পরিচ্ছেদঃ ২৩৬. জানাযা নামায পড়ার সময় ইমাম মৃত ব্যক্তির কোন স্থান বরাবর দাঁড়াবে।
৩১৮০. দাঊদ ইবন মু’আয (রহঃ) ..... নাফি আবূ গালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি সিক্কাতুল মিওবাদ নামক স্থানে ছিলাম। এ সময় সেখান দিয়ে একটি জানাযা (লাশ) অতিক্রম করছিল, যার সাথে অনেক লোক ছিল। লোকেরা বলাবলি করছিলঃ এটা আবদুল্লাহ ইবন উমার (রাঃ)-এর জানাযা। তখন আমিও তাদের অনুসরণ করি। এ সময় আমি এমন এক ব্যক্তিকে দেখতে পাই, যিনি পাতলা চাদর মুড়ি দিয়ে একটি ছোট মুখ বিশিষ্ট অশ্বে সওয়ার ছিলেন। আর রোদের তাপ থেকে বাঁচার জন্য তাঁর মাথার উপর একখণ্ড কাপড়ও ছিল। তাঁকে দেখে আমি জিজ্ঞাসা করিঃ ইনি কোন জমিদার? লোকেরা বলেঃ ইনি আনাস ইবন মালিক (রাঃ)।
অতঃপর যখন জানাযা (লাশ) রাখা হয়, তখন আনাস (রাঃ) দাঁড়ান এবং জানাযার নামায পড়ান। এ সময় আমি তাঁর পেছনে ছিলাম এবং তাঁর ও আমার মাঝে আর কোন অন্তরায় ছিল না। তিনি তাঁর (মৃত ব্যক্তির) মাথা বরাবর দাঁড়ান এবং চার তাকবীরে নামায শেষ করেন, যা অধিক দীর্ঘ ও সংক্ষিপ্ত ছিল না। অতঃপর তিনি বসার জন্য গমন করেন। তখন লোকেরা তাঁকে বলেঃ হে আবূ হামযা! এটি একটি আনসার মহিলার জানাযা। তখন তারা সেটি নিকটে নিয়ে আসে এবং সেটি সবুজ গিলাফে ঢাকা ছিল।
তখন তিনি [আনাস (রাঃ)] তাঁর কোমর বরাবর খাড়া হয়ে ঐরূপে জানাযা নামায আদায় করেন, যেরূপ তিনি পুরুষ লোকটির নামায পড়িয়েছিলেন। অতঃপর তিনি উপবেশন করেন। তখন আলা ইবন যিয়াদ তাঁকে জিজ্ঞাসা করেনঃ হে আবূ হামযা! আপনি যেভাবে জানাযার নামায আদায় করলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনার মত করে সালাতুল-জানাযা আদায় করতেন? তিনি কি চার তাকবীর বলতেন এবং পুরুষের জানাযার মাথা বরাবর ও স্ত্রীলোকদের জানাযার কোমর বরাবর দণ্ডায়মান হতেন? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ।
অতঃপর তিনি (আলা) বলেনঃ হে আবূ হামযা! আপনি কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে জিহাদে শরীক হয়েছিলেন? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ। আমি তার সঙ্গে হুনায়নের যুদ্ধে শরীক হয়েছিলাম। এ সময় মুশরিকরা (তাদের দুর্গ হতে) বেরিয়ে এসে আমাদের উপর (প্রচণ্ড) হামলা করে। ফলে আমরা আমাদের ঘোড়াকে আমাদের পেছনে দেখতে পাই। আর মুশরিকদের মাঝে এমন এক ব্যক্তি ছিল, যে আমাদের উপর (তীব্র) হামলা করেছিল এবং তরবারির আঘাতে আমাদের ক্ষত-বিক্ষত করছিল। অবশেষে আল্লাহ্ তাদের পরাজিত করেন। তিনি তাদের নিয়ে আসেন এবং তারা এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ইসলামের উপর বায়’আত গ্রহণ করতে থাকে।
এ সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জনৈক সাহাবী এরূপ মানত করেন যে, সে দিন যে ব্যক্তি আমাদের তরবারির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করেছিল, আল্লাহ্ যদি তাকে এনে দেন, তবে আমি তার শিরশ্ছেদ করব। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ থাকেন। অতঃপর সে ব্যক্তিকে আনা হয়। সে ব্যক্তি যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখে, তখন বলেঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আল্লাহ্র কাছে তাওবা করেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বায়’আত করা হতে বিরত থাকেন, যাতে অপর ব্যক্তি (সাহাবী) তাঁর মানত পুরা করার সুযোগ পায়। অপরপক্ষে সে সাহাবী এ অপেক্ষায় ছিল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হত্যার নির্দেশ দিবেন।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দেখলেন যে, সে (সাহাবী) কিছুই করছে না, তখন তাকে বায়’আত করেন। তখন সে ব্যক্তি (সাহাবী) বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার মানত কিরূপে পূর্ণ হবে? তিনি বলেনঃ আমি তাকে আজকের পূর্ব পর্যন্ত বায়’আত করাতে এ জন্য বিরত ছিলাম, যাতে তুমি তোমার মানত পুরা করতে পার। তখন সে (সাহাবী) বলেঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমাকে কেন ইশারা করলেন না? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ইশারা করা নবীর শান নয়।
রাবী আবূ গালিব বলেনঃ অতঃপর আমি লোকদের কাছে আনাস (রাঃ) মহিলার জানাযার নামায পড়বার সময় কেন তার কোমর বরাবর দাঁড়ালেন, এর কারণ জিজ্ঞাসা করি। তখন তারা আমাকে বলেনঃ প্রথম যুগে খাটিয়ার প্রচলন ছিল না, (যাতে মহিলাদের লাশ ঢেকে রাখা যেত)। এ জন্য ইমাম মহিলা জানাযার (লাশের) কোমর বরাবর দাঁড়াতেন, যাতে তা মুকতাদীদের দৃষ্টির আড়ালে থাকে।
باب أَيْنَ يَقُومُ الإِمَامُ مِنَ الْمَيِّتِ إِذَا صَلَّى عَلَيْهِ
حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ نَافِعٍ أَبِي غَالِبٍ، قَالَ كُنْتُ فِي سِكَّةِ الْمِرْبَدِ فَمَرَّتْ جَنَازَةٌ مَعَهَا نَاسٌ كَثِيرٌ قَالُوا جَنَازَةُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَيْرٍ فَتَبِعْتُهَا فَإِذَا أَنَا بِرَجُلٍ عَلَيْهِ كِسَاءٌ رَقِيقٌ عَلَى بُرَيْذِينَتِهِ وَعَلَى رَأْسِهِ خِرْقَةٌ تَقِيهِ مِنَ الشَّمْسِ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا الدِّهْقَانُ قَالُوا هَذَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ . فَلَمَّا وُضِعَتِ الْجَنَازَةُ قَامَ أَنَسٌ فَصَلَّى عَلَيْهَا وَأَنَا خَلْفَهُ لاَ يَحُولُ بَيْنِي وَبَيْنَهُ شَىْءٌ فَقَامَ عِنْدَ رَأْسِهِ فَكَبَّرَ أَرْبَعَ تَكْبِيرَاتٍ لَمْ يُطِلْ وَلَمْ يُسْرِعْ ثُمَّ ذَهَبَ يَقْعُدُ فَقَالُوا يَا أَبَا حَمْزَةَ الْمَرْأَةُ الأَنْصَارِيَّةُ فَقَرَّبُوهَا وَعَلَيْهَا نَعْشٌ أَخْضَرُ فَقَامَ عِنْدَ عَجِيزَتِهَا فَصَلَّى عَلَيْهَا نَحْوَ صَلاَتِهِ عَلَى الرَّجُلِ ثُمَّ جَلَسَ فَقَالَ الْعَلاَءُ بْنُ زِيَادٍ يَا أَبَا حَمْزَةَ هَكَذَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي عَلَى الْجَنَازَةِ كَصَلاَتِكَ يُكَبِّرُ عَلَيْهَا أَرْبَعًا وَيَقُومُ عِنْدَ رَأْسِ الرَّجُلِ وَعَجِيزَةِ الْمَرْأَةِ قَالَ نَعَمْ . قَالَ يَا أَبَا حَمْزَةَ غَزَوْتَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ غَزَوْتُ مَعَهُ حُنَيْنًا فَخَرَجَ الْمُشْرِكُونَ فَحَمَلُوا عَلَيْنَا حَتَّى رَأَيْنَا خَيْلَنَا وَرَاءَ ظُهُورِنَا وَفِي الْقَوْمِ رَجُلٌ يَحْمِلُ عَلَيْنَا فَيَدُقُّنَا وَيَحْطِمُنَا فَهَزَمَهُمُ اللَّهُ وَجَعَلَ يُجَاءُ بِهِمْ فَيُبَايِعُونَهُ عَلَى الإِسْلاَمِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ عَلَىَّ نَذْرًا إِنْ جَاءَ اللَّهُ بِالرَّجُلِ الَّذِي كَانَ مُنْذُ الْيَوْمِ يَحْطِمُنَا لأَضْرِبَنَّ عُنُقَهُ . فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجِيءَ بِالرَّجُلِ فَلَمَّا رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ تُبْتُ إِلَى اللَّهِ . فَأَمْسَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يُبَايِعُهُ لِيَفِيَ الآخَرُ بِنَذْرِهِ . قَالَ فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَتَصَدَّى لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِيَأْمُرَهُ بِقَتْلِهِ وَجَعَلَ يَهَابُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَقْتُلَهُ فَلَمَّا رَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ لاَ يَصْنَعُ شَيْئًا بَايَعَهُ فَقَالَ الرَّجُلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ نَذْرِي . فَقَالَ " إِنِّي لَمْ أُمْسِكْ عَنْهُ مُنْذُ الْيَوْمِ إِلاَّ لِتُوفِيَ بِنَذْرِكَ " . فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ أَوْمَضْتَ إِلَىَّ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّهُ لَيْسَ لِنَبِيٍّ أَنْ يُومِضَ " . قَالَ أَبُو غَالِبٍ فَسَأَلْتُ عَنْ صَنِيعِ أَنَسٍ فِي قِيَامِهِ عَلَى الْمَرْأَةِ عِنْدَ عَجِيزَتِهَا فَحَدَّثُونِي أَنَّهُ إِنَّمَا كَانَ لأَنَّهُ لَمْ تَكُنِ النُّعُوشُ فَكَانَ الإِمَامُ يَقُومُ حِيَالَ عَجِيزَتِهَا يَسْتُرُهَا مِنَ الْقَوْمِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَوْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ " . نَسَخَ مِنْ هَذَا الْحَدِيثِ الْوَفَاءَ بِالنَّذْرِ فِي قَتْلِهِ بِقَوْلِهِ إِنِّي قَدْ تُبْتُ .
Nafi' AbuGhalib said:
I was in the Sikkat al-Mirbad. A bier passed and a large number of people were accompanying it.
They said: Bier of Abdullah ibn Umayr. So I followed it. Suddenly I saw a man, who had a thin garment on riding his small mule. He had a piece of cloth on his head to protect himself from the sun. I asked: Who is this important man? People said: This is Anas ibn Malik.
When the bier was placed, Anas stood and led the funeral prayer over him while I was just behind him, and there was no obstruction between me and him. He stood near his head, and uttered four takbirs (Allah is Most Great). He neither lengthened the prayer nor hurried it. He then went to sit down. They said: AbuHamzah, (here is the bier of) an Ansari woman. They brought her near him and there was a green cupola-shaped structure over her bier. He stood opposite her hips and led the funeral prayer over her as he had led it over the man. He then sat down.
Al-Ala' ibn Ziyad asked: AbuHamzah, did the Messenger of Allah (ﷺ) say the funeral prayer over the dead as you have done, uttering four takbirs (Allah is Most Great) over her, and standing opposite the head of a man and the hips of a woman?
He replied: Yes. He asked: AbuHamzah, did you fight with the Messenger of Allah? He replied: Yes. I fought with him in the battle of Hunayn. The polytheists came out and invaded us so severely that we saw our horses behind our backs. Among the people (i.e. the unbelievers) there was a man who was attacking us, and striking and wounding us (with his sword). Allah then defeated them. They were then brought and began to take the oath of allegiance to him for Islam.
A man from among the companions of the Prophet (ﷺ) said: I make a vow to myself that if Allah brings the man who was striking us (with his sword) that day, I shall behead him. The Messenger of Allah (ﷺ) kept silent and the man was brought (as a captive).
When he saw the Messenger of Allah (ﷺ), he said: Messenger of Allah, I have repented to Allah. The Messenger of Allah (ﷺ) stopped (for a while) receiving his oath of allegiance, so that the other man might fulfil his vow. But the man began to wait for the order of the Messenger of Allah (ﷺ) for his murder. He was afraid of the Messenger of Allah (ﷺ) to kill him. When the Messenger of Allah (ﷺ) saw that he did not do anything, he received his oath of allegiance. The man said: Messenger of Allah, what about my vow? He said: I stopped (receiving his oath of allegiance) today so that you might fulfil your vow. He said: Messenger of Allah, why did you not give any signal to me? The Prophet (ﷺ) said: It is not worthy of a Prophet to give a signal.
AbuGhalib said: I asked (the people) about Anas standing opposite the hips of a woman. They told me that this practice was due to the fact that (in the days of the Prophet) there were no cupola-shaped structures over the biers of women. So the imam used to stand opposite the hips of a woman to hide her from the people.
Abu Dawud said: The saying of the Prophet (ﷺ) "I have been commanded to fight against the people until they say: There is no god bu Allah" abrogated this tradition of fulfilling the vow by his remark: "I have repented".