৪০০৩

পরিচ্ছেদঃ ৬৪/১২. পরিচ্ছেদ নাই।

৪০০৩. ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বাদর দিনের গানীমাতের মাল থেকে আমার ভাগে আমি একটি উট পেয়েছিলাম। ‘ফায়’ থেকে প্রাপ্ত এক পঞ্চমাংশ থেকেও সেদিন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে একটি উট দান করেন। আমি যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা ফাতিমার সঙ্গে বাসর রাত যাপন করার ইচ্ছে করলাম এবং বানু কায়নুকা গোত্রের একজন ইয়াহূদী স্বর্ণকারকে ঠিক করলাম যেন সে আমার সঙ্গে যায়। আমরা ইয্খির ঘাস সংগ্রহ করে নিয়ে আসব। অতঃপর সেই ঘাস স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রি করে তা আমি আমার বিয়ের ওয়ালিমায় খরচ করার ইচ্ছে করেছিলাম। আমি আমার উট দু’টোর জন্য গদি, বস্তা এবং দড়ির ব্যবস্থা করছিলাম আর উট দু’টো এক আনসারীর ঘরের পাশে বসানো ছিল। আমার যা কিছু জোগাড় করার তা জোগাড় করে এনে দেখলাম উট দু’টির চূড়া কেটে দেয়া হয়েছে এবং সে দু’টির বুক ফেড়ে কলিজা বের করে নেয়া হয়েছে। এ দৃশ্য দেখে আমি আমার অশ্রু সংবরণ করতে পারলাম না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কাজ কে করেছে? তারা বললেন, আবদুল মুত্তালিবের পুত্র হামযা এ কাজ করেছেন। এখন তিনি এ ঘরে আনসারদের কিছু মদ্যপায়ীদের সঙ্গে মদপান করছেন। সেখানে আছে একদল গায়িকা ও কতিপয় সঙ্গী সাথী। গায়িকা ও তার সঙ্গীগণ গানের মধ্যে বলেছিল, ‘‘হে হামযা! মোটা উট দু’টির প্রতি ঝাঁপিয়ে পড়’’।

এ কথা শুনে হামযাহ দৌড়িয়ে গিয়ে তলোয়ার হাতে নিল এবং উট দু’টির চূড়া দু’টো কেটে নিল আর তাদের পেট ফেড়ে কলিজা বের করে নিয়ে আসল। ‘আলী (রাঃ) বলেন, তখন আমি পথ চলতে চলতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট চলে গেলাম। তখন তাঁর নিকট যায়দ ইবনু হারিসাহ (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। আমি যে বিপদের সম্মুখীন হয়েছি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বুঝে ফেললেন। তিনি বললেন, তোমার কী হয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আজকের মত কষ্টদায়ক ঘটনা আমি কখনো দেখিনি। হামযা আমার উট দু’টোর উপর খুব জুলুম করেছেন, তিনি উট দু’টোর চূড়া কেটে ফেলেছেন এবং বুক ফেড়ে দিয়েছেন। এখন তিনি একটি ঘরে একদল মদ পানকারীর সঙ্গে আছেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর চাদরখানা চেয়ে নিলেন এবং তা গায়ে দিয়ে হেঁটে চললেন। (‘আলী বলেন) এরপর আমি এবং যায়দ ইবনু হারিসাহ (রাঃ) তাঁর পেছনে চললাম। (হাঁটতে হাঁটতে) তিনি যে ঘরে হামযা অবস্থান করছিলেন সে ঘরের কাছে পৌঁছে তার নিকট অনুমতি চাইলেন। তাঁকে অনুমতি দেয়া হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হামযাকে তার কর্মের জন্য ভৎর্সনা করতে শুরু করলেন। হামযাহ তখন নেশাগ্রস্ত।[1] চোখ দু’টো তার লাল। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে তাকালেন এবং দৃষ্টি উপর দিকে উঠিয়ে তারপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাঁটুর দিকে তাকালেন। এরপর দৃষ্টি আরো একটু উপর দিকে উঠিয়ে তিনি তাঁর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম চেহারার প্রতি তাকালেন। এরপর হামযা বললেন, তোমরা তো আমার পিতার দাস। (শুনে) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বুঝলেন যে, তিনি এখন নেশাগ্রস্ত। তাই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেছনের দিকে হটে বেরিয়ে পড়লেন, আমরাও তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম। [২০৮৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৭১১)

بَاب

عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُوْنُسُ ح و حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ عَلَيْهِمْ السَّلَام أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيًّا قَالَ كَانَتْ لِيْ شَارِفٌ مِنْ نَصِيْبِيْ مِنَ الْمَغْنَمِ يَوْمَ بَدْرٍ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَعْطَانِيْ مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَيْهِ مِنَ الْخُمُسِ يَوْمَئِذٍ فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَبْتَنِيَ بِفَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام بِنْتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَاعَدْتُ رَجُلًا صَوَّاغًا فِيْ بَنِيْ قَيْنُقَاعَ أَنْ يَرْتَحِلَ مَعِيْ فَنَأْتِيَ بِإِذْخِرٍ فَأَرَدْتُ أَنْ أَبِيْعَهُ مِنْ الصَّوَّاغِيْنَ فَنَسْتَعِيْنَ بِهِ فِيْ وَلِيْمَةِ عُرْسِيْ فَبَيْنَا أَنَا أَجْمَعُ لِشَارِفَيَّ مِنَ الْأَقْتَابِ وَالْغَرَائِرِ وَالْحِبَالِ وَشَارِفَايَ مُنَاخَانِ إِلَى جَنْبِ حُجْرَةِ رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ حَتَّى جَمَعْتُ مَا جَمَعْتُ فَإِذَا أَنَا بِشَارِفَيَّ قَدْ أُجِبَّتْ أَسْنِمَتُهَا وَبُقِرَتْ خَوَاصِرُهُمَا وَأُخِذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا فَلَمْ أَمْلِكْ عَيْنَيَّ حِيْنَ رَأَيْتُ الْمَنْظَرَ قُلْتُ مَنْ فَعَلَ هَذَا قَالُوْا فَعَلَهُ حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَهُوَ فِيْ هَذَا الْبَيْتِ فِيْ شَرْبٍ مِنَ الْأَنْصَارِ عِنْدَهُ قَيْنَةٌ وَأَصْحَابُهُ فَقَالَتْ فِيْ غِنَائِهَا.
أَلَا يَا حَمْزُ لِلشُّرُفِ النِّوَاءِ فَوَثَبَ حَمْزَةُ إِلَى السَّيْفِ فَأَجَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا وَأَخَذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا قَالَ عَلِيٌّ فَانْطَلَقْتُ حَتَّى أَدْخُلَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَهُ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ وَعَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الَّذِيْ لَقِيْتُ فَقَالَ مَا لَكَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ عَدَا حَمْزَةُ عَلَى نَاقَتَيَّ فَأَجَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا وَهَا هُوَ ذَا فِيْ بَيْتٍ مَعَهُ شَرْبٌ فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِرِدَائِهِ فَارْتَدَى ثُمَّ انْطَلَقَ يَمْشِيْ وَاتَّبَعْتُهُ أَنَا وَزَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ حَتَّى جَاءَ الْبَيْتَ الَّذِيْ فِيْهِ حَمْزَةُ فَاسْتَأْذَنَ عَلَيْهِ فَأُذِنَ لَهُ فَطَفِقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَلُوْمُ حَمْزَةَ فِيْمَا فَعَلَ فَإِذَا حَمْزَةُ ثَمِلٌ مُحْمَرَّةٌ عَيْنَاهُ فَنَظَرَ حَمْزَةُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى رُكْبَتِهِ ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى وَجْهِهِ ثُمَّ قَالَ حَمْزَةُ وَهَلْ أَنْتُمْ إِلَّا عَبِيْدٌ لِأَبِيْ فَعَرَفَ النَّبِيُّ أَنَّهُ ثَمِلٌ فَنَكَصَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى عَقِبَيْهِ الْقَهْقَرَى فَخَرَجَ وَخَرَجْنَا مَعَهُ.

عبدان اخبرنا عبد الله اخبرنا يونس ح و حدثنا احمد بن صالح حدثنا عنبسة حدثنا يونس عن الزهري اخبرنا علي بن حسين ان حسين بن علي عليهم السلام اخبره ان عليا قال كانت لي شارف من نصيبي من المغنم يوم بدر وكان النبي صلى الله عليه وسلم اعطاني مما افاء الله عليه من الخمس يومىذ فلما اردت ان ابتني بفاطمة عليها السلام بنت النبي صلى الله عليه وسلم واعدت رجلا صواغا في بني قينقاع ان يرتحل معي فناتي باذخر فاردت ان ابيعه من الصواغين فنستعين به في وليمة عرسي فبينا انا اجمع لشارفي من الاقتاب والغراىر والحبال وشارفاي مناخان الى جنب حجرة رجل من الانصار حتى جمعت ما جمعت فاذا انا بشارفي قد اجبت اسنمتها وبقرت خواصرهما واخذ من اكبادهما فلم املك عيني حين رايت المنظر قلت من فعل هذا قالوا فعله حمزة بن عبد المطلب وهو في هذا البيت في شرب من الانصار عنده قينة واصحابه فقالت في غناىها. الا يا حمز للشرف النواء فوثب حمزة الى السيف فاجب اسنمتهما وبقر خواصرهما واخذ من اكبادهما قال علي فانطلقت حتى ادخل على النبي صلى الله عليه وسلم وعنده زيد بن حارثة وعرف النبي صلى الله عليه وسلم الذي لقيت فقال ما لك قلت يا رسول الله ما رايت كاليوم عدا حمزة على ناقتي فاجب اسنمتهما وبقر خواصرهما وها هو ذا في بيت معه شرب فدعا النبي صلى الله عليه وسلم برداىه فارتدى ثم انطلق يمشي واتبعته انا وزيد بن حارثة حتى جاء البيت الذي فيه حمزة فاستاذن عليه فاذن له فطفق النبي صلى الله عليه وسلم يلوم حمزة فيما فعل فاذا حمزة ثمل محمرة عيناه فنظر حمزة الى النبي صلى الله عليه وسلم ثم صعد النظر فنظر الى ركبته ثم صعد النظر فنظر الى وجهه ثم قال حمزة وهل انتم الا عبيد لابي فعرف النبي انه ثمل فنكص رسول الله صلى الله عليه وسلم على عقبيه القهقرى فخرج وخرجنا معه.


Narrated `Ali:

I had a she-camel which I got in my share from the booty of the battle of Badr, and the Prophet (ﷺ) had given me another she camel from the Khumus which Allah had bestowed on him that day. And when I intended to celebrate my marriage to Fatima, the daughter of the Prophet, I made an arrangement with a goldsmith from Bani Qainuqa 'that he should go with me to bring Idhkhir (i.e. a kind of grass used by gold-smiths) which I intended to sell to gold-smiths in order to spend its price on the marriage banquet. While I was collecting ropes and sacks of pack saddles for my two she-camels which were kneeling down beside an Ansari's dwelling and after collecting what I needed, I suddenly found that the humps of the two she-camels had been cut off and their flanks had been cut open and portions of their livers had been taken out. On seeing that, I could not help weeping. I asked, "Who has done that?" They (i.e. the people) said, "Hamza bin `Abdul Muttalib has done it. He is present in this house with some Ansari drinkers, a girl singer, and his friends. The singer said in her song, "O Hamza, get at the fat she-camels!" On hearing this, Hamza rushed to his sword and cut of the camels' humps and cut their flanks open and took out portions from their livers." Then I came to the Prophet, with whom Zaid bin Haritha was present. The Prophet (ﷺ) noticed my state and asked, "What is the matter?" I said, "O Allah's Messenger (ﷺ), I have never experienced such a day as today! Hamza attacked my two she-camels, cut off their humps and cut their flanks open, and he is still present in a house along some drinkers." The Prophet (ﷺ) asked for his cloak, put it on, and proceeded, followed by Zaid bin Haritha and myself, till he reached the house where Hamza was. He asked the permission to enter, and he was permitted. The Prophet (ﷺ) started blaming Hamza for what he had done. Hamza was drunk and his eyes were red. He looked at the Prophet (ﷺ) then raised his eyes to look at his knees and raised his eves more to look at his face and then said, "You are not but my father's slaves." When the Prophet (ﷺ) understood that Hamza was drunk, he retreated, walking backwards went out and we left with him.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৬৪/ মাগাযী [যুদ্ধ] (كتاب المغازى)