লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - চুল আঁচড়ানো
৪৪২১-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করো। অর্থাৎ- দাড়ি বাড়াও এবং গোঁফ খাটো করো। অপর এক বর্ণনায় আছে, গোঁফ ছেঁটে নাও এবং দাড়ি লম্বা করো। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ التَّرَجُّلِ
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: خَالِفُوا الْمُشْرِكِينَ: أَوْفِرُوا اللِّحَى وَأَحْفُوا الشَّوَارِبَ . وَفِي رِوَايَةٍ: «أنهكوا الشَّوَارِب وأعفوا اللحى»
ব্যাখ্যাঃ (خَالِفُوا الْمُشْرِكِينَ) মুশরিকদের বিরোধিতা করো। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে সহীহ মুসলিম-এর ব্বিরণে রয়েছে, خالفوا المجوس অর্থাৎ অগ্নিপূজকদের বিরোধিতা করো। ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর হাদীসের উদ্দেশ্য এটাই। কেননা তাদের অনেকে দাড়ি কেটে ফেলতো আবার অনেকে কামিয়ে ফেলতো এবং গোঁফ ছেড়ে দিতো। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৮৯২)
(أَوْفِرُوا اللِّحٰى) অর্থাৎ দাড়িকে পরিপূর্ণরূপে বৃদ্ধি করো। ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর বর্ণনায় দাড়ি বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে أوفِروا، وفِّروا، أعفوا শব্দ বর্ণিত হয়েছে। আবার আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে সহীহ মুসলিম-এর ব্বিরণে أَرْخُوا،أرْجِئُوا، أوفُوا শব্দ এসেছে।
ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সব বর্ণনা মিলে পাঁচ ধরনের শব্দ এসেছে। সব বর্ণনারই মর্ম এক। অর্থাৎ দাড়িকে তার আপন গতিতে লম্বা হতে দেয়া এবং বৃদ্ধি ও পরিপূর্ণ করা। হাদীসের শব্দ এটাই দাবী করে। আমাদের ইমামগণের অনেকে এবং অন্যান্য অনেকেই এ মত পোষণ করেন। (শারহুন নাবাবী ৩য় খন্ড, হাঃ ২৫৯/৫২)
দাড়ির বেলায় এসব হাদীসের আলোকে অনেক ‘আলিমের মতে দাড়ি কোন অবস্থায় কাটা বৈধ নয়। বরং তাকে তার আপন গতিতে বাড়তে দিতে হবে। আবার অনেক ‘আলিম মনে করেন, দাড়ি অধিক লম্বা হলে এক মুষ্টির অতিরিক্তটুকু কাটা বৈধ রয়েছে। সহীহুল বুখারীর হাদীসে রয়েছে-
وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا حَجَّ أَوِ اعْتَمَرَ ، قَبَضَ عَلى لِحْيَتِه ، فَمَا فَضَلَ ، أَخَذَهٗ
‘‘আর ইবনু ‘উমার (রাঃ) যখন হজ্জ বা ‘উমরাহ্ করতেন, তিনি তাঁর দাড়িকে মুঠ দিয়ে ধরতেন, মুষ্টির অতিরিক্ত যা হত তা কেটে ফেলতেন।’’
ফাতহুল বারীতে ইমাম ত্ববারীর বরাতে লিখেন, একদল ‘আলিম হাদীসের বাহ্যিক অর্থের উপর মত দিয়েছেন। তাই তারা মনে করেন, দাড়ির পার্শ্ব থেকে বা তার লম্বা থেকে যে কোন কিছু কাটা মাকরূহ। আবার আরেক দল মনে করেন, এক মুষ্টির উপরে হলে অতিরিক্তটুকু কাটা জায়িয। তাদের দলীল ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর কর্ম। তিনি অতিরিক্তটুকু কেটেছেন। ‘উমার (রাঃ)-ও এক ব্যক্তির বেলায় এমনটি করেছেন বলে তারা বর্ণনা করেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ)-ও এমনটি করেছেন বলে ব্বিরণ দেন। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৮৯২)
(أَحْفُوا الشَّوَارِبَ) গোঁফ কর্তন করো।أَحْفُوا শব্দের অর্থ কর্তন করা। গোঁফ কর্তনের বেলায় পরবর্তী যে শব্দটি ব্যবহার হয়েছে সেটি (أنهكوا) কাটার ক্ষেত্রে মুবালাগাহ্ বা আধিক্য করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
গোঁফের কাটা সুন্নাত নাকি হলক তথা কামিয়ে নেয়া সুন্নাত তা আমরা উপরের হাদীসের ব্যাখ্যায় জেনেছি।