লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৫৬৯-[৫৬] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কয়েকজন সাহাবী তাঁকে (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) বললেনঃ কাম্আত (ব্যাঙের ছাতা) হলো জমিনের বসন্ত। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ব্যাঙের ছাতা তো মান্ন সদৃশ। এটার পানি চক্ষু রোগের ঔষধবিশেষ। আর ’আজওয়াহ্ (খেজুর) জান্নাতী ফল। তা বিষনাশক।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ আমি তিনটি অথবা পাঁচটি অথবা সাতটি ব্যাঙের ছাতা নিয়ে তার রস নিংড়িয়ে একটি শিশির মধ্যে রাখলাম। অতঃপর আমার এক রাতকানা দাসীর চোখের মধ্যে সে পানি সুরমার সাথে ব্যবহার করলাম। তাতে সে আরোগ্য লাভ করল। (তিরমিযী; তিনি বলেছেনঃ এ হাদীসটি হাসান।)[1]
الْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَن أبي هريرةَ إِنَّ نَاسًا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالُوا لرسولِ الله: الْكَمْأَةُ جُدَرِيُّ الْأَرْضِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْكَمْأَةُ مِنَ الْمَنِّ وَمَاؤُهَا شِفَاءٌ لِلْعَيْنِ وَالْعَجْوَةُ مِنَ الْجَنَّةِ وَهِيَ شِفَاءٌ مِنَ السُّمِّ» . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: فَأَخَذْتُ ثَلَاثَةَ أَكْمُؤٍ أَوْ خَمْسًا أَوْ سَبْعًا فَعَصَرْتُهُنَّ وَجَعَلْتُ مَاءَهُنَّ فِي قَارُورَةٍ وَكَحَّلْتُ بِهِ جَارِيَةً لِي عَمْشَاءَ فَبَرَأَتْ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حسن
ব্যাখ্যাঃ (جُدَرِيُّ الْأَرْضِ) কমূস গ্রন্থে এসেছে যে, جُدَرِيُّ ‘জিম’ বর্ণে পেশ অথবা যবর যোগে। শরীরে ক্ষত হওয়াকে বলে। যা ফোসকা পড়ে ও পুঁজ বের হয়।
নিহায়াহ্ গ্রন্থে এসেছে, (الْكَمْأَةُ) এর সাথে সাদৃশ্য করা হয়েছে, আর جُدَرِيُّ হলো এমন গোটা (দানা) যা শিশুর শরীরে প্রকাশ পায়। যেভাবে كَمْأَةُ জমিনের মধ্য থেকে প্রকাশ পায়। ঠিক তেমনিভাবে جُدَرِىُّ চামড়ার মধ্য থেকে প্রকাশ পায়।
(الْكَمْأَةُ مِنَ الْمَنِّ) অর্থাৎ মহান আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি যা অনুগ্রহ করেছেন তার অন্তর্ভুক্ত। এটাও বলা হয় যে, مَنِّ ‘মান্ন’ এর সাদৃশ্য করা হয়েছে। আর তা হলো, সেই সুমিষ্ট মধু যা আসমান থেকে অবতীর্ণ করা হয়েছিল। যা খাঁটি ছিল। তাতে কোন অসুখ ছিল না। আর অনুরূপই হলো ছত্রাক كَمْأَةُ তা পান করার ফলে কোন ক্ষতি হবে না। দ্বিতীয়টি বেশি স্পষ্ট, যেমন বর্ণিত হয়েছে- كَمْأَةُ ‘কামআহ্’ ছত্রাক مَنِّ ‘মান্ন’-এর অন্তর্ভুক্ত। আর মান্ন জান্নাত থেকে এসেছে।
‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ যখন জাহিলী যুগের লোকেরা তাকে দোষারোপ করত এবং অতিরিক্ত (খারাপ জিনিস) মনে করত যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। এ কারণে জমিন ছত্রাক আকারে বাহ্যিকভাবে তাকে প্রতিরোধ করে। তাদের বিশ্বাস যখন এরূপ ছিল তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে প্রশংসা করলেন অর্থাৎ তা অতিরিক্তের মধ্যে শামিল নয়। বরং তা আল্লাহর অনুগ্রহ এবং বান্দার প্রতি তার দয়ার চিহ্ন। এটি ক্ষতিকারক কোন কিছু না। বরং এটি মানুষের জন্য আরোগ্য লাভের উপকরণ যেমনটিভাবে আসমান থেকে অবতীর্ণ মান্ন আরোগ্য লাভের উপকরণ।
(وَمَاؤُهَا شِفَاءٌ لِلْعَيْنِ) ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ)-এর শারহু মুসলিমে এসেছে, এটা কেবল তারই পানি। বলা হয়ে থাকে, এ পানির সাথে ঔষধ মিশ্রিত করা হলে সেই পানি। বলা হয়ে থাকে, চোখের উত্তাপ হতে ঠাণ্ডা করার জন্য কেবলমাত্র ছত্রাকের পানি আরোগ্য স্বরূপ। আর যদি অন্য অসুখের জন্য হয় তবে এ পানির সাথে অন্য ঔষধ মিশানো যায়। চোখের অসুখের জন্য কেবল এ পানি ব্যবহার করা উপযোগী এটিই সঠিক কথা। আমিও আমার যুগের একজনকে দেখেছি যার চোখের দৃষ্টি চলে যাওয়ার কারণে সুরমার সাথে এ পানি ব্যবহার করত, ফলে সে আরোগ্য লাভ করত, তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)