পরিচ্ছেদঃ ৩৭২. ইস্তিখারার বর্ণনা।
১৫৩৮. আব্দুল্লাহ্ ইব্ন মাস্লামা (রহঃ) ..... জাবের ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ইস্তিখারার পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষা দান করতেন, যেমন তিনি আমাদেরকে কুরআন পাঠ শিক্ষা দিতেন। তিনি আমাদের বলতেনঃ যখন তোমাদের কেউ কোনরূপ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সম্মুখীন হবে, তখন এরূপ বলবেঃ
“আল্লাহুম্মা ইন্নী আস্তাখীরুকা বে-ইল্মিকা, ওয়া আস্তাক্দিরুকা বে-কুদ্রাতিকা, ওয়া আস্আলুকা মিন্ ফাদ্লিকাল্ আজীম। ফাইন্নাকা তাক্দিরু ওয়ালা আক্দিরু, ওয়া তালামু, ওয়ালা আলামু ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ূব। আল্লাহুম্মা ফাইন্ কুন্ত তা’লামু ইন্না হাযাল আম্রা (এখানে নির্ধারিত সমস্যাটির বিষয় উল্লেখ করতে হবে) খায়রান্ লী ফী দীনী, ওয়া মা’আশী ওয়া মাআদী, ওয়া আকিবাতি আম্রী ফা-আক্দির্হু লী ওয়া য়াস্সিরহু লী ওয়া বারিক লী ফীহে। আল্লাহুম্মা ওয়া ইন্ কুন্তা তা’লামুহু শার্রান্ লী মিছ্লাল্ আওয়াল ফা-আসরিফ্নী আনহু ওয়া আসরিফহু আন্নী ওয়াকদুর লী আল্-খায়রা হায়ছু কানা ছুম্মা আরদিনী বিহি, আও কালা ফী আজিলি আমরী ওয়া আযেলিহি। (বুখারী, তিরমিযী, নাসাঈ, ইব্ন মাজা)।১
باب فِي الاِسْتِخَارَةِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مُقَاتِلٍ، خَالُ الْقَعْنَبِيِّ وَمُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى - الْمَعْنَى وَاحِدٌ - قَالُوا حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي الْمَوَالِ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُعَلِّمُنَا الاِسْتِخَارَةَ كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ الْقُرْآنِ يَقُولُ لَنَا " إِذَا هَمَّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الْفَرِيضَةِ وَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ - يُسَمِّيهِ بِعَيْنِهِ الَّذِي يُرِيدُ - خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَمَعَادِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي وَبَارِكْ لِي فِيهِ اللَّهُمَّ وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُهُ شَرًّا لِي مِثْلَ الأَوَّلِ فَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ رَضِّنِي بِهِ " . أَوْ قَالَ " فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ " . قَالَ ابْنُ مَسْلَمَةَ وَابْنُ عِيسَى عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ عَنْ جَابِرٍ .
“রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমাদের প্রতিটি বষয়ে ইসতিখারা শিক্ষা দিতেন ... তোমাদের মধ্যে কেউ কোন সমস্যায় পতিত হলে সে যেন দুই রাকাত সালাত আদায় করে এবং সালাত সমাপ্ত করে নিম্নোক্ত দু’আ করেঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার জ্ঞানের ভিত্তিতে তোমার নিকট হতে কল্যাণ কামনা করি এবং তোমার শক্তি চাই, তোমার মহান অনুগ্রহ প্রত্যাশা করি। সকল শক্তি তোমার, আমার কোন শক্তি নাই। তুমিই সবকিছু জান, আমি কিছুই জানি না। তুমি সকল আদৃশ্য বিষয় ভালভাবে জ্ঞাত। হে আল্লাহ! আমার দীন, জীবন বিধান এবং পরিণাম হিসাবে যদি তুমি এই কাজ আমার জন্য কল্যাণকর মনে কর তবে আমাকে তার শক্তি দাও। তুমি যদি মনে কর যে, এই কাজ আমার ধর্ম, আমার জীবন ও পরিণাম হিসাবে অকল্যাণকর – তবে আমার থেকে তা দূরে রাখ এবং তা থেকে আমাকে দূরে রাখ। আমার জন্য যেখানে কল্যাণ নিহিত তার আমাকে শক্তি দাও এবং তার মাধ্যমে আমাকে সন্তুষ্ট কর।“
অনুরূপভাবে বুখারী শরীফের কিতাবুত তাওহীদ, ১০ম অনুচ্ছেদে এই দু’আ বর্ধিত আকারে বর্ণিত হয়েছে। ইব্ন মাজা শরীফের “আল-ইসতিখারা” অনুচ্ছেদে সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণিত হয়েছে, পৃঃ৪৪০ (সুনান, খ. ১, মুহাম্মাদ ফু’আদ আবদুল বাকী কর্তৃক বিন্যস্ত)। এই দু’আ প্রায় অনুরূপ আকারে শীআ ইমামিয়্যা মাযহাবেও প্রচলিত আছে (দ্র. আবু জাফার আল কুম্মী, মান লা ইয়াহ্দুরুহুল ফাকীহ খ. ৩৫৫ দারুল-কুতুব আল-ইসলামিয়্যা, নাজাফ ১৩৭৭ হি.)। শরীআতের নিয়ম অনুযায়ী এই ইসতিখারায় দুই রাকাত সালাতের পর আল্লাহ্ তাআলার নিকট কল্যাণ কামনা করে দু’আ করা হয়।
বিভিন্ন হাদীছ হতে এটি স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, মুসলিমগণ প্রাচীন কাল হতেই ইসতিখারার উপর আমল করে আসছিলেন। যখনই ইসতিখারা করা হোক না কেন, তা কেবল মাত্র একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের জন্য করতে হয়। কালের বিবর্তনে ইসতিখারার মধ্যে এমন কিছু নিয়ম প্রবিষ্ট হয়েছে, শরীআতের দৃষ্টিতে যার কোন সমর্থন পাওয়া যায় না। যেমন ইসতিখারার জন্য মসজিদে যাওয়া আবশ্যক ইত্যাদি। (স. স.)