৪৬৩৯

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাম

৪৬৩৯-[১২] উসামাহ্ ইবনু যায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সমবেত জনতার নিকট দিয়ে গমন করলেন, যাদের মধ্যে রয়েছে মুসলিম, মুশরিক তথা পৌত্তলিক ও ইয়াহূদী। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে সালাম দিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ السَّلَامِ

وَعَن أُسامة بن زيد: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ بِمَجْلِسٍ فِيهِ أَخْلَاطٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُشْرِكِينَ عَبَدَةِ الْأَوْثَانِ وَالْيَهُودِ فَسَلَّمَ عَلَيْهِمْ

ব্যাখ্যাঃ ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ মুসলিম ও কাফির মিশ্রিত মাজলিসের পাশ দিয়ে গমন করার সুন্নাত হলো ব্যাপকার্থক শব্দের দ্বারা সালাম প্রদান করে মুসলিমদেরকে উদ্দেশ্য করা।

ইবনুল ‘আরাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অনুরূপভাবে সুন্নাতের অনুসারী ও বিদ্‘আতী, ন্যায়পরায়ণ ও পাপী এবং বন্ধু ও শত্রু মিশ্রিত মাজলিসে সালাম দেয়া বৈধ।

কতিপয় লোক ইয়াহূদী নাসারাদের সালাম প্রদান করা যাবে বলে মত পেশ করেন। তারা এর দলীল হিসেবে কুরআনে বর্ণিত ইব্রাহীম (আ.)-এর পিতা সম্পর্কে উক্তিটি এবং ইমাম ত্বীবী কর্তৃক ইবনু ‘উয়াইনাহ্-এর হাদীসটি উল্লেখ করেন। যেহেতু ইব্রাহীম (আ.) তার পিতাকে বলেন, ‘‘সালা-মুন ‘আলায়কা’’। অন্য জায়গায় আল্লাহ বলেন, لَا يَنْهَاكُمُ اللهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ ‘‘দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেনি, আর তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ী থেকে বের ক’রে দেয়নি...’’- (সূরাহ্ আল মুমতাহিনাহ্ ৬০ : ৮)।

কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) এ ধরনের আয়াতের এবং ইবরাহীম (আ.)-এর উক্তির জবাব দিয়ে বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তার সাথে সন্ধি করা বা তার থেকে দূরে থাকতে চাওয়া। আসলে এটা সম্ভাষণের জন্য ছিল না। কোন সালাফে সলিহীন এক্ষেত্রে স্পষ্টরূপে বলেছেন যে, وقل سلام فسوف تعلمون আয়াতটি যুদ্ধের আয়াত দ্বারা মানসূখ হয়ে গেছে।

ইমাম ত্ববারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও উসামাহ্ ইবনু যায়দ (রাঃ)-এর হাদীসের মাঝে বৈপরীত্য নেই। কারণ, আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর হাদীসটি ‘আম এবং উসামার হাদীসটি খাস। এটি বন্ধুত্ব, প্রতিবেশী ও প্রতিদান দেয়ার মতো প্রয়োজন ছাড়া সালাম দেয়ার বিষয়টির কারণে আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর হাদীস থেকে খাস হয়েছে। এখানে সালাম দেয়া নিষেধ বলতে শারী‘আতসম্মত সালাম দেয়া নিষেধ উদ্দেশ্য। অতএব যদি কেউ এমন শব্দ প্রয়োগ করে সালাম দেয় যাতে অমুসলিমরা বের হয়ে যায়, তাহলে সেটা জায়িয। যেমন কেউ বলল, اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ ‘‘আমাদের ও আল্লাহর সকল পুণ্যবান বান্দার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক’’ এ ধরনের বাক্য ব্যবহার করা জায়িয। যেমনিভাবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিরাক্বিল ও তার মতো অন্যদেরকে যখন চিঠি লিখতেন তখন বলতেন, السَّلَامُ عَلٰى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدٰى অর্থাৎ- যে হিদায়াতের (ইসলামের) অনুসারী তার ওপরে সালাম।

‘আবদুর রাযযাক থেকে কতাদাহ্ বলেনঃ যখন তুমি আহলে কিতাবদের বাড়ীতে প্রবেশ করবে তখন السَّلَامُ عَلٰى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدٰى বলে সালাম দিবে।

আবূ মালিক-এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, যখন তুমি মুশরিকদের সালাম দিবে তখন বলবে, اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ তাহলে তারা ভাববে তুমি তাদেরকে সালাম দিয়েছ অথচ তুমি তাদের নিকট থেকে সালাম ফিরিয়ে নিয়েছ। (ফাতহুল বারী ১১শ খন্ড, হাঃ ৬২৫৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ