৫৭৩২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা

৫৭৩২-[৩৫] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা যখন আদম আলায়হিস সালাম ও তাঁর বংশধরকে সৃষ্টি করলেন, তখন মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) বললেন, হে প্রভু! তুমি এমন এক সষ্টিজীব সৃষ্টি করেছ, যারা খাওয়া-দাওয়া ও পানাহার করবে, বিবাহ-শাদি করবে এবং যানবাহনে আরোহণ করবে। অতএব তাদেরকে দুনিয়া তথা পার্থিব সম্পদ দিয়ে দাও এবং আমাদেরকে পরকাল প্রদান কর। আল্লাহ তা’আলা বললেন, আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি এবং তার মধ্যে আমার রূহ ফুঁকেছি, তাকে ঐ বস্তুর সমান করব না যাকে كُنْ (হয়ে যাও) শব্দ দ্বারা সৃষ্টি করেছি। (বায়হাকী’র শুআবুল ঈমান)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب بدءالخلق وَذِكْرِ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ)

وَعَنْ جَابِرٌ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ وَذُرِّيَّتَهُ قَالَتِ: الْمَلَائِكَةُ: يَا رَبِّ خَلَقْتَهُمْ يَأْكُلُونَ وَيَشْرَبُونَ وَيَنْكِحُونَ وَيَرْكَبُونَ فَاجْعَلْ لَهُمُ الدُّنْيَا وَلَنَا الْآخِرَةَ. قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: لَا أَجْعَلُ مَنْ خَلَقْتُهُ بيديَّ ونفخت فِيهِ مِنْ رُوحِي كَمَنْ قُلْتُ لَهُ: كُنْ فَكَانَ «. رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي» شُعَبِ الْإِيمَانِ اسنادہ ضعیف ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (149 ، نسخۃ محققۃ : 147) * ھشام بن عمار اختلط و الانصاری لم اعرفہ وجاء تصریحہ فی روایۃ جنید بن حکیم و لا یدری من ھو ؟ و عبد ربہ بن صالح القرشی وثقہ ابن حبان وحدہ فھو مجھول الحال ۔ (ضَعِيف)

ব্যাখ্যা: হাদীসে ইসরাফীল 'আলায়হিস সালাম-এর দাঁড়িয়ে থাকার অবস্থার বিবরণ দেয়া হয়েছে। ইসরাফীল আলায়হিস সালাম-কে সৃষ্টির সময়ই দু পা জড়ো তথা এক পায়ের সাথে আরেক পা মিলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার মতো করে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর তিনি এভাবে কোনদিন না হেলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কোন সময় শিঙ্গায় ফুঁকারের নির্দেশ এসে যায় সেই অপেক্ষায় এমনভাবে রয়েছেন যে, উপরের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সুযোগ পাচ্ছেন না। আল্লাহর মর্যাদা ও ভয় তার চোখ অবনমিত করে রেখেছে।
(سَبْعُوْنَ نُوْرًا) “সত্তরটি আলো” অর্থাৎ জিবরীল ও আল্লাহ তা'আলার মাঝে যেমন সত্তরটি নূরের পর্দা রয়েছে, ঠিক তেমনি ইসরাফীল ও আল্লাহ তা'আলার মাঝেও অনুরূপ পর্দা রয়েছে। যদি কোন পর্দার নিকটে ইসরাফীল যান বলে ধরে নেয়া হয়, তবে তিনিও জিবরীল-এর মতো জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবেন। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা ও ইসরাফীল-এর মাঝে নূরের যে আবরণ রয়েছে সেই নূরের দিপ্তিও ইসরাফীল-এর চোখ ধারণ করতে অক্ষম।
(فَاجْعَلْ لَهُمُ الدُّنْيَا وَلَنَا الْآخِرَةَ) অর্থাৎ দুনিয়াকে তাদের জন্য স্থায়ীভাবে করে দাও আর আখিরাতের নিআমাতকে কেবল আমাদের জন্য নির্ধারিত করে দাও; কেননা আমরা দুনিয়ার নি'আমাত থেকে বঞ্চিত ছিলাম। কিন্তু মানুষ দুনিয়ার নি'আমাত ভোগ করেছে। আমরা ভোগ করিনি। তাই এর বদলে আখিরাতের পুরো নি'আমাত আমাদের জন্য করে দাও।
(لَا أَجْعَلُ مَنْ خَلَقْتُهُ بيديَّ) “অর্থাৎ যে মানুষকে আমি আমার হাতে বানিয়েছি, আমি যার মাঝে আত্মা ফুঁকেছি, তোমাদের আবেদনে তাদেরকে আখিরাতের নি'আমাত থেকে বঞ্চিত করতে পারি না।
ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অর্থাৎ যাকে আমি আমার নিজ হাতে বানিয়েছি, যাকে বানানোর দায়িত্ব অন্য কারো হাতে অর্পণ করিনি, যার মাঝে আমি নিজে আত্মা ফুঁকেছি তার মর্যাদা ও যাদেরকে কেবল নির্দেশ দিয়ে বানিয়েছি তাদের মর্যাদা সমান হতে পারে না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)