পরিচ্ছেদঃ ২৪/৭৭. আযাদ ও গোলামের পক্ষ হতে সদাকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে।
وَقَالَ الزُّهْرِيُّ فِي الْمَمْلُوكِينَ لِلتِّجَارَةِ يُزَكَّى فِي التِّجَارَةِ وَيُزَكَّى فِي الْفِطْرِ
যুহরী (রহ.) বলেন, (বাণিজ্য পণ্য হিসেবে) ব্যবসায়ের জন্য ক্রয় করা গোলামের যাকাত [1] দিতে হবে এবং তাদের সদাকাতুল ফিত্রও দিতে হবে।
১৫১১. ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক পুরুষ, মহিলা, আযাদ ও গোলামের পক্ষ হতে সদাকাতুল ফিতর অথবা (বলেছেন) সদাকা-ই রমাযান হিসেবে এক সা‘ খেজুর বা এক এক সা‘ যব আদায় করা ফরজ করেছেন। অতঃপর লোকেরা অর্থ সা‘ গমকে এক সা‘ খেজুরের সমমান দিতে লাগল। (রাবী নাফি‘ বলেন) ইবনু ‘উমার (রাঃ) খেজুর (সদাকাতুল ফিতর হিসেবে) দিতেন। এক সময় মাদ্বীনায় খেজুর দুর্লভ হলে যব দিয়ে তা আদায় করেন। ইবনু ‘উমার (রাঃ) প্রাপ্ত বয়স্ক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক সকলের পক্ষ হতেই সদাকাতুল ফিত্র আদায় করতেন, এমনকি আমার সন্তানদের পক্ষ হতেও সাদাকার দ্রব্য গ্রহীতাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং ঈদের এক-দু’ দিন পূর্বেই আদায় করে দিতেন। (১৫০৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪২০)
بَاب صَدَقَةِ الْفِطْرِ عَلَى الْحُرِّ وَالْمَمْلُوكِ
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ فَرَضَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَدَقَةَ الْفِطْرِ أَوْ قَالَ رَمَضَانَ عَلَى الذَّكَرِ وَالأُنْثَى وَالْحُرِّ وَالْمَمْلُوكِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ فَعَدَلَ النَّاسُ بِهِ نِصْفَ صَاعٍ مِنْ بُرٍّ فَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يُعْطِي التَّمْرَ فَأَعْوَزَ أَهْلُ الْمَدِينَةِ مِنْ التَّمْرِ فَأَعْطَى شَعِيرًا فَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يُعْطِي عَنْ الصَّغِيرِ وَالْكَبِيرِ حَتَّى إِنْ كَانَ لِيُعْطِي عَنْ بَنِيَّ وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يُعْطِيهَا الَّذِينَ يَقْبَلُونَهَا وَكَانُوا يُعْطُونَ قَبْلَ الْفِطْرِ بِيَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ
(১) সোনা, রূপা ও নগদ টাকার যাকাতঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
{وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ} (التوبة: من الآية৩৪)
যারা সোনা, রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে না, তাদের কঠিন আযাবের সংবাদ দাও। (সূরাঃ আত্-তাওবাহ ৩৪ আয়াত)
নগদ টাকা, সোনা, রূপা ইত্যাদির যাকাতঃ (ক) সোনাঃ ২০ দিনার বা ৮৫ গ্রাম ওজনের অর্থাৎ সাড়ে সাত তোলা সোনা হলে তাতে ৪০ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ শতকরা আড়াই ভাগ। (খ) রূপাঃ এটা যখন ৫৯৫ গ্রাম অর্থাৎ সাড়ে বায়ান্ন তোলা হবে তখন শতকরা আড়াই ভাগ যাকাত দিতে হবে-(বুখারী, মুসলিম)। (গ) নগদ টাকাঃ এটা সোনা বা রূপা যে কোন একটির নিসাব পরিমাণ নগদ টাকা থাকলেই যাকাত দিতে হবে শতকরা আড়াই ভাগ। (বুখারী)
উলামাদের ফাতাওয়া অনুযায়ী টাকার ক্ষেত্রে স্বর্ণের নিসাবের অপেক্ষা না করে গরীব-মিসকীনের হক্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে রূপার নিসাব অনুযায়ী যাকাত প্রদান করাই উত্তম।
(২) যমীনের ভিতর হতে যে সমস্ত ফল ও ফসল বের হয় তার যাকাত- আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
{ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُوا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ } (الأنعام: من الآية১৪১)
আর তোমরা ফসলের হকসমূহ আদায় কর যেদিন ফসল কর্তন কর সেদিনই- (সূরা আন-আম ১৪১)। রসূল (সঃ) বলেছেন, যে ফসল বৃষ্টির পানিতে ও ভূ-গর্ভস্থ পানিতে উৎপন্ন হয় তার উপর ১০ ভাগের ১ ভাগ যাকাত দিতে হবে। আর যে ফসল সেচের দ্বারা উৎপন্ন হয় তাতে ২০ এর ১ ভাগ যাকাত দিতে হয়। (বুখারী)
ফসল ও ফল এর নিসাব এর পরিমাণ হলঃ পাঁচ ওয়াসাক বা ৬১২ কেজি (কিলোগ্রাম)। যদি সেচ ছাড়াই উৎপাদিত হয় তখন ১০ ভাগের ১ ভাগ যাকাত দিতে হবে। আর সেচ দ্বারা উৎপন্ন হলে ২০ ভাগের ১ ভাগ যাকাত দিতে হবে। (মুসনাদ আহমাদ)
(৩) ব্যবসার জিনিসের যাকাতঃ যে সমস্ত জিনিস ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যেমন- জায়গা-জমিন, খাদ্য, পানীয়, লোহা, গাড়ী, কাপড় ইত্যাদি দোকানে ছোট-বড় জিনিস যা আছে প্রত্যেক দোকানদারের উপর ওয়াজিব হচ্ছে এসবের তালিকা উত্তমরূপে প্রস্তুত করা। তারপর ঐ হিসাব মত যাকাত আদায় করতে হবে।
সাড়ে সাত তোলা খাঁটি সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার দামের পরিমাণ ব্যবসার মাল থাকলে শতকরা আড়াই টাকা হিসাবে যাকাত দিতে হবে। (বুখারী)
(৪) গবাদি পশুঃ এগুলোর মধ্যে শামিল হবে গরু, ছাগল, উট ইত্যাদি গৃহপালিত পশু। তবে এতে শর্ত হল এগুলো মাঠে চরা পশু হতে হবে এবং এগুলি দুধ কিংবা আর্থিক লাভের জন্য পালন করা হতে হবে। আর তাদের নিসাব পূর্ণ হতে হবে। মাঠে চরার শর্ত হল, সমস্ত বছর বা বছরের বেশীর ভাগ সময় চরতে হবে। যদি তা না হয় তাহলে যাকাত দিতে হবে না। (ক) উটঃ এর সর্বনিম্ন পরিমাণ হল ৫টি। এর যাকাত দিতে হবে ১টি ছাগল। (খ) গরুঃ এর সর্বনিম্ন নিসাব হল ৩০টি। এর যাকাত দিতে হবে ১ বছরের ১টি বাছুর। (গ) ছাগলঃ এর সর্বনিম্ন নিসাব হল ৪০টি। এর যাকাত দিতে হবে ১টি ছাগল। কিন্তু ব্যবসার জন্য যদি তাদের পালন করা হয় তবে তা মাঠেই চরানো হোক কিংবা ঘরেই ঘাস খাক, তার যাকাত হবে মূল্য হিসাবে।
পশুর নিসাব ও যাকাত এর বিস্তারিত তালিকা
গরু ও মহিষের যাকাতের হার-
১। ৩০টি হতে ৩৯টি পর্যন্ত হলে ১ বৎসর বয়সের ১টি গরু।
২। ৪০টি ’’ ৫৯টি ’’ ’’ ২ ’’ ’’ ১টি ’’।
৩। ৬০টি ’’ ৬৯টি ’’ ’’ ১ ’’ ’’ ২টি ’’।
৪। ৭০টি ’’ ৭৯টি ’’ ’’ ২ ’’ ’’ ১টি ও ১ বছর বয়সের ১টি গরু।
৫। ৮০টি ’’ ৮৯টি ’’ ’’ ২ ’’ ’’ ২টি গরু।
৬। ৯০টি ’’ ৯৯টি ’’ ’’ ১ ’’ ’’ ৩টি গরু।
৭। ১০০ ’’ ১০৯টি হলে ১টা ২ বছর বয়সের ও ২টি ১ বছর বয়সের গরু।
৮। ১১০ ’’ ১১৯টি ’’ ১টা ১ ’’ ’’ ১টি ও ২ বছর বয়সের ২টি গরু।
মোট কথা প্রতি ৩০টি গরুর জন্য ১টি ১বছর বয়সের গরু এবং প্রতি ৪০টির জন্য ১টি ২ বছর বয়সের গরু যাকাত হিসেবে আদায় করতে হয়।
ছাগল, ভেড়া ও মেষের যাকাতের হারঃ
১। ৪০টি হতে ১২০টি পর্যন্ত হলে ১টি ছাগল/ভেড়া/মেষ।
২। ১২১টি ’’ ২০০টি ’’ ’’ ২টি ’’ ’’ ’’।
৩। ২০১টি ’’ ৩০০টি ’’ ’’ ৩টি ’’ ’’ ’’।
৪। অতঃপর প্রতি ১০০টির জন্য ১টি করে বাড়বে। (আবূ দাউদ)
উটের যাকাতের হারঃ
১। ৫টি হতে ৯টি পর্যন্ত হলে ১টি ছাগল যাকাত দিতে হবে।
২। ১০টি ’’ ১৪টি ’’ ’’ ২টি ’’ ’’ ’’ ’’ ।
৩। ১৫টি ’’ ১৯টি ’’ ’’ ৩টি ’’ ’’ ’’ ’’ ।
৪। ২০টি ’’ ২৪টি ’’ ’’ ৪টি ’’ ’’ ’’ ’’ ।
৫। ২৫টি ’’ ৩৫টি ’’ ’’ ১ বছর বয়সের ১টি উটনী যাকাত দিতে হবে।
৬। ৩৬টি ’’ ৪৫টি ’’ ’’ ২ ’’ ’’ ১টি ’’ ’’ ’’ ’’।
৭। ৪৬টি ’’ ৬০টি ’’ ’’ ৩ ’’ ’’ ১টি ’’ ’’ ’’ ’’।
৮। ৬১টি ’’ ৭৫টি ’’ ’’ ৪ ’’ ’’ ১টি ’’ ’’ ’’ ’’।
৯। ৭৬টি ’’ ৯০টি ’’ ’’ ২ ’’ ’’ ২টি ’’ ’’ ’’ ’’।
১০। ৯১টি ’’ ১২০টি ’’ ’’ ৩ ’’ ’’ ২টি ’’ ’’ ’’ ’’।
১১। ১২০ এর বেশী হলে- প্রতি ৪০টির জন্য ১টি করে ২ বছর বয়সের উটনী এবং এরপরে;
প্রতি ৫০টি উটে ৪ বছর বয়সের ১টি উটনী দিতে হবে।
Narrated Nafi`:
Ibn `Umar said, "The Prophet (ﷺ) made incumbent on every male or female, free man or slave, the payment of one Sa' of dates or barley as Sadaqat-ul-Fitr (or said Sadaqa-Ramadan)." The people then substituted half Sa' of wheat for that. Ibn `Umar used to give dates (as Sadaqat-ul-Fitr). Once there was scarcity of dates in Medina and Ibn `Umar gave barley. 'And Ibn `Umar used to give Sadaqat-ul- Fitr for every young and old person. He even used to give on behalf of my children. Ibn `Umar used to give Sadaqat-ul-Fitr to those who had been officially appointed for its collection. People used to give Sadaqat-ul-Fitr (even) a day or two before the `Id.