৪৬৩৮

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাম

৪৬৩৮-[১১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহূদীদের একটি দল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুমতি চাইল এবং বলল : ’’আসসামু ’আলায়কুম’’ অর্থাৎ- ’’তোমাদের মৃত্যু হোক’’। আমি তাদের উত্তরে বললামঃ ’’বরং তোমাদের মৃত্যু হোক’’ এবং ’’অভিসম্পাতও হোক’’। (এ কথা শুনে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ হে ’আয়িশাহ্! আল্লাহ তা’আলা স্বয়ং কোমল, তিনি সকল কাজে কোমলতাকে পছন্দ করেন।

তখন আমি (’আয়িশাহ্) বললামঃ আপনি কি শুনেননি, তারা কি বলেছে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আমি তো তাদের জবাবে ’’ওয়া ’আলায়কুম’’ বলে দিয়েছি। অপর এক রিওয়ায়াতে শুধু عَلَيْكُمْ রয়েছে, وَاوْ অক্ষরটি উল্লেখ করা হয়নি। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

বুখারী’র আরেক বর্ণনায় আছে, ’আয়িশাহ্ সিদ্দিকা (রাঃ) বলেনঃ একদল ইয়াহূদী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বলল : ’’আসসামু ’আলায়কা’’ (তোমার মৃত্যু হোক)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ ’’ওয়া ’আলায়কুম’’ (তোমাদেরও মৃত্যু হোক)। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেনঃ ’’তোমাদের মৃত্যু হোক, আল্লাহর অভিসম্পাত হোক, আল্লাহর গযব তোমাদের ওপর পতিত হোক।’’ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে ’আয়িশাহ্! থামো, তোমার কোমল হওয়া উচিত, কঠোরতা পরিহার করো, অশ্লীল ভাষা হতে বেঁচে থাকো। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেনঃ আপনি কি শুনেননি, তারা কি বলল? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি কি শুননি, আমি কি জবাব দিয়েছি? আমি তাদের কথাকে তাদের দিকেই ফিরিয়ে দিয়েছি। তাদের ব্যাপারে আমার দু’আ কবুল হবে, আমার জন্য তাদের দু’আ কবুল হবে না। মুসলিম-এর অপর বর্ণনায় রয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ হে ’আয়িশাহ্! তুমি অযথা অশ্লীল কথা বলো না। কেননা আল্লাহ তা’আলা অশালীনতা ও অশ্লীলতা পছন্দ করেন না।

بَابُ السَّلَامِ

وَعَن عائشةَ قَالَتْ: اسْتَأْذَنَ رَهْطٌ مِنَ الْيَهُودِ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا السَّامُ عَلَيْكُمْ. فَقُلْتُ: بَلْ عَلَيْكُمُ السَّامُ وَاللَّعْنَةُ. فَقَالَ: «يَا عَائِشَةُ إِنَّ اللَّهَ رَفِيقٌ يُحِبُّ الرِّفْقَ فِي الْأَمْرِ كُلِّهِ» قُلْتُ: أَوَلَمْ تَسْمَعْ مَا قَالُوا؟ قَالَ: «قَدْ قُلْتُ وَعَلَيْكُمْ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «عَلَيْكُمْ» وَلم يذكر الْوَاو وَفِي رِوَايَةٍ لِلْبُخَارِيِّ. قَالَتْ: إِنَّ الْيَهُودَ أَتَوُا النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالُوا: السَّام عَلَيْكَ. قَالَ: «وَعَلَيْكُمْ» فَقَالَتْ عَائِشَةُ: السَّامُ عَلَيْكُمْ وَلَعَنَكُمُ اللَّهُ وَغَضِبَ عَلَيْكُمْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَهْلًا يَا عَائِشَةُ عليكِ بالرِّفق وإِياك والعنفَ والفُحْشَ» . قَالَت: أَو لم تسمع مَا قَالُوا؟ قَالَ: «أَو لم تَسْمَعِي مَا قُلْتُ رَدَدْتُ عَلَيْهِمْ فَيُسْتَجَابُ لِي فِيهِمْ وَلَا يُسْتَجَابُ لَهُمْ فِيَّ» وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ. قَالَ: «لَا تَكُونِي فَاحِشَةً فَإِنَّ اللَّهَ لَا يُحبُّ الفُحْشَ والتفحُّش»

ব্যাখ্যাঃ (الرِّفْقَ) শব্দের অর্থ لين الجانب তথা কোমল বা সদয় আচরণ করা। এটা العنف তথা কঠোর আচরণ এর বিপরীত। الفحش এর অর্থ মন্দ কথা বা কাজ। কেউ সীমালঙ্ঘনকে الفحش বলেছেন।

এ হাদীসটি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মহৎ চরিত্র ও পূর্ণ ধৈর্যশীলতার এক উজ্জ্বল প্রমাণ। এতে মহানুভবতা, সদয় আচরণ, সহিষ্ণুতা, কঠোরতা অবলম্বনের প্রয়োজন ব্যতিরেকে মানুষের সাথে কোমল আচরণের প্রতি উৎসাহ প্রদানের ইঙ্গিত সুস্পষ্ট বিদ্যমান। (শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২১৬৫)

এ হাদীস থেকে আরো বুঝা যায় যে, যখন কোন যালিম কারো প্রতি বদ্দু‘আ করে, তখন তার প্রার্থনা কবুল করা হয় না। যেহেতু আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ ‘‘কাফিরদের আহবান ভ্রষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়’’- (সূরাহ্ আর্ রা‘দ ১৩ : ১৪)। (ফাতহুল বারী ১১শ খন্ড, হাঃ ৬৪০১)