৬১৮১

পরিচ্ছেদঃ ৩৮. আবু মুসা আশআরী ও আবু আমির আশআরী (রাঃ) এর ফযীলত

৬১৮১। আবদুল্লাহ ইবনু বাররাদ আবূ আমির আশআরী ও আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) ... আবূ বুরদাহ (রাঃ) এর পিতার সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হুনায়ন যুদ্ধ সম্পন্ন করেন তখন আবূ আমির (রাঃ) কে একটি বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করা ’আওতাস’ অভিযানে প্রেরণ করেন। তিনি দুরায়দ ইবনু সিম্মাহ এর মুখোমুখি হলে। দুরায়দ নিহত হল এবং আল্লাহ্‌ তাঁর বাহিনীকে পরাস্থ করলেন। এরপর আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আবূ আমিরের সঙ্গে পাঠিয়ে ছিলেন। আবূ আমিরের হাঁটুতে তীরের আঘাত লেগেছিল। জুছাম গোত্রের জনৈক ব্যাক্তি সেই তীরটি নিক্ষেপ করেছিল। এই তীরটি তাঁর ঘাড়ে বিদ্ধ হয়েছিল। তখন আমি তাঁর কাছে গেলাম এবং বললাম, চাচাজান! কে আপনাকে তীর বিদ্ধ করেছে? তখন আবূ আমির ইশারায় আবূ মূসা (রাঃ) কে জানালেন, ঐ আমার ঘাতক যাকে তুমি দেখতে পাচ্ছ, সেই আমাকে তীরবিদ্ধ করেছে।

আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, আমি তাকে আক্রমন করে হত্যা করার প্রতিজ্ঞা করলাম। আমি তাঁর মুখোমুখি হলাম, সে আমাকে দেখা মাত্রই পালিয়ে যাচ্ছিল। আমি তাকে ধাওয়া করলাম এবং বলছিলাম, হে বেহায়া, বেশরম! পালাচ্ছ কেন? তুমি কি আরবী নও? বীরত্ব আছে তো দাঁড়িয়ে যাও, ভাগছ কেন? তখন সে থামল। এরপর সে ও আমি কাছাকাছি হলাম। আমরা পরস্পরে দুইবার আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ করলাম। আমি তাকে তরবারি দ্বারা আঘাত করে ধরাশায়ী করলাম এবং শেষাবধী হত্যা করলাম। এরপর আমি আবূ আমির (রাঃ) এর কাছে ফিরে এলাম এবং তাকে বললাম, আল্লাহ্‌ আপনার ঘাতককে হত্যা করেছেন।

তখন আবূ আমির (রাঃ) বললেন, এই তীরটি বের করে নাও। আমি সেটি তুলে ফেললাম। তখন তা থেকে পানি বের হচ্ছিল। এরপর তিনি বললেন, হে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র! তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যাও এবং আমার পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছে দিও। আর তাঁর কাছে গিয়ে আরয করবে, আবূ আমির আপনাকে তাঁর জন্য মাগফিরাতের দু’আ চেয়েছেন। তিনি (আবূ মূসা) বলেন, আবূ আমির আমাকে লোকের উপর কর্মকর্তা শাসক নিয়োগ করলেন এবং কিছু সময় এ অবস্থায় থাকার পর তিনি মৃত্যুবরণ করলেন।

আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম এবং তাঁর খিদমতে হাজির হলাম। তখন তিনি চাটাইপাতা খাটের উপর ছিলেন এবং ঐ খাটের উপর চাঁদর বিছানো ছিল না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিঠে ও পাজরে চাটাইয়ের দাগ বসে গিয়েছিল। এরপর আমি তাঁর কাছে আমাদের ও আবূ আমিরের খবর দিলাম এবং আমি তাকে বললাম, তিনি (আবূ আমির) বলেছেন, তাঁর জন্য আপনাকে মাগফিরাতের দু’আ করতে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি আনালেন এবং তা দিয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। এরপর দু’হাত দুলে বললেনঃاللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعُبَيْدٍ أَبِي عَامِرٍ “হে আল্লাহ্‌! উবায়দ আবূ আমিরকে ক্ষমা করে দাও” (হাত উচু করার কারনে) তখন আমি তাঁর উভয় বগলের শুভ্রতা দেখছিলাম। পুনরায় তিনি বললেনঃاللَّهُمَّ اجْعَلْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَوْقَ كَثِيرٍ مِنْ خَلْقِكَ أَوْ مِنَ النَّاسِ “হে আল্লাহ্‌! তাকে কিয়ামতের দিন তোমার মাখলুকের অনেকের উপরে অথবা অনেক মানুষের উপরে স্থান দিও”।

তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার জন্যও মাগফিরাতের দু’আ করুন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃاللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ ذَنْبَهُ وَأَدْخِلْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مُدْخَلاً كَرِيمًا “হে আল্লাহ্‌! আবদুল্লাহ ইবনু কায়েসের গোনাহ ক্ষমা করে দাও এবং তাকে কিয়ামত দিবসে সম্মানজনক জান্নাতে প্রবেশ করাও।“ আবূ বুরদাহ (রাঃ) বলেন, একটি দু’আ আবূ আমিরের জন্য এবং অন্যটি আবূ মূসা আশআরীর জন্য।

باب مِنْ فَضَائِلِ أَبِي مُوسَى وَأَبِي عَامِرٍ الأَشْعَرِيَّيْنِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ‏‏

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ أَبُو عَامِرٍ الأَشْعَرِيُّ، وَأَبُو كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ - وَاللَّفْظُ لأَبِي عَامِرٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا فَرَغَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ حُنَيْنٍ بَعَثَ أَبَا عَامِرٍ عَلَى جَيْشٍ إِلَى أَوْطَاسٍ فَلَقِيَ دُرَيْدَ بْنَ الصِّمَّةِ فَقُتِلَ دُرَيْدٌ وَهَزَمَ اللَّهُ أَصْحَابَهُ فَقَالَ أَبُو مُوسَى وَبَعَثَنِي مَعَ أَبِي عَامِرٍ - قَالَ - فَرُمِيَ أَبُو عَامِرٍ فِي رُكْبَتِهِ رَمَاهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي جُشَمٍ بِسَهْمٍ فَأَثْبَتَهُ فِي رُكْبَتِهِ فَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ فَقُلْتُ يَا عَمِّ مَنْ رَمَاكَ فَأَشَارَ أَبُو عَامِرٍ إِلَى أَبِي مُوسَى فَقَالَ إِنَّ ذَاكَ قَاتِلِي تَرَاهُ ذَلِكَ الَّذِي رَمَانِي ‏.‏ قَالَ أَبُو مُوسَى فَقَصَدْتُ لَهُ فَاعْتَمَدْتُهُ فَلَحِقْتُهُ فَلَمَّا رَآنِي وَلَّى عَنِّي ذَاهِبًا فَاتَّبَعْتُهُ وَجَعَلْتُ أَقُولُ لَهُ أَلاَ تَسْتَحْيِي أَلَسْتَ عَرَبِيًّا أَلاَ تَثْبُتُ فَكَفَّ فَالْتَقَيْتُ أَنَا وَهُوَ فَاخْتَلَفْنَا أَنَا وَهُوَ ضَرْبَتَيْنِ فَضَرَبْتُهُ بِالسَّيْفِ فَقَتَلْتُهُ ثُمَّ رَجَعْتُ إِلَى أَبِي عَامِرٍ فَقُلْتُ إِنَّ اللَّهَ قَدْ قَتَلَ صَاحِبَكَ ‏.‏ قَالَ فَانْزِعْ هَذَا السَّهْمَ فَنَزَعْتُهُ فَنَزَا مِنْهُ الْمَاءُ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِي انْطَلِقْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَقْرِئْهُ مِنِّي السَّلاَمَ وَقُلْ لَهُ يَقُولُ لَكَ أَبُو عَامِرٍ اسْتَغْفِرْ لِي ‏.‏ قَالَ وَاسْتَعْمَلَنِي أَبُو عَامِرٍ عَلَى النَّاسِ وَمَكَثَ يَسِيرًا ثُمَّ إِنَّهُ مَاتَ فَلَمَّا رَجَعْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم دَخَلْتُ عَلَيْهِ وَهُوَ فِي بَيْتٍ عَلَى سَرِيرٍ مُرْمَلٍ وَعَلَيْهِ فِرَاشٌ وَقَدْ أَثَّرَ رِمَالُ السَّرِيرِ بِظَهْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَنْبَيْهِ فَأَخْبَرْتُهُ بِخَبَرِنَا وَخَبَرِ أَبِي عَامِرٍ وَقُلْتُ لَهُ قَالَ قُلْ لَهُ يَسْتَغْفِرْ لِي ‏.‏ فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمَاءٍ فَتَوَضَّأَ مِنْهُ ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعُبَيْدٍ أَبِي عَامِرٍ ‏"‏ ‏.‏ حَتَّى رَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَوْقَ كَثِيرٍ مِنْ خَلْقِكَ أَوْ مِنَ النَّاسِ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْتُ وَلِي يَا رَسُولَ اللَّهِ فَاسْتَغْفِرْ ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ ذَنْبَهُ وَأَدْخِلْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مُدْخَلاً كَرِيمًا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو بُرْدَةَ إِحْدَاهُمَا لأَبِي عَامِرٍ وَالأُخْرَى لأَبِي مُوسَى ‏.‏

حدثنا عبد الله بن براد ابو عامر الاشعري، وابو كريب محمد بن العلاء - واللفظ لابي عامر - قالا حدثنا ابو اسامة، عن بريد، عن ابي بردة، عن ابيه، قال لما فرغ النبي صلى الله عليه وسلم من حنين بعث ابا عامر على جيش الى اوطاس فلقي دريد بن الصمة فقتل دريد وهزم الله اصحابه فقال ابو موسى وبعثني مع ابي عامر - قال - فرمي ابو عامر في ركبته رماه رجل من بني جشم بسهم فاثبته في ركبته فانتهيت اليه فقلت يا عم من رماك فاشار ابو عامر الى ابي موسى فقال ان ذاك قاتلي تراه ذلك الذي رماني ‏.‏ قال ابو موسى فقصدت له فاعتمدته فلحقته فلما راني ولى عني ذاهبا فاتبعته وجعلت اقول له الا تستحيي الست عربيا الا تثبت فكف فالتقيت انا وهو فاختلفنا انا وهو ضربتين فضربته بالسيف فقتلته ثم رجعت الى ابي عامر فقلت ان الله قد قتل صاحبك ‏.‏ قال فانزع هذا السهم فنزعته فنزا منه الماء فقال يا ابن اخي انطلق الى رسول الله صلى الله عليه وسلم فاقرىه مني السلام وقل له يقول لك ابو عامر استغفر لي ‏.‏ قال واستعملني ابو عامر على الناس ومكث يسيرا ثم انه مات فلما رجعت الى النبي صلى الله عليه وسلم دخلت عليه وهو في بيت على سرير مرمل وعليه فراش وقد اثر رمال السرير بظهر رسول الله صلى الله عليه وسلم وجنبيه فاخبرته بخبرنا وخبر ابي عامر وقلت له قال قل له يستغفر لي ‏.‏ فدعا رسول الله صلى الله عليه وسلم بماء فتوضا منه ثم رفع يديه ثم قال ‏"‏ اللهم اغفر لعبيد ابي عامر ‏"‏ ‏.‏ حتى رايت بياض ابطيه ثم قال ‏"‏ اللهم اجعله يوم القيامة فوق كثير من خلقك او من الناس ‏"‏ ‏.‏ فقلت ولي يا رسول الله فاستغفر ‏.‏ فقال النبي صلى الله عليه وسلم ‏"‏ اللهم اغفر لعبد الله بن قيس ذنبه وادخله يوم القيامة مدخلا كريما ‏"‏ ‏.‏ قال ابو بردة احداهما لابي عامر والاخرى لابي موسى ‏.‏


Abu Burda reported on the authority of his father that when Allah's Apostle (ﷺ) had been free from the Battle of Hunain, he sent Abu 'Amir as the head of the army of Autas. He had an encounter with Duraid b. as_Simma. Duraid was killed and Allah gave defeat to his friends. Abu Musa said:
He (the Holy Prophet) sent me along with Abu 'Amir and Abu 'Amir received a wound in his knee from the arrow, (shot by) a person of Bani Jusham. It stuck in his knee. I went to him and said: Uncle, who shot an arrow upon you? Abu 'Amir pointed out to Abu Musa and said: Verily that one who shot an arrow upon me in fact killed me. Abu Musa said: I followed him with the determination to kill him and overtook him and when he saw me he turned upon his heels. I followed him and I said to him: Don't you feel ashamed (that you run), aren't you an Arab? Why don't you stop? He stopped and I had an encounter with him and we exchanged the strokes of (swords). I struck him with the sword and killed him. Then I came back to Abu Amir and said: Verily Allah has killed the one who killed you. And he said: Now draw out this arrow. I drew out the arrow and there came out from that (wound) water. Abu 'Amir said: My nephew, go to Allah's Messenger (ﷺ) and convey my greetings to him and tell him that Abu Amir begs you to ask forgiveness for him. And Abu Amir appointed me as the chief of the people and he died after a short time. When I came to Allah's Apostle (ﷺ) I visited him and he had been lying on the cot woven by strings and there was (no) bed over it and so there had been marks of the strings on the back of Allah's Messenger (ﷺ) and on his sides. I narrated to him what had happened to us and narrated to him about Abu Amir and said to him that he had made a request to the effect that forgiveness should be sought for him (from Allah). Thereupon Allah's Messenger (may peace be. upon him) called for water and performed ablution with it. He then lifted his hands and said. O Allah, grant pardon to Thy servant Abu Amir. (The Prophet had raised his hands so high for supplication) that I saw the whiteness of his armpits. He again said: O Allah, grant him distinction amongst the majority of Thine created beings or from amongst the people. I said: Allah's Messenger, ask forgiveness for me too. Thereupon Allah's Apostle (ﷺ) said: Allah, forgive the sins of Abdullah b. Qais (Abu Musa Ash'ari) and admit him to an elevated place on the Day of Resurrection. Abu Burda said: One prayer is for abu 'Amir and the other is tor Abu Musa.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৬/ সাহাবী (রাঃ) গণের ফযীলত (كتاب فضائل الصحابة رضى الله تعالى عنهم)