পরিচ্ছেদঃ ১৪২৬. আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ যাদের সাথে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ তাদের অংশ দিয়ে দিবে (৪:৩৩)।
بَاب الْكَفَالَةِ فِي الْقَرْضِ وَالدُّيُونِ بِالْأَبْدَانِ وَغَيْرِهَا
وَقَالَ أَبُو الزِّنَادِ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ حَمْزَةَ بْنِ عَمْرٍو الْأَسْلَمِيِّ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ بَعَثَهُ مُصَدِّقًا فَوَقَعَ رَجُلٌ عَلَى جَارِيَةِ امْرَأَتِهِ فَأَخَذَ حَمْزَةُ مِنْ الرَّجُلِ كَفِيلًا حَتَّى قَدِمَ عَلَى عُمَرَ وَكَانَ عُمَرُ قَدْ جَلَدَهُ مِائَةَ جَلْدَةٍ فَصَدَّقَهُمْ وَعَذَرَهُ بِالْجَهَالَةِ وَقَالَ جَرِيرٌ وَالْأَشْعَثُ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ فِي الْمُرْتَدِّينَ اسْتَتِبْهُمْ وَكَفِّلْهُمْ فَتَابُوا وَكَفَلَهُمْ عَشَائِرُهُمْ وَقَالَ حَمَّادٌ إِذَا تَكَفَّلَ بِنَفْسٍ فَمَاتَ فَلَا شَيْءَ عَلَيْهِ وَقَالَ الْحَكَمُ يَضْمَنُ قَالَ أَبُو عَبْد اللَّهِ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ ذَكَرَ رَجُلًا مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ سَأَلَ بَعْضَ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنْ يُسْلِفَهُ أَلْفَ دِينَارٍ فَقَالَ ائْتِنِي بِالشُّهَدَاءِ أُشْهِدُهُمْ فَقَالَ كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا قَالَ فَأْتِنِي بِالْكَفِيلِ قَالَ كَفَى بِاللَّهِ كَفِيلًا قَالَ صَدَقْتَ فَدَفَعَهَا إِلَيْهِ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى فَخَرَجَ فِي الْبَحْرِ فَقَضَى حَاجَتَهُ ثُمَّ الْتَمَسَ مَرْكَبًا يَرْكَبُهَا يَقْدَمُ عَلَيْهِ لِلْأَجَلِ الَّذِي أَجَّلَهُ فَلَمْ يَجِدْ مَرْكَبًا فَأَخَذَ خَشَبَةً فَنَقَرَهَا فَأَدْخَلَ فِيهَا أَلْفَ دِينَارٍ وَصَحِيفَةً مِنْهُ إِلَى صَاحِبِهِ ثُمَّ زَجَّجَ مَوْضِعَهَا ثُمَّ أَتَى بِهَا إِلَى الْبَحْرِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنَّكَ تَعْلَمُ أَنِّي كُنْتُ تَسَلَّفْتُ فُلَانًا أَلْفَ دِينَارٍ فَسَأَلَنِي كَفِيلَا فَقُلْتُ كَفَى بِاللَّهِ كَفِيلًا فَرَضِيَ بِكَ وَسَأَلَنِي شَهِيدًا فَقُلْتُ كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا فَرَضِيَ بِكَ وَأَنِّي جَهَدْتُ أَنْ أَجِدَ مَرْكَبًا أَبْعَثُ إِلَيْهِ الَّذِي لَهُ فَلَمْ أَقْدِرْ وَإِنِّي أَسْتَوْدِعُكَهَا فَرَمَى بِهَا فِي الْبَحْرِ حَتَّى وَلَجَتْ فِيهِ ثُمَّ انْصَرَفَ وَهُوَ فِي ذَلِكَ يَلْتَمِسُ مَرْكَبًا يَخْرُجُ إِلَى بَلَدِهِ فَخَرَجَ الرَّجُلُ الَّذِي كَانَ أَسْلَفَهُ يَنْظُرُ لَعَلَّ مَرْكَبًا قَدْ جَاءَ بِمَالِهِ فَإِذَا بِالْخَشَبَةِ الَّتِي فِيهَا الْمَالُ فَأَخَذَهَا لِأَهْلِهِ حَطَبًا فَلَمَّا نَشَرَهَا وَجَدَ الْمَالَ وَالصَّحِيفَةَ ثُمَّ قَدِمَ الَّذِي كَانَ أَسْلَفَهُ فَأَتَى بِالْأَلْفِ دِينَارٍ فَقَالَ وَاللَّهِ مَا زِلْتُ جَاهِدًا فِي طَلَبِ مَرْكَبٍ لِآتِيَكَ بِمَالِكَ فَمَا وَجَدْتُ مَرْكَبًا قَبْلَ الَّذِي أَتَيْتُ فِيهِ قَالَ هَلْ كُنْتَ بَعَثْتَ إِلَيَّ بِشَيْءٍ قَالَ أُخْبِرُكَ أَنِّي لَمْ أَجِدْ مَرْكَبًا قَبْلَ الَّذِي جِئْتُ فِيهِ قَالَ فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ أَدَّى عَنْكَ الَّذِي بَعَثْتَ فِي الْخَشَبَةِ فَانْصَرِفْ بِالْأَلْفِ الدِّينَارِ رَاشِدًا
১৪২৫. পরিচ্ছেদঃ ঋণ ও দেনার ব্যাপারে দেহ এবং অন্য কিছুর যামিন হওয়া।
আবূ যিনাদ (রহঃ) মুহাম্মদ ইব্ন হামযা ইব্ন আমর আসলামী (রহঃ) এর মধ্যমে তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, উমর (রাঃ) তাকে সাদকা উশুলকারী নিযুক্ত করে পাঠান। সেখানে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর দাসীর সাথে ব্যভিচার করে বসল। তখন হামযা (রহঃ) কিছু লোককে তার পক্ষ হতে যামিন স্থির করলেন। পরে তিনি উমর (রাঃ) এর নিকট ফিরে আসলেন। উমর (রাঃ) উক্ত লোকটিকে একশ’ বেত্রাঘাত করলেন এবং লোকদের বিবরণকে সত্য বলে গ্রহণ করেন। তারপর লোকটি তার অজ্ঞতার জন্য (স্ত্রী দাসীর সাথে যৌন সম্ভোগ করা যে অবৈধ তা সে জানত না) অব্যাহতি দেন। জারীর ও আশআশ (রহঃ) মুরতাদ-ধর্মচ্যুত ব্যক্তিদের সম্পর্কে আবদুল্লাহ [ইব্ন মাসউদ (রাঃ)]-কে বলেন, তাদেরকে তাওবা করতে বলুন এবং তাদের পক্ষ হতে কাউকে যামিন গ্রহণ করুন। ধর্মচ্যুতরা তাওবা করল এবং তাদের গোত্রের লোকেরা তাদের যামিন হয়ে গেল।
হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, যদি কোন ব্যক্তি যামিন হওয়ার পর মৃত্যুবরণ করে তবে সে দায়মুক্ত হয়ে যাবে। হাকাম (রহঃ) বলেন, তার উপর দায়িত্ব থেকে যাবে (অর্থাৎ ওয়ারিশদের উপর সে দায়িত্ব বর্তাবে)। লায়স (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বনী ইসরাঈলের কোন এক ব্যক্তি বনী ইসরাঈলের অপর এক ব্যক্তির নিকট এক হাজার দীনার ঋণ চাইল। তখন সে (ঋণ দাতা) বলল, কয়েকজন সাক্ষী আন, আমি তাদেরকে সাক্ষী রাখব। সে বলল, সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। তারপর (ঋণ দাতা) বলল, তাহলে একজন যামিনদার উপস্থিত কর। সে বলল, যামিনদার হিসাবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। ঋণদাতা বলল, তুমি সত্যই বলেছ। এরপর নির্ধারিত সময়ে পরিশোধের শর্তে তাকে এক হাজার দীনার দিয়ে দিল।
তারপর ঋণ গ্রহীতা সামুদ্রিক সফর করল এবং তার প্রয়োজন সমাধা করে সে যানবাহন খুঁজতে লাগল, যাতে সে নির্ধারিত সময়ের ভেতর ঋণদাতার কাছে এসে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু সে কোন যানবাহন পেল না। তখন সে এক টুকরো কাঠ নিয়ে তা ছিদ্র করল এবং ঋণদাতার নামে একখানা পত্র ও এক হাজার দীনার তার মধ্যে ভরে ছিদ্রটি বন্ধ করে সমুদ্র তীরে এসে বলল, হে আল্লাহ্! তুমি তো জান আমি অমুকের নিকট এক হাজার দীনার ঋণ চাইলে সে আমার কাছে যামিনদার চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, আল্লাহ্ই যামিন হিসাবে যথেষ্ট। এতে সে রাযী হয়। তারপর সে আমার কাছে সাক্ষী চেয়েছিল, আমি বলেছিলাম সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট, তাতেও সে রাযী হয়ে যায়। আমি তার ঋণ (যথাসময়য়ে) পরিশোধের উদ্দেশ্যে যানবাহনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাইনি। তাই আমি তোমার নিকট সোপর্দ করলাম, এই বলে সে কাষ্ঠখণ্ডটি সমুদ্রে নিক্ষেপ করল। আর কাষ্ঠখণ্ডটি সমুদ্রে প্রবেশ করল।
অতঃপর লোকটি ফিরে গেল। এবং নিজের শহরে যাওয়ার জন্য যানবাহন খুঁজতে লাগল। ওদিকে ঋণদাতা এই আশায় সমুদ্রতীরে গেল যে, হয়তবা ঋণগ্রহীতা কোন নৌযানে করে তার মাল নিয়ে এসেছে। তার দৃষ্টি কাষ্ঠখণ্ডটির উপর পড়ল, যার ভিতরে মাল ছিল। সে কাষ্ঠখণ্ডটি তার পরিবারের জ্বালানির জন্য বাড়ী নিয়ে গেল। যখন সে তা চিরল, তখন সে মাল ও পত্রটি পেয়ে গেল। কিছুদিন পর ঋণগ্রহীতা এক হাজার দীনার নিয়ে এসে হাযির হল। এবং বলল, আল্লাহ্র কসম আমি আপনার মাল যথাসময়ে পৌঁছিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে সব সময় যানবাহনের খোঁজে ছিলাম। কিন্তু আমি যে নৌযানে এখন আসলাম, তার আগে আর কোন নৌযান পাইনি। ঋণদাতা বলল, তুমি কি আমার নিকট কিছু পাঠিয়েছিলে? ঋণগ্রহীতা বলল, আমি তো তোমাকে বললামই যে এর আগে আর কোন নৌযান আমি পাইনি। সে বলল, তুমি কাঠের টুকরোর ভিতরে যা পাঠিয়েছিলে, তা আল্লাহ্ তোমার পক্ষ হতে আমাকে আদায় করে দিয়েছেন। তখন সে আনন্দচিত্তে এক হাজার দীনার নিয়ে ফিরে চলে এল।
২১৪৫। সালত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ আয়াতে مَوَالِيَ শব্দের অর্থ উত্তরাধিকারী। আরوَالَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে তিনি [ইবনু আব্বাস (রাঃ)] বলেন, মদিনায় মুহাজিরদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আগমনের পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যে ভাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করেন, তার ভিত্তিতে মুহাজিররা আনসারদের উত্তরাধিকারী হত, কিন্তু আনসারদের আত্মীয়-স্বজনরা ওয়ারিস হত না। যখনوَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ এ আয়াত নাযিল হল, তখনالَّذِينَ عَقَدَتْ আয়াতের হুকুম রহিত হয়ে গেল। তারপর তিনি আরো বলেন উপরোক্ত আয়াতের প্রেক্ষিতে মুহাজির ও আনসারদের পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা ও আদেশ-উপদেশের হুকুম বাকী রয়েছে। কিন্তু তাদের জন্য মীরাস বা উত্তরাধিকার স্বত্ব রহিত হয়ে গেছে। অবশ্য তাদের জন্য ওসীয়াত করা যেতে পারে।
হাদিস নং ২২৯০, ২২৯১ ও ২২৯২
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَالَّذِينَ عَاقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ فَآتُوهُمْ نَصِيبَهُمْ}
حَدَّثَنَا الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ إِدْرِيسَ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما – (وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ) قَالَ وَرَثَةً (وَالَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ) قَالَ كَانَ الْمُهَاجِرُونَ لَمَّا قَدِمُوا الْمَدِينَةَ يَرِثُ الْمُهَاجِرُ الأَنْصَارِيَّ دُونَ ذَوِي رَحِمِهِ لِلأُخُوَّةِ الَّتِي آخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمْ، فَلَمَّا نَزَلَتْ (وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ) نَسَخَتْ، ثُمَّ قَالَ (وَالَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ ) إِلاَّ النَّصْرَ وَالرِّفَادَةَ وَالنَّصِيحَةَ، وَقَدْ ذَهَبَ الْمِيرَاثُ وَيُوصِي لَهُ.
Narrated Sa`id bin Jubair:
Ibn `Abbas said, "In the verse: To every one We have appointed ' (Muwaliya Muwaliya means one's) heirs (4.33).' (And regarding the verse) 'And those with whom your right hands have made a pledge.' Ibn `Abbas said, "When the emigrants came to the Prophet (ﷺ) in Medina, the emigrant would inherit the Ansari while the latter's relatives would not inherit him because of the bond of brotherhood which the Prophet established between them (i.e. the emigrants and the Ansar). When the verse: 'And to everyone We have appointed heirs' (4.33) was revealed, it canceled (the bond (the pledge) of brotherhood regarding inheritance)." Then he said, "The verse: To those also to whom your right hands have pledged, remained valid regarding cooperation and mutual advice, while the matter of inheritance was excluded and it became permissible to assign something in one's testament to the person who had the right of inheriting before.