পরিচ্ছেদঃ ৫৫. যে সালাত আদায় করা সম্ভব হয়নি এবং তা করার (সম্পাদনের) ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৪৯-(৩১২/৬৮২) আহমাদ ইবনু সাঈদ ইবনু সখর আদ দারিমী (রহঃ) ..... ’ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন এক সফরে তার সাথে ছিলাম। এক রাতে আমরা রাতের বেলায়ই পথ চলছিলাম। রাতের শেষ দিকে আমরা বিশ্রামের জন্য একস্থানে অবতরণ করলে ঘুমের প্রভাবে আমাদের চোখ বন্ধ হয়ে আসলো। এ অবস্থায় সূর্য উদিত হলো। ইমরান ইবনু হুসায়ন বলেন, আমাদের মধ্যে সর্বপ্রথম যিনি ঘুম থেকে জেগে উঠলেন তিনি আবূ বকর। আমাদের নীতি ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমানোর পর নিজে নিজেই যতক্ষণ না জাগতেন ততক্ষণ আমরা কেউ তাকে নিদ্রা থেকে জাগাতাম না। আবূ বকরের পর যিনি প্রথম জাগলেন তিনি ’উমার। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পাশ গিয়ে দাঁড়িয়ে উচ্চ শব্দে তাকবীর বলতে শুরু করলেন। এতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জেগে উঠলেন।
তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাথা উঠিয়ে দেখতে পেলেন সূর্য আগেই উদিত হয়েছে। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সবাইকে বললেনঃ তোমরা এখান থেকে যাত্রা শুরু করো। এরপর তিনিও আমাদের সাথে যাত্রা করলেন। অতঃপর সূর্যের কিরণ আরো পরিষ্কারভাবে চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে তিনি সওয়ারী থামিয়ে অবতরণ করলেন এবং আমাদেরকে সাথে করে ফজরের সালাত আদায় করলেন। কিন্তু জনৈক ব্যক্তি সবার থেকে দূরে থাকল এবং আমাদের সাথে সালাত আদায় করলেন না। সালাত শেষ করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কী কারণে আমাদের সাথে সালাত আদায় করলে না? সে বলল- হে আল্লাহর নবী, আমার জন্য গোসল ফারয (ফরয) হয়েছে (তাই সালাত আদায় করতে পারলাম না)।
তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করতে বললেন। অতঃপর সে তায়াম্মুম করে সালাত আদায় করল। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে একদল লোকের সাথে সম্মুখের দিকে আগে আগে পাঠিয়ে দিলেন যাতে আমরা পানি খুঁজে বের করি। আমরা ইতোমধ্যেই যার পর নাই তৃষ্ণাৰ্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমরা পথ চলতে চলতে এক স্ত্রী লোককে দেখতে পেলাম। সে তার সওয়ারীর উপর দুটি চামড়ার মশকের উপর দু দিকে পা ঝুলিয়ে বসে ছিল। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এখানে পানি কোথায় পাওয়া যাবে? সে বলে উঠল হায়! হায়! এখানে তোমরা পানি কোথায় পাবে? আমরা তাকে পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তোমার গোত্রের বসতি এলাকা থেকে পানি কত দূরে? সে বললঃ একদিন ও একরাতের পথের ব্যবধান। আমরা তাকে বললাম, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে চলো। সে বললঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার কী?
এরপর আমরা আর তাকে নিজের ইচ্ছামত কোন কিছুই করতে দিলাম না। বরং তাকে ধরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে আসলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, সে আমাদেরকে যা বলেছিল তাকেও তাই বলল। সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আরো জানালেন যে, সে কয়েকজন ইয়াতীম শিশুর অভিভাবিকা। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উটকে বসাতে আদেশ করলে সেটিকে বসানো হলো এবং তিনি চামড়ার মশকের উপর দিকের মুখ দুটিতে কুল্লি করে দিলেন। এরপর উটটিকে দাঁড় করানো হলো। আমরা তৃষ্ণার্ত চল্লিশ জনে সবাই এবার তৃষ্ণা দূর করে পানি পান করলাম। আমরা আমাদের মশক ও পানির পাত্রগুলো ভর্তি করে নিলাম এবং আমাদের সঙ্গী লোকটিকেও গোসল করালাম। তবে কোন উটকে আমরা পানি পান করালাম না। অথচ মশক তখনও পানির চাপে ফেটে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল।
এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমাদের যার কাছে যা আছে নিয়ে এসো। সুতরাং আমরা ঐ মহিলার জন্য খেজুর ও খেজুরের টুকরা এনে জমা করলে সেগুলো দিয়ে তার জন্য একটি পুটলি বাধা হলো। (এগুলো দিয়ে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এবার তুমি গিয়ে তোমার বাচ্চাদের খাওয়াও। আর মনে রেখ যে, আমরা তোমার পানি আদৌ নেইনি। সে তার লোকদের কাছে ফিরে গিয়ে বললঃ আমি সবচেয়ে বড় যাদুকরের সাক্ষাৎ পেয়েছি। অথবা সে সম্ভবত বলেছিল, একজন নবীর সাক্ষাৎ পেয়েছি। এমন-এমন বিস্ময়কর দেখলাম তার ব্যাপারটা আল্লাহ তা’আলা ঐ মহিলার দ্বারা উক্ত জনপদকে হিদায়াত দান করলেন। সুতরাং সেও ইসলাম গ্রহণ করল এবং উক্ত জনপদের লোকেরাও ইসলাম গ্রহণ করল। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৪৩৪, ইসলামীক সেন্টার ১৪৪৩)
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ صَخْرٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ، حَدَّثَنَا سَلْمُ بْنُ زَرِيرٍ الْعُطَارِدِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيَّ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ كُنْتُ مَعَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي مَسِيرٍ لَهُ فَأَدْلَجْنَا لَيْلَتَنَا حَتَّى إِذَا كَانَ فِي وَجْهِ الصُّبْحِ عَرَّسْنَا فَغَلَبَتْنَا أَعْيُنُنَا حَتَّى بَزَغَتِ الشَّمْسُ - قَالَ - فَكَانَ أَوَّلَ مَنِ اسْتَيْقَظَ مِنَّا أَبُو بَكْرٍ وَكُنَّا لاَ نُوقِظُ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ مَنَامِهِ إِذَا نَامَ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ عُمَرُ فَقَامَ عِنْدَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ صَوْتَهُ بِالتَّكْبِيرِ حَتَّى اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا رَفَعَ رَأْسَهُ وَرَأَى الشَّمْسَ قَدْ بَزَغَتْ قَالَ " ارْتَحِلُوا " . فَسَارَ بِنَا حَتَّى إِذَا ابْيَضَّتِ الشَّمْسُ نَزَلَ فَصَلَّى بِنَا الْغَدَاةَ فَاعْتَزَلَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لَمْ يُصَلِّ مَعَنَا فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا فُلاَنُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَنَا " . قَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَصَابَتْنِي جَنَابَةٌ . فَأَمَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَيَمَّمَ بِالصَّعِيدِ فَصَلَّى ثُمَّ عَجَّلَنِي فِي رَكْبٍ بَيْنَ يَدَيْهِ نَطْلُبُ الْمَاءَ وَقَدْ عَطِشْنَا عَطَشًا شَدِيدًا . فَبَيْنَمَا نَحْنُ نَسِيرُ إِذَا نَحْنُ بِامْرَأَةٍ سَادِلَةٍ رِجْلَيْهَا بَيْنَ مَزَادَتَيْنِ فَقُلْنَا لَهَا أَيْنَ الْمَاءُ قَالَتْ أَيْهَاهْ أَيْهَاهْ لاَ مَاءَ لَكُمْ . قُلْنَا فَكَمْ بَيْنَ أَهْلِكِ وَبَيْنَ الْمَاءِ . قَالَتْ مَسِيرَةُ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ . قُلْنَا انْطَلِقِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَتْ وَمَا رَسُولُ اللَّهِ فَلَمْ نُمَلِّكْهَا مِنْ أَمْرِهَا شَيْئًا حَتَّى انْطَلَقْنَا بِهَا فَاسْتَقْبَلْنَا بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهَا فَأَخْبَرَتْهُ مِثْلَ الَّذِي أَخْبَرَتْنَا وَأَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا مُوتِمَةٌ لَهَا صِبْيَانٌ أَيْتَامٌ فَأَمَرَ بِرَاوِيَتِهَا فَأُنِيخَتْ فَمَجَّ فِي الْعَزْلاَوَيْنِ الْعُلْيَاوَيْنِ ثُمَّ بَعَثَ بِرَاوِيَتِهَا فَشَرِبْنَا وَنَحْنُ أَرْبَعُونَ رَجُلاً عِطَاشٌ حَتَّى رَوِينَا وَمَلأْنَا كُلَّ قِرْبَةٍ مَعَنَا وَإِدَاوَةٍ وَغَسَّلْنَا صَاحِبَنَا غَيْرَ أَنَّا لَمْ نَسْقِ بَعِيرًا وَهِيَ تَكَادُ تَنْضَرِجُ مِنَ الْمَاءِ - يَعْنِي الْمَزَادَتَيْنِ - ثُمَّ قَالَ " هَاتُوا مَا كَانَ عِنْدَكُمْ " . فَجَمَعْنَا لَهَا مِنْ كِسَرٍ وَتَمْرٍ وَصَرَّ لَهَا صُرَّةً فَقَالَ لَهَا " اذْهَبِي فَأَطْعِمِي هَذَا عِيَالَكِ وَاعْلَمِي أَنَّا لَمْ نَرْزَأْ مِنْ مَائِكِ " . فَلَمَّا أَتَتْ أَهْلَهَا قَالَتْ لَقَدْ لَقِيتُ أَسْحَرَ الْبَشَرِ أَوْ إِنَّهُ لَنَبِيٌّ كَمَا زَعَمَ كَانَ مِنْ أَمْرِهِ ذَيْتَ وَذَيْتَ . فَهَدَى اللَّهُ ذَاكَ الصِّرْمَ بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ فَأَسْلَمَتْ وَأَسْلَمُوا .
'Imran b. Husain reported:
I was with the Messenger of Allah (ﷺ) in a journey. We travelled the whole of the night, and when it was about to dawn, we got down for rest, and were overpowered (by sleep) till the sun shone. Abu Bakr was the first to awake amongst us. and we did not awake the Messenger of Allah (ﷺ) from his sleep allowing him to wake up (of his own accord). It was 'Umar who then woke up. He stood by the side of the Messenger of Allah (ﷺ) and recited takbir in a loud voice till the Messenger of Allah (ﷺ) woke up. When he lifted his head, he saw that the sun had arisen; he then said: Proceed on. He travelled along with us till the sun shone brightly. He came down (from his camel) and led us in the morning prayer. A person, however, remained away from the people and did not say, prayer along with us. After having completed the prayer, the Messenger of Allah (ﷺ) said to him: O, so and so, what prevented you from observing prayer with us? He said: Apostle of Allah! I was not in a state of purity. The Messenger of Allah (ﷺ) ordered him arid lie performed Tayammum with dust and said prayer. He then urged me to go ahead immediately along with other riders to find out water, for we felt very thirsty. We were traveling when we came across a woman who was sitting (on a camel) with her feet hanging over two leathern water bags. We said to her: How far is water available? She, said: Far, very far, very far. You cannot get water. We (again) said: How much distance is there between (the residence of) your family and water? She said: It is a day and night journey. We said to her: You go to the Messenger of Allah (ﷺ). She said: Who is the Messenger of Allah? We somehow or the other managed to bring her to the Messenger of Allah (ﷺ) and he asked about her, and she informed him as she had informed us that she was a widow having orphan children. He ordered that her camel should be made to kneal down and he gargled in the opening (of her leathern water-bag). The camel was then raised up and we forty thirsty men drank water till we were completely satiated, and we filled up all leathern water-bags and water-skins that we had with us and we washed our companions, but we did not make any camel drink, and (the leathern water-bags) were about to burst (on account of excess of water). He then said: Bring whatever you have with you. So we collected the bits (of estable things) and dates and packed them up in a bundle, and said to her: Take it away. This is meant for your children, and know that we have not its any way done any loss to your water. W hen she came to her family she said: I have met the greatest magician amongst human beings, or he is an apostle, as he claims to be, and she then narrated what had happened and Allah guided aright those people through that woman. She affirmed her faith in Islam and so did the people embrace Islam.