লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৩. শরীর থেকে প্রবহমান রক্ত নির্গত হওয়া সত্ত্বেও নামায পড়া জায়েয
৮৪৫(১). মুহাম্মাদ ইবনুল কাসেম ইবনে যাকারিয়া আল-মুহারিবী (রহঃ) ... জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে জাতুর-রিকা যুদ্ধে রওয়ানা হলাম। (আমাদের) এক ব্যক্তি মুশরিকদের এক নারীকে হত্যা করলো। যুদ্ধশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফেলাসহ যখন প্রত্যাবর্তন করলেন তখন তার স্বামী এলো। ঘটনাস্থলে সে অনুপস্থিত ছিল। সে ঘটনা অবহিত হয়ে শপথ করে বলল যে, সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের কাউকে হত্যা না করা পর্যন্ত ক্ষান্ত হবে না। অতএব সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পদচিহ্ন ধরে রওয়ানা হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন স্থানে যাত্রাবিরতি করলে বলতেনঃ কে আছে এই রাতে জাগ্রত থেকে আমাদের পাহারা দিবে? রাবী বলেন, মুহাজিরদের এক ব্যক্তি এবং আনসারদের এক ব্যক্তি দ্রুত এগিয়ে এলেন। তিনি বললেনঃ তোমরা দু’জন গিরিপথের মুখে পাহারারত থাকো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ উপত্যকার গিরিপথে অবস্থান করছিলেন।
সেই দুই ব্যক্তি গিরিপথের মুখে পৌঁছার পর আনসার ব্যক্তি মুহাজির ব্যক্তিকে বললেন, তুমি রাতের কোন অংশে, প্রথম নাকি শেষে অংশে পাহারা দিবে? তিনি বলেন, বরং তুমি আমাকে রাতের প্রথম অংশে পাহারার দায়িত্ব পালন করতে দাও। রাবী বলেন, মুহাজির ব্যক্তি শুয়ে ঘুমিয়ে গেলেন এবং আনসার ব্যক্তি নামাযে দাঁড়িয়ে গেলেন। এই সুযোগে সেই লোকটি এলো। সে দূর থেকে এক ব্যক্তিকে দেখে বুঝতে পারলো যে, তিনি দলের পাহারাদার। অতএব সে তাকে লক্ষ্য করে তীর নিক্ষেপ করলো এবং তা লক্ষ্যস্থলে আঘাত করলো। তিনি তীরটি টেনে খুলে ফেলে নামাযে দণ্ডায়মান থাকলেন। অতঃপর সে তার প্রতি আবার দ্বিতীয় তীর নিক্ষেপ করলো এবং এটিও তার শরীরে বিদ্ধ হলো। কিন্তু তিনি শরীর থেকে তীর টেনে বের করে ফেলে নামাযে দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর সে তার প্রতি তৃতীয় তীর নিক্ষেপ করলো এবং তাও তার শরীরে বিদ্ধ হলো। তিনি তার শরীর থেকে তীর টেনে বের করলেন, অতঃপর রুকূ ও সিজদান্তে নামায শেষ করলেন, তারপর তার সাথীকে জাগ্রত করলেন।
তিনি তাকে বললেন, তুমি উঠে বসো, আমি আহত হয়েছি। তিনি তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ালেন। লোকটি তাদের দুইজনকে দেখে বুঝতে পারলো যে, তারা সতর্ক হয়ে গেছে, তখন সে পলায়ন করলো। মুহাজির ব্যক্তি আনসার ব্যক্তির শরীরে রক্ত দেখে বললেন, সুবহানাল্লাহ! তুমি আমাকে কেন ঘুম থেকে জাগ্রত করোনি এবং আবু কুরাইব (রহঃ)-এর বর্ণনায় আছে, সে তোমাকে যখন প্রথম তীর নিক্ষেপ করেছিল তখন তুমি আমাকে জাগ্রত করোনি কেন? তিনি বললেন, আমি একটি সূরা পড়ছিলাম, তা খতম করার পূর্বে বিরতি দেয়া পছন্দ করিনি। সে যখন একের পর এক তীর নিক্ষেপ করছিল তখন আমি রাআত পূর্ণ করে তোমাকে অবহিত করলাম। আল্লাহর শপথ! যদি আমি শত্রুদের সীমান্তে পাহারারত না থাকতাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে যে পাহারা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, জীবন দিয়ে হলেও সেই সূরাটি পড়ে শেষ করতাম (আবু দাউদ, নং ১৯৮)।
بَابُ جَوَازِ الصَّلَاةِ مَعَ خُرُوجِ الدَّمِ السَّائِلِ مِنَ الْبَدَنِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْقَاسِمِ بْنِ زَكَرِيَّا الْمُحَارِبِيُّ بِالْكُوفَةِ ، ثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ ، وَحَدَّثَنَا الْقَاضِي الْحُسَيْنُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ ، ثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ الْجَبَّارِ الْكُوفِيُّ ، قَالَا : ثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ ، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ ، حَدَّثَنِي صَدَقَةُ بْنُ يَسَارٍ ، عَنْ عَقِيلِ بْنِ جَابِرٍ ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : " خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فِي غَزْوَةِ ذَاتِ الرِّقَاعِ ، فَأَصَابَ رَجُلٌ امْرَأَةً مِنَ الْمُشْرِكِينَ ، فَلَمَّا انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَافِلًا أَتَى زَوْجُهَا ، وَكَانَ غَائِبًا ، فَلَمَّا أُخْبِرَ الْخَبَرَ حَلَفَ أَنْ لَا يَنْتَهِيَ حَتَّى يُهَرِيقَ دَمًا فِي أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَخَرَجَ يَتْبَعُ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - كُلَّمَا نَزَلَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - مَنْزِلًا - وَقَالَ الْقَاضِي : فَلَمَّا نَزَلَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - مَنْزِلًا - قَالَ : " مَنْ رَجُلٌ يَكْلَؤُنَا لَيْلَتَنَا هَذِهِ ؟ " . ، قَالَ : فَيَبْتَدِرُ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَرَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ ، فَقَالَ " كُونَا بِفَمِ الشِّعْبِ " . وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - هُوَ وَأَصْحَابُهُ قَدْ نَزَلُوا الشِّعْبَ مِنَ الْوَادِي ، فَلَمَّا خَرَجَ الرَّجُلَانِ إِلَى فَمِ الشِّعْبِ ، قَالَ الْأَنْصَارِيُّ لِلْمُهَاجِرِيِّ : أَيُّ اللَّيْلِ تُحِبُّ أَنْ أَكْفِيَكَ : أَوَّلَهُ أَوْ آخِرَهُ ، قَالَ : بَلِ اكْفِنِي أَوَّلَهُ . قَالَ : فَاضْطَجَعَ الْمُهَاجِرِيُّ ، فَنَامَ وَقَامَ الْأَنْصَارِيُّ يُصَلِّي ، وَأَتَى الرَّجُلُ ، فَلَمَّا رَأَى شَخْصَ الرَّجُلِ ، عَرَفَ أَنَّهُ رَبِيئَةُ الْقَوْمِ ، فَرَمَاهُ بِسَهْمٍ فَوَضَعَهُ فِيهِ ، فَانْتَزَعَهُ فَوَضَعَهُ وَثَبَتَ قَائِمًا ، ثُمَّ رَمَاهُ بِسَهْمٍ آخَرَ ، فَوَضَعَهُ فِيهِ ، فَانْتَزَعَهُ ، فَوَضَعَهُ وَثَبَتَ قَائِمًا ، ثُمَّ عَادَ لَهُ بِالثَّالِثِ ، فَوَضَعَهُ فِيهِ ، فَنَزَعَهُ ، فَوَضَعَهُ ثُمَّ رَكَعَ ثُمَّ سَجَدَ ، ثُمَّ أَهَبَّ صَاحِبَهُ ، فَقَالَ لَهُ : اجْلِسْ فَقَدْ أُثْبِتُّ فَوَثَبَ فَلَمَّا رَآهُمَا الرَّجُلُ عَرَفَ أَنْ قَدْ نُذِرُوا بِهِ فَهَرَبَ ، فَلَمَّا رَأَى الْمُهَاجِرِيُّ مَا بِالْأَنْصَارِيِّ مِنَ الدِّمَاءِ ، قَالَ : سَبْحَانَ اللَّهِ ! أَفَلَا أَهْبَبْتَنِي ؟! وَقَالَ أَبُو كُرَيْبٍ : أَفَلَا أَنْبَهْتَنِي أَوَّلَ مَا رَمَاكَ ؟! قَالَ : كُنْتُ فِي سُورَةٍ أَقْرَؤُهَا ، فَلَمْ أُحِبَّ أَنْ أَقْطَعَهَا حَتَّى أُنْفِدَهَا ، فَلَمَّا تَابَعَ عَلَيَّ الرَّمْيَ رَكَعْتُ فَآذَنْتُكَ ، وَايْمُ اللَّهِ لَوْلَا أَنْ أُضَيِّعَ ثَغْرًا أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - بِحِفْظِهِ ، لَقُطِعَ نَفَسِي قَبْلَ أَنْ أَقْطَعَهَا أَوْ أُنْفِدَهَا