পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১৫. দরিদ্র ব্যক্তির বিয়ে করা বৈধ। আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেনঃ ‘‘যদি তারা দরিদ্র হয়, আল্লাহ্ তার মেহেরবানীতে সম্পদশালী করে দেবেন।’’সূরা নূর ২৪/৩২)
৫০৮৭. সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার জীবনকে আপনার হাতে সমর্পণ করতে এসেছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালেন এবং সতর্ক দৃষ্টিতে তার আপাদমস্তক লক্ষ্য করলেন। তারপর তিনি মাথা নিচু করলেন। যখন মহিলাটি দেখল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সম্পর্কে কোন ফয়সালা দিচ্ছেন না, তখন সে বসে পড়ল। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের মধ্যে একজন দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আপনার বিয়ের প্রয়োজন না থাকে, তবে আমার সঙ্গে এর বিয়ে দিয়ে দিন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কিছু আছে কি? সে উত্তর করলো- না, আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার কাছে কিছুই নেই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে গিয়ে দেখ, কিছু পাও কিনা। এরপর লোকটি চলে গেল। ফিরে এসে বলল, আল্লাহর কসম! আমি কিছুই পাইনি। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবার দেখ, লোহার একটি আংটিও যদি পাও।
তারপর লোকটি আবার ফিরে গেল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তাও পেলাম না, কিন্তু এই আমার লুঙ্গি (শুধু এটাই আছে)। (রাবী) সাহল (রাঃ) বলেন, তার কাছে কোন চাদর ছিল না। লোকটি এর অর্ধেক তাকে দিতে চাইল। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে তোমার লুঙ্গি দিয়ে কী করবে? তুমি যদি পরিধান কর, তাহলে তার কোন কাজে আসবে না, আর সে যদি পরিধান করে, তবে তোমার কোন কাজে আসবে না। তারপর বেশ কিছুক্ষণ লোকটি নীরবে বসে থাকল। তারপর উঠে দাঁড়াল।
সে যেতে উদ্যত হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে আনলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কী পরিমাণ কুরআন মাজীদ মুখস্থ আছে? সে বলল, আমার অমুক অমুক সূরা মুখস্থ আছে এবং সে গণনা করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এগুলো কি তোমার মুখস্থ আছে। সে বলল, হাঁ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে পরিমাণ কুরআন তোমার মুখস্থ আছে তার বিনিময়ে তোমার কাছে এ মহিলাটিকে তোমার অধীনস্থ করে (বিয়ে) দিলাম।[1][২৩১০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৬)
بَابُ تَزْوِيجِ الْمُعْسِرِ لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {إِنْ يَكُونُوا فُقَرَاءَ يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ قَالَ جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ جِئْتُ أَهَبُ لَكَ نَفْسِي قَالَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلمفَصَعَّدَ النَّظَرَ فِيهَا وَصَوَّبَه“ ثُمَّ طَأْطَأَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأْسَه“ فَلَمَّا رَأَتَ الْمَرْأَةُ أَنَّه“ لَمْ يَقْضِ فِيهَا شَيْئًا جَلَسَتْ فَقَامَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِه„ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنْ لَمْ يَكُنْ لَكَ بِهَا حَاجَةٌ فَزَوِّجْنِيهَا فَقَالَ وَهَلْ عِنْدَكَ مِنْ شَيْءٍ قَالَ لاَ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَالَ اذْهَبْ إِلٰى أَهْلِكَ فَانْظُرْ هَلْ تَجِدُ شَيْئًا فَذَهَبَ ثُمَّ رَجَعَ فَقَالَ لاَ وَاللهِ مَا وَجَدْتُ شَيْئًا فَقَالَ رَسُوْلُ الله صلى الله عليه وسلم انْظُرْ وَلَوْ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ فَذَهَبَ ثُمَّ رَجَعَ فَقَالَ لاَ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَلاَ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ وَلٰكِنْ هٰذَا إِزَارِي قَالَ سَهْلٌ مَا لَه“ رِدَاءٌ فَلَهَا نِصْفُه“ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا تَصْنَعُ بِإِزَارِكَ إِنْ لَبِسْتَه“ لَمْ يَكُنْ عَلَيْهَا مِنْه“ شَيْءٌ وَإِنْ لَبِسَتْه“ لَمْ يَكُنْ عَلَيْكَ مِنْه“ شَيْءٌ فَجَلَسَ الرَّجُلُ حَتّٰى إِذَا طَالَ مَجْلِسُه“ قَامَ فَرَآه“ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مُوْلِّيًا فَأَمَرَ بِه„ فَدُعِيَ فَلَمَّا جَاءَ قَالَ مَاذَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ قَالَ مَعِي سُوْرَةُ كَذَا وَسُوْرَةُ كَذَا عَدَّدَهَا فَقَالَ تَقْرَؤُهُنَّ عَنْ ظَهْرِ قَلْبِكَ قَالَ نَعَمْ قَالَ اذْهَبْ فَقَدْ مَلَّكْتُكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ.
{إِنْيَكُونُوافُقَرَاءَيُغْنِهِمُاللهُمِنْفَضْلِه„وَاللهُوَاسِعٌعَلِيمٌ} (النور: منالآية32)
‘‘যদি তারা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহে তাদের ধনী করে দেবেন। বস্ত্ততঃ আল্লাহ প্রশস্ততাসম্পন্ন সর্বজ্ঞ’’- (সূরা আন্-নূর ২৪ঃ ৩২)। অর্থাৎ আল্লাহ বললেন- বিয়ে করলেই মানুষ আর্থিক দায়িত্বভারে পর্যুদস্ত হবে- এমন কোন কথা নেই, বরং উল্টোটারই সম্ভাবনা বেশি। আর তা হচ্ছে অধিক সন্তান হলে অনেক সময় আল্লাহ তা‘আলা তার ধনমাল বাড়িয়ে দেন। আবূ বাকর (রাযি.) বলেছেন- তোমরা বিয়ের ব্যাপারে আল্লাহর আদেশ পালনে তাঁর আনুগত্য করো। তাহলে ধন-সম্পত্তি দানের যে ওয়া‘দা তিনি করেছেন তা তোমাদের জন্য পূরণ করবেন- (ইবনে কাসীর)। আলোচ্য হাদীসের ঘটনার উল্লেখ করে ইবনে কাসীর লিখেছেন- আল্লাহ তা‘আলার অপরিসীম দয়া-অনুগ্রহ সর্বজনবিদিত। তিনি তাঁকে (আনাস বিন মালিককে) এত পরিমাণ রিয্ক্ব দান করলেন যে, তা স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্য যথেষ্ট হয়ে গেল।
অতএব কোন মুসলিম যুবকেরই আর্থিক অসচ্ছলতার দরুণ অবিবাহিত কুমার জীবন যাপনে প্রস্তত হওয়া উচিত নয়। বরং আল্লাহর রিয্ক্বদাতা হওয়া- আল্লাহর অফুরন্ত দয়া ও দানের উপর অবিচল বিশ্বাস থাকা উচিত। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন-
{وَمَامِنْدَابَّةٍفِيالأرْضِإِلاَّعَلَىاللهِرِزْقُهَا} (هود: منالآية6)
‘‘যমীনের উপর বিচরণশীল সব প্রাণীরই রিয্ক্বের ভার একান্তভাবে আল্লাহর উপর’’ (সূরা হূদ ১১ঃ ৬)।
{وَيَرْزُقْهُمِنْحَيْثُلايَحْتَسِبُوَمَنْيَتَوَكَّلْعَلَىاللهِفَهُوَحَسْبُهُ} (الطلاق: 3)
‘‘আল্লাহ তাকে রিয্ক্ব দান করবেন এমন সব উপায়ে যা সে ধারণা পর্যন্ত করতে পারেনি। আর বস্ত্ততই যে লোক আল্লাহর উপর ভরসা করে কাজ করবে, সে লোকের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হবেন’’ (সূরা আত্-তালাক ৬৫ঃ ৩)
{وَإِنْخِفْتُمْعَيْلَةًفَسَوْفَيُغْنِيكُمُاللهُمِنْفَضْلِهৃإِنْشَاূءَإِنَّاللهَعَلِيمٌحَكِيمٌ} (التوبة
‘‘তোমরা যদি দারিদ্রের ভয় কর তাহলে জেনে রেখো, আল্লাহ অবশ্যই তাঁর অনুগ্রহে তোমাদের ধনী করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ বড়ই জ্ঞানী ও সুবিবেচক।’’ (সূরা আত্-তাওবাহ ৯ঃ ২৮)
বস্ত্তত কোন গরীব লোক যদি বিয়ে করে, তবে কামাই রোজগারে তার বিপুল উৎসাহ ও উদ্যম সৃষ্টি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর এ ব্যাপারে তার স্ত্রী তার উপর বোঝা না হয়ে বরং দরদী সাহায্যকারিণী হয়। আর সন্তান হলে অর্থোপার্জনের কাজে সাহায্যকারী হতে পারে। অনেক সময় স্ত্রীর ধনী নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে যথেষ্ট আর্থিক সাহায্য লাভও হতে পারে। সদিচ্ছার উপর ফলাফল নির্ভর করে। আল্লাহ তা‘আলার কথার প্রতি যার বিশ্বাস ও আস্থার অভাব থাকে সে ছাড়া অপর কেউ দুর্ভোগে পড়তে পারে না। দৃঢ় বিশ্বাসই তাকে সফলতার পথে আল্লাহর সাহায্য লাভের উপযুক্ত করে দেবে।
Narrated Sahl bin Sa`d As-Sa`idi:
A woman came to Allah's Messenger (ﷺ) and said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! I have come to give you myself in marriage (without Mahr)." Allah's Messenger (ﷺ) looked at her. He looked at her carefully and fixed his glance on her and then lowered his head. When the lady saw that he did not say anything, she sat down. A man from his companions got up and said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! If you are not in need of her, then marry her to me." The Prophet (ﷺ) said, "Have you got anything to offer?" The man said, "No, by Allah, O Allah's Messenger (ﷺ)!" The Prophet (ﷺ) said (to him), "Go to your family and see if you have something." The man went and returned, saying, "No, by Allah, I have not found anything." Allah's Apostle said, "(Go again) and look for something, even if it is an iron ring." He went again and returned, saying, "No, by Allah, O Allah's Messenger (ﷺ)! I could not find even an iron ring, but this is my Izar (waist sheet)." He had no rida. He added, "I give half of it to her." Allah's Messenger (ﷺ) said, "What will she do with your Izar? If you wear it, she will be naked, and if she wears it, you will be naked." So that man sat down for a long while and then got up (to depart). When Allah's Messenger (ﷺ) saw him going, he ordered that he be called back. When he came, the Prophet (ﷺ) said, "How much of the Qur'an do you know?" He said, "I know such Sura and such Sura," counting them. The Prophet (ﷺ) said, "Do you know them by heart?" He replied, "Yes." The Prophet (ﷺ) said, "Go, I marry her to you for that much of the Qur'an which you have."