not possess the thing) he would give a soft and humble answer. His cheerfulness and pleasant manner were for
everybody. He was like a father to them. The whole creation was equal before him as far as rights were concerned. His gatherings were the gatherings of knowledge, modesty, patience and honesty. (i.e. These four things were attained there or are a description of his gatherings). Voices were not raised therein, nor was anyone degraded or disgraced. If anyone committed a fault, it
was not made known publicly. All were regarded as equals amongst themselves. (A person was not regarded according to his lineage or genealogy). The virtues of one over the other was according to the taqwa (piety) possessed. The small ones were loved. The needy were given preference. Strangers and travellers were cared for'.
In brief, in every matter his noble manners reached their pinnacle and even exceeded that, and why should it not be so when his divine mission was to fulfil and complete noble manners? Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam has said: 'I have been sent so that I may fulfil and complete the best of manners'. Even though being granted this, he always made this du'aa: 'O Allah, You have created me excellently. In the same manner make my character excellent'. Allah Ta'aala has mentioned the greatness of his noble character in the Qur-aan, and has also emphasised it in many ways. Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam said: 'Allah Ta'aala likes those with gentle temperaments, and in reward for gentleness He grants something which He does not grant for other things'. In another hadith it has been stated: 'The person that is deprived of gentleness is deprived of great blessings'. It is stated in a hadith: 'The best amongst you is the one who has the best character'. In one hadith it has been stated: 'The most beloved amongst you by me is the one who possesses noble character'. A Sahaabi inquired from Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam 'What is the best thing granted to man? Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam replied: 'Good character'. In one hadith it has been stated: 'On the day of qiyyaamah the weightiest thing on the scale of deeds will be good character'. It has been stated in a hadith: 'A good-mannered person can through his character, reach the status of those pious people who stay awake at night, and fast during the day'. Sayyidina Mu'aadh Radiyallahu 'Anhu says that when I was sent to Yaman (Yeman), while mounting conveyance, when I put my leg in the stirrup, Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam gave me this final advice: 'Treat the people with courtesy'. Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam has said the ones that possess the most complete imaan among the Mu'mins are those whose characters are the best. In many other other ahaadith too it has been stressed that one should have good character. The above mentioned ahaadith are an example of these.