১২১২

পরিচ্ছেদঃ

১২১২। আমি এরূপ (অর্থাৎ দু’সালাতকে একত্রিত করে আদায়) করেছি যাতে আমার উম্মাত সমস্যায় না পড়ে।

হাদীসটি দুর্বল।(কিন্তু পরবর্তীতে তিনি হাদীসটিকে "সিলসিলাহ সহীহাহ" গ্রন্থে (২৮৩৭) সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। অতএব হাদীসটি এখানে দুর্বল হিসেবে আখ্যা দেয়া হলেও হাদীসটি সহীহ। যদিও হাদীসটি ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে)।

হাদীসটি ত্ববারানী “আল-মুজামুল আওসাত” গ্রন্থে (৪২৭৬) আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দিল কুদ্দূস হতে, তিনি আ’মাশ হতে, তিনি আব্দুর রহমান ইবনু সারওয়ান হতে, তিনি যাযান হতে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু মাসউস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহর ও আসরের সালাতকে একত্রিত করে এবং মাগরিব ও ইশাকে একত্রিত করে আদায় করেছেন। এ সময় তাকে এর কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উপরোক্ত হাদীস উল্লেখ করেন।

ত্ববারানী বলেনঃ আ’মাশ হতে আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দিল কুদ্দুস ব্যতীত অন্য কেউ বর্ণনা করেননি।

আমি (আলবানী) বলছিঃ এ আব্দুল্লাহ্ জামহুরের নিকট দুর্বল। ইবনু মা’ঈন, আবু দাউদ, নাসাঈ, দারাকুতনী প্রমুখ তাকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। এ কারণেই হাফিয যাহাবী "আয-যুয়াফা" গ্রন্থে বলেনঃ তাকে মুহাদ্দিসগণ দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।

হাফিয ইবনু হাজার "আত-তাকরীব" গ্রন্থে বলেনঃ তিনি সত্যবাদী তবে তাকে রাফেযী হওয়ার দোষে দোষী করা হয়েছে। তিনি ভুলও করতেন।

হায়সামী (২/১৬১) বলেনঃ হাদীসটি ত্ববারানী “আল-আওসাত” এবং “আল-কাবীর” গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। এর সনদে আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দিল কুদ্দুস রয়েছেন, তাকে ইবনু মাঈন ও নাসাঈ দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। আর ইবনু হিব্বান নির্ভরযোগ্য আখ্যা দিয়েছেন। ইমাম বুখারী বলেনঃ তিনি সত্যবাদী তবে তিনি দুর্বল বর্ণনাকারীদের থেকে বর্ণনা করেন। আমি (হায়সামী) বলছিঃ তিনি এ হাদীসটি নির্ভরযোগ্য আ’মাশ হতে বর্ণনা করেছেন।

আমি (আলবানী) বলছিঃ জি হ্যাঁ, আ’মাশ নির্ভরযোগ্য। আর ইমাম বুখারী যে তাকে সত্যবাদী আখ্যা দিয়েছেন, তার এ কথা এ বর্ণনাকারীর দুর্বল হওয়াকে উড়িয়ে দেয় না। কারণ সর্বোচ্চ তার ব্যাপারে এ কথা বলা যেতে পারে যে, তিনি সত্যবাদী মিথ্যা বলতেন না। আর এ কারণেই হাফিয যাহাবী ও ইবনু হাজার আসকালানী তাকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে সালাত একত্রিত করে আদায় করা মর্মে সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছেঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহর ও আসরের সালাতকে এবং মাগরিব ও এশার সালাতকে মদীনাতে কোন ভয় এবং বৃষ্টি জনিত কারণ ছাড়াই একত্রিত করে আদায় করেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, তিনি কী উদ্দেশ্যে তা করেছেন? তিনি বলেনঃ তিনি এর দ্বারা তার উম্মাতকে সমস্যায় না ফেলাকে উদ্দেশ্য করেছেন।

হাদীসটি ইমাম মুসলিম (৭০৫), তিরমিযী (১৮৭), নাসাঈ (৬০২), আবু দাউদ (১২১১) ও আহমাদ (১৯৫৪) বর্ণনা করেছেন।

অতএব আলোচ্য হাদীসটি আসলে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিই। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দিল কুদ্দূস এ ক্ষেত্রে দুদিক দিয়ে ভুল করেছেনঃ

১। তিনি হাদীসটিকে মুসনাদু আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ)-এর অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছেন অথচ হাদীসটি ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।

২। যাতে তার উম্মাতের জন্য সমস্যা না হয় এ অংশটুকুকে তিনি মারফু’ বানিয়ে ফেলেছেন অথচ এ অংশটুকু মওকুফ।

উপকারিতাঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীস প্রমাণ করছে যে, সমস্যা দূর করার লক্ষ্যে উভয় সালাতকে একত্রিত করা জায়েয আছে। সর্বদাই একত্রিত করা যাবে বিষয়টি এমন নয়।

অনুবাদক কর্তৃক বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কেউ কেউ বলে থাকেন যে, এ জমা করার দ্বারা জমা সূরী বুঝানো হয়েছে। যার প্রমাণ বহন করছে নিম্নোক্ত হাদীসঃ

ইমাম ত্ববারানী “আল-মুজামুল কাবীর” গ্রন্থে (১০/৪৭/৯৮৮০) মুহাম্মাদ ইবনু আদিল্লাহ্ হাযরামী হতে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনু জাফার ইবনে আবী মাওয়াতিয়া হতে, তিনি মুয়াবিয়্যাহ ইবনু হিশাম হতে, তিনি আবু মালেক নাখাঈ হতে (তার নাম আব্দুল মালেক ইবনুল হুসায়েন), তিনি হাজ্জাজ ইবনু আরতাত হতে, তিনি হাজ্জাজ হতে, তিনি আব্দুর রহমান ইবনু সারওয়ান হতে, তিনি হুযায়েল ইবনু শুরাহবীল হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ “রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিব ও এশার মধ্যে জমা করতেন, এটিকে (মাগরিবকে) তার শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত দেরী করে আদায় করতেন আর এটাকে (এশাকে) তার প্রথম ওয়াক্তে আদায় করতেন।"

কিন্তু এ হাদীসটি সহীহ নয় বরং খুবই দুর্বল। বর্ণনাকারী আবু মালেককে হায়সামী (২/১৫৯) দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। আর হাফিয ইবনু হাজার “আত-তাকরীব” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি মাতরূক। এছাড়া হাজ্জাজ হচ্ছেন ইবনু আরতাত, তিনি মুদাল্লিস। দেখুন "সিলসিলাহ সহীহাহ" (হাদীস নং ২৮৩৭ এর ব্যাখ্যা)।

[শাইখ আলবানী হাদীসটি সম্পর্কে উপরোক্ত আলোচনা করার পরেও "সিলসিলা সহীহাহ" গ্রন্থে মুসলিম শরীফে বর্ণিত ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীসের কারণে আলোচ্য হাদীসকে সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। এ থেকে বুঝা যায় তিনি পূর্বে হাদীসটিকে দুর্বল আখ্যা দিলেও পরবর্তীতে তিনি এটিকে সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। তবে কারণযুক্ত অংশটুকু মওকুফ, ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর বাণী]।

صنعت هذا (يعني الجمع بين الصلاتين) لكي لا تحرج أمتي ضعيف - رواه الطبراني في " الأوسط " (رقم - 4276) عن عبد الله بن عبد القدوس عن الأعمش عن عبد الرحمن بن ثروان عن زاذان عن عبد الله بن مسعود قال جمع رسول الله صلى الله عليه وسلم بين الأولى والعصر، وبين المغرب والعشاء ، فقيل له في ذلك فقال: فذكره. قال الطبراني لم يروه عن الأعمش إلا عبد الله قلت: وهو ضعيف عند الجمهور مثل ابن معين وأبي داود والنسائي والدارقطني وغيرهم. ولذلك قال الذهبي في الضعفاء " ضعفوه " وقال الحافظ في التقريب صدوق رمي بالرفض، وكان أيضا يخطىء والحديث قال الهيثمي (2/161) " رواه الطبراني في " الأوسط " و" الكبير "، وفيه عبد الله بن عبد القدوس؛ ضعفه ابن معين والنسائي، ووثقه ابن حبان، وقال البخاري: " صدوق، إلا أنه يروي عن أقوام ضعفاء ". قلت: وقد روى هذا عن الأعمش وهو ثقة قلت: نعم الأعمش ثقة، وقول البخاري في الراوي عنه: " صدوق " لا ينفي كونه ضعيفا، بل غاية ما فيه أنه صدوق لا يكذب، فإذا ثبت ضعفه الذهبي والعسقلاني كما سبق، فتأمل وأما قول الشوكاني في " نيل الأوطار " (3/92 - بولاق) وقال أبو حاتم: لا بأس به فغريب، لم أره من ذكره غيره، ولا أورده ابن أبي حاتم في كتابه (2/2/104) لا عن أبيه ولا عن غيره. والصحيح في هذا الباب حديث ابن عباس رضي الله عنه:" أن النبي صلى الله عليه وسلم جمع بين الظهر والعصر، وبين المغرب والعشاء، بالمدينة من غير خوف، ولا مطر، قيل لابن عباس: ما أراد بذلك؟ قال: أراد أن لا يحرج أمته أخرجه مسلم والأربعة إلا ابن ماجه، وهو مخرج في " الإرواء " (3/34 - 35) و" صحيح أبي داود " (1096) فالحديث إذن حديث ابن عباس أخطأ فيه عبد الله بن عبد القدوس، من وجهين الأول: أنه جعله من مسند ابن مسعود، وهو عن ابن عباس والآخر: أنه رفع التعليل بنفي الحرج وهو موقوف (فائدة) : واعلم أن حديث ابن عباس يدل على جواز الجمع في الإقامة لرفع الحرج، وليس مطلقا، فتنبه لهذا فإنه هام


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ