৪৬০২

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা

৪৬০২-[১১] কতাদাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা এসব নক্ষত্র তিন উদ্দেশে সৃষ্টি করেছেন। ১. আকাশের শোভা বৃদ্ধি, ২. জীন-শয়তানদের বিতাড়িত করা এবং ৩. পথভোলা পথিকের দিক নির্ণয়। আর যে কেউ এছাড়া অন্য কোন উদ্দেশে বর্ণনা করে, সে মারাত্মক ভুল করে এবং নিজের ভাগ বরবাদ করে। আর এমন অসাধ্য সাধনের পিছনে পড়ে, যে বিষয়ে তার কোন জ্ঞান নেই। (বুখারী; ইমাম বুখারী তা’লীক অর্থাৎ- সানাদবিহীন অবস্থায় হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)[1]

আর ইমাম রযীন বর্ণনা করেছেন যে, এমন একটি কাজের পিছনে কষ্ট করল যা তার কোন উপকারে আসবে না এবং সে বিষয়ে তার সামান্যতম জ্ঞানও নেই। যার তথ্য জানতে আল্লাহর নবীগণ ও মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাকুল) অক্ষম রয়েছেন।

وَعَن قتادةَ قَالَ: خلقَ اللَّهُ تَعَالَى هَذِه النجومَ لثلاثٍ جَعَلَهَا زِينَةً لِلسَّمَاءِ وَرُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ وَعَلَامَاتٍ يُهْتَدَى بهَا فَمن تأوَّلَ فِيهَا بِغَيْرِ ذَلِكَ أَخَطَأَ وَأَضَاعَ نَصِيبَهُ وَتَكَلَّفَ مَالا يَعْلَمُ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ تَعْلِيقًا وَفِي رِوَايَةِ رَزِينٍ: «تكلّف مَالا يعنيه ومالا عِلْمَ لَهُ بِهِ وَمَا عَجَزَ عَنْ عِلْمِهِ الْأَنْبِيَاء وَالْمَلَائِكَة»

ব্যাখ্যাঃ (جَعَلَهَا زِينَةً لِلسَّمَاءِ وَرُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ) অর্থাৎ মহান আল্লাহ বলেনঃ وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ ‘‘আর আমরা দুনিয়ার আসমানকে বাতিসমূহ দ্বারা সুসজ্জিত করেছি এবং শয়তানকে তাড়ানোর জন্য নিক্ষেপযোগ্য করেছি।’’ (সূরাহ্ আল মুলক ৬৭ : ৫)

(وَعَلَامَاتٍ يُهْتَدَى بهَا) মহান আল্লাহ বলেন, وَبِالنَّجْمِ هُمْ يَهْتَدُونَ ‘‘আর চিহ্নসমূহ যেন তারা নক্ষত্র দ্বারাও পথ পায়।’’ (সূরাহ্ আন্ নাহল ১৬ : ১৬)

(فَمن تأوَّلَ فِيهَا بِغَيْرِ ذٰلِكَ) অর্থাৎ যে ব্যক্তি নক্ষত্রের উল্লেখিত উপকার ছাড়া অন্য কোন উপকারের কথা উল্লেখ করে (أَخَطَأَ) অর্থাৎ যেন সে ঝোপে কুড়াল মারে।

(وَأَضَاعَ نَصِيبَهٗ) অর্থাৎ তার জীবনের তথা বয়সের অংশ। আর তা হলো, ইহকালে-পরকালে তার উপকার করবে ও সাহায্য করবে।

(وَتَكَلَّفَ مَالا يَعْلَمُ) অর্থাৎ এমন বিষয় যে সম্পর্কে তার কোন জ্ঞান নেই। কেননা আসমানের সংবাদ কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ব্যতীত জানা যায় না। চোর-জীনদের নিকট থেকে জ্যোতির্বিদ কিছু সংবাদ শোনে। সে যখন সেটা প্রচার করতে থাকে তখন কতক জ্ঞানী ব্যক্তি তাকে বলে, জমিনে যা হয় তুমি তো সে সব জানো না, তবে আসমানে খবর জানার দাবী তুমি কিভাবে করো?

(تكلّف مَالا يعنيه) অর্থাৎ ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য হলো, সে অনর্থক বিষয়কে পরিহার করবে।

(ومالا عِلْمَ لَهٗ بِه) এখানে সম্পূর্ণভাবে জ্ঞান নেই বোঝানো হয়েছে। আংশিক বুঝানো হয়নি। যেমনটি জ্যোতির্বিদগণ মনে করেছে। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) এ কথা বলেছেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)