পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৪৯. বিয়ে ও ওয়ালীমায় দফ বাজানো।
৫১৪৭. রুবাই বিনত মুআব্বিয ইবনু আফরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার বাসর রাতের পরের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন এবং আমার বিছানার ওপর বসলেন, যেমন বর্তমানে তুমি আমার কাছে বসে আছ। সে সময় আমাদের ছোট মেয়েরা দফ বাজাচ্ছিল এবং বদরের যুদ্ধে শাহাদাত প্রাপ্ত আমার বাপ-চাচাদের শোকগাঁথা গাচ্ছিল।[1] তাদের একজন বলে বসল, আমাদের মধ্যে এক নবী আছেন, যিনি আগামী দিনের কথা জানেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ কথা বাদ দাও, আগে যা বলছিলে, তাই বল। [৪০০১](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭০)
بَاب ضَرْبِ الدُّفِّ فِي النِّكَاحِ وَالْوَلِيمَةِ
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ ذَكْوَانَ قَالَ قَالَتْ الرُّبَيِّعُ بِنْتُ مُعَوِّذِ بْنِ عَفْرَاءَ جَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَدَخَلَ حِينَ بُنِيَ عَلَيَّ فَجَلَسَ عَلٰى فِرَاشِي كَمَجْلِسِكَ مِنِّي فَجَعَلَتْ جُوَيْرِيَاتٌ لَنَا يَضْرِبْنَ بِالدُّفِّ وَيَنْدُبْنَ مَنْ قُتِلَ مِنْ آبَائِي يَوْمَ بَدْرٍ إِذْ قَالَتْ إِحْدَاهُنَّ وَفِينَا نَبِيٌّ يَعْلَمُ مَا فِي غَدٍ فَقَالَ دَعِي هٰذِه„ وَقُولِي بِالَّذِي كُنْتِ تَقُولِينَ.
উল্লেখ্য হাদীসের মধ্যে রসূল নির্দেশ প্রদান করেছেনঃ (أَعْلِنُوا النِّكَاحَ) ‘‘তোমার বিয়ের বিষয়টি প্রচার কর।’’ হাদীসটিকে শাইখ আলবানী ‘‘সহীহ্ জামে‘ইস সাগীর’’ গ্রন্থে (১০৭২) হাসান আখ্যা দিয়েছেন]। বিয়ে উপলক্ষে দফ বাজানো জায়েয মর্মে সহীহ্ হাদীস বর্ণিত হয়েছে, দেখুন ‘‘মিশকাত’’ তাহকীক আলবানী (৩১৪০)। তবে বিয়ের আক্দ মসজিদে হতে হবে এ মর্মে বর্ণিত হাদীসটি দুর্বল, দেখুন ‘‘য‘ঈফ জামে‘ইস সাগীর’’ (৯৬৬, ৯৬৭), ‘‘য‘ঈফ তিরমিযী’’ (১০৮৯) ও ‘‘ইরওয়াউল গালীল’’ (১৯৯৩)।
ওয়ালীমার যিয়াফাতঃ বিয়ে অনুষ্ঠান প্রচারের দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে ওয়ালীমার যিয়াফাত করা। ওয়ালিমাহ করার নির্দেশ ও নিয়ম স্বামীর জন্য। বিবাহোত্তর এটি করতে হয়। কিন্তু আমাদের সমাজে মেয়ে পক্ষকে খাবার দাবারের জন্য বিরাট অংকের টাকা খরচ করানোর নিয়ম নীতির প্রচলন রয়েছে যা সুন্নাতী বিবাহের পরিপন্থী। তবে মেয়ে পক্ষ যদি স্বেচ্ছায় ওয়ালিমার ব্যবস্থা করে তবে তা জায়িয।
নিজেদের ছেলে বা মেয়ের বিয়েতে আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের একত্রিত করা একান্তই বাঞ্ছনীয়। ইমাম তাবারানী আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে রসূলﷺ এর নিম্নোক্ত ঘোষণা বর্ণনা করেছেন- ওয়ালীমা করা হচ্ছে একটি অধিকার, একান্তই কর্তব্য। ইসলামের স্থায়ী নীতি। অতএব যাকে এ যিয়াফাতে শরীক হওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়া হবে, সে যদি তাতে উপস্থিত না হয়, তাহলে সে নাফারমানি করল। রসূল ﷺ আব্দুর রহমান বিন আওফকে (রাঃ) ওয়ালীমা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিজে যয়নব বিনতে জাহাস ও সাফিয়া (রাযি.)কে বিয়ে করে ওয়ালীমার ব্যবস্থা করেছেন। আলী (রাযি.) যখন ফাতিমা (রাযি.) এর সাথে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তখন নাবী ﷺ বলেছিলেন- এ বিয়েতে ওয়ালীমা অবশ্যই করতে হবে- মুসনাদে আহমাদ। ওয়ালীমার যিয়াফাত করা স্বামীর সামর্থ্য অনুযায়ী হওয়া উচিত এবং তা করা উচিত বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রচারের জন্য। রসূল ﷺ বলেছেন- সেই ওয়ালীমার খানা হচ্ছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট যেখানে কেবল ধনী লোকদেরই দাওয়াত দেয়া হবে আর গরীব লোকদের বাদ দেয়া হবে- বুখারী, মুসলিম। বিয়ের উৎসবাদিতে স্ত্রীলোক ও শিশুদের উপস্থিত হওয়া বা করা খুবই ভাল ও পছন্দনীয়। নাবী ﷺ যয়নাব (রাযি.) এর সাথে মিলন রাত যাপনের পর সকালের দিকে লোকেদের দাওয়াত দিয়েছিলেন।
তবে বর্তমান যুগে বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে যে বেপর্দা আর বেহায়াপনা লক্ষ্য করা যায় তাতে যদি মেয়েদের ওয়ালীমা খাওয়ার স্থান পৃথক করে মহিলা পরিবেশক দ্বারা খানা পরিবেশনের ব্যবস্থা করা না হয় তাহলে এরূপ বিয়েতে পর্দা করা ফরয এরূপ কোন মুসলিম মেয়ে বা মহিলার উপস্থিত হওয়া উচিত হবে না। এছাড়া বিয়ের অনুষ্ঠানে অনৈসলামিক কোন কিছু করা হলে সে বিয়ের দাওয়াত কোন মুসলিম নর ও নারীর গ্রহণ করাই জায়েয নয়। সামাজিকতার দোহাই দিয়ে বর্তমানে বহু কিছু করা হচ্ছে। অথচ ইসলামী বিধান ও নীতি মেনে চলাই হচ্ছে মুসলিম সমাজের অপরিহার্য কর্তব্য।
Narrated Ar-Rabi`:
(the daughter of Muawwidh bin Afra) After the consummation of my marriage, the Prophet (ﷺ) came and sat on my bed as far from me as you are sitting now, and our little girls started beating the tambourines and reciting elegiac verses mourning my father who had been killed in the battle of Badr. One of them said, "Among us is a Prophet who knows what will happen tomorrow." On that the Prophet said, "Leave this (saying) and keep on saying the verses which you had been saying before."