লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ
১২১১। তোমার পিতা আল্লাহকে ভয় করেনি যে, তার ব্যাপারে কোন পথ বের করা যাবে। অতএব তার থেকে স্ত্রী তিন ত্বলাক (তালাক)ের দ্বারা বেসুন্নাতী তরকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আর অবশিষ্ট নয়শত সাতানব্বই ত্বলাক (তালাক)ের গুনাহ্ তার কাঁধে।
হাদীসটি খুবই দুর্বল।
হাদীসটি ইবনু আদী “আল-কামেল” গ্রন্থে (কাফ ১/২৩৬) ও ত্ববারানী “আল-মুজামুল কাবীর” গ্রন্থে ওবাইদুল্লাহ ইবনুল অলীদ অসসাফী সূত্রে দাউদ ইবনু ইবরাহীম হতে, তিনি ওবাদাহ ইবনুস সামেত হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ আমার কোন এক পিতা তার স্ত্রীকে একই সময়ে এক হাজার ত্বলাক (তালাক) দিয়েছিলেন। তখন তার ছেলেরা তার বিষয়টি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললঃ হে আল্লাহর রসূল! আমাদের পিতা আমাদের মাকে এক হাজার ত্বলাক (তালাক) দিয়েছে, তার কোন পথ আছে কি? তিনি তখন উক্ত কথা বলেনঃ ...।
ইমাম ত্ববারানীর অন্য এক বর্ণনায় ওবাদাহ হতে আরো বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেনঃ আমার দাদা তার স্ত্রীকে এক হাজার ত্বলাক (তালাক) দিলে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ তোমার দাদা আল্লাহকে ভয় করে না? তিন ত্বলাক (তালাক) তার জন্য বহাল থাকল। আর নয়শত সাতানব্বইটি ত্বলাক (তালাক) হচ্ছে শত্রুতা পোষণ করা এবং সীমালঙ্ঘন। (আল্লাহ) চাইলে তাকে শাস্তি দিবেন আর চাইলে তাকে ক্ষমা করে দিবেন।
হায়সামী "মাজমাউয যাওয়াইদ" গ্রন্থে (৪/৩৩৮) বলেনঃ হাদীসটি ইমাম ত্ববারানী বর্ণনা করেছেন। এর সনদে ওবাইদুল্লাহ ইবনুল অলীদ অসসাফী আজলী বলেছেনঃ তিনি দুর্বল। হাফিয যাহাবী "আয-যুয়াফা" গ্রন্থে বলেনঃ তাকে মুহাদ্দিসগণ দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ তার ব্যাপারে ইবনু আদীর কথা সর্বাপেক্ষা বেশী গ্রহণযোগ্যঃ অসসাফী খুবই দুর্বল, তার দুর্বলতা তার থেকে বর্ণিত হাদীসেই প্রমাণিত হয়।
তিনি তার জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে এ হাদীসটিকে সেই সব হাদীসের মধ্যে উল্লেখ করেছেন যেগুলোকে হাদীস হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। অনুরূপভাবে হাফিয যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে একই কাজ করেছেনঃ তিনি উল্লেখ করেছেন যে, অসসাফী সম্পর্কে নাসাঈ ও ফাল্লাস বলেনঃ তিনি মাতরূক অর্থাৎ খুবই দুর্বল।
ইবনু হিব্বান "আয-যুয়াফা অল-মাতরূকীন" গ্রন্থে (২/৬৩) বলেনঃ তিনি খুবই মুনকারুল হাদীস। তিনি নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের উদ্ধৃতিতে তাই বর্ণনা করেছেন যেগুলো নির্ভরযোগ্যদের হাদীসের সাথে সাদৃশপূর্ণ নয়। এমনকি হৃদয়ে মনে হবে যে তিনি তা ইচ্ছাকৃতই করেছেন, অতএব তিনি প্রত্যাখ্যাত হওয়ারই উপযুক্ত।
আমি (আলবানী) বলছিঃ অসসাফী হাদীসটি দাউদ ইবনু ইবরাহীম হতে বর্ণনা করেছেন, আর তিনি (দাউদ) একজন মাজহুল (অপরিচিত) বর্ণনাকারী। তার সম্পর্কে হাফিয যাহাবী বলেছেন (আর আসকালানী তার অনুসরণ করেছেন) তাকে চেনা যায় না। আযদী বলেনঃ তার হাদীস সহীহ্ নয়।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ হাদীসটির সনদে খুবই দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও কাওসার পূর্বের হাদীসে উল্লেখিত তার গ্রন্থের মধ্যে সনদ সম্পর্কে কোন কথা না বলে চুপ থেকেছেন। বরং এমন কথা বলেছেন যা থেকে বুঝা যায় যে হাদীসটির ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। তিনি বলেছেনঃ ’হাদীসটি ত্ববারানী বর্ণনা করেছেন, অনুরূপভাবে "মুসনাদু আব্দুর রাযযাক" গ্রন্থে ওবাদাহ তার দাদা হতে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু আব্দুর রাযযাকের বর্ণনায় সমস্যা রয়েছে। তার কথা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, ত্ববারানীর বর্ণনাতে যেন কোন সমস্যা নেই। অথচ অবস্থা আসলে সেরূপ নয়, বরং ত্ববারানীর সনদেও দুটি সমস্যা রয়েছে।
কাওসারীর এরূপ কথায় ধোঁকায় না পড়ে নিজেকে সাবধানে রাখুন। কারণ তিনি তাদলীস করেছেন এবং মনোবৃত্তির অনুসরণ করেছেন, অন্যদেরকে বিভ্রান্তের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। য’ঈফ ও জাল হাদীস সিরিজের প্রথম খণ্ডে এরূপ আরো কিছু উদাহরণ উল্লেখ করেছি। উল্লেখ্য আমি (আলবানী) “মুসান্নাফ ইবনু আদির রাযযাক” গ্রন্থে বইরূত ছাপায় (১৩৯২ হিঃ) হাদীসটির সনদ সম্পর্কে অবগত হয়েছি, তিনি (১১৩৩৯) বলেছেনঃ আমাদেরকে হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবনুল আলা বর্ণনা করেছেন, তিনি ওবাইদুল্লাহ ইবনুল অলীদ আজালী হতে ...। এ ইয়াহইয়া ইবনুল আলা একজন মিথ্যুক ছিলেন। তা সত্ত্বেও কাওসার মিথ্যুকের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে শুধুমাত্র বলেছেনঃ সমস্যা রয়েছে যা পাঠকদেরকে ধোঁকায় ফেলবে এবং বিভ্রান্ত করবে।
إن أباكم لم يتق الله تعالى، فيجعل له من أمره مخرجا، بانت منه بثلاث على غير السنة، وتسعمائة وسبع وتسعون إثم في عنقه ضعيف جدا - أخرجه ابن عدي في " الكامل " (ق 236/1) والطبراني في " المعجم الكبير " من طريق عبيد الله بن الوليد الوصافي عن داود بن إبراهيم عن عبادة بن الصامت قال:" طلق بعض آبائي امرأته ألفا، فانطلق بنوه إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقالوا: يا رسول الله إن أبانا طلق أمنا ألفا، فهل له من مخرج؟ قال.. " فذكره وفي رواية للطبراني عن عبادة أيضا قال: " طلق جدي امرأة له ألف تطليقة، فانطلقت إلى النبي صلى الله عليه وسلم فسألته؟ فقال: أما اتقى الله جدك؟ ! أما ثلاثة فله، وأما تسعمائة وسبعة وتسعون فعدوان وظلم، إن شاء عذبه وإن شاء غفر له قال الهيثمي في " مجمع الزوائد " (4/338) :" رواه كله الطبراني، وفيه عبيد الله بن الوليد الوصافي العجلي وهو ضعيف وكذا قال الحافظ في " التقريب " أنه ضعيف وقال الذهبي في " الضعفاء ": " ضعفوه قلت: والأقرب قول ابن عدي فيه: " الوصافي ضعيف جدا، يتبين ضعفه على حديثه وفي ترجمته ساق له هذا الحديث في جملة ما أنكر عليه من حديثه، وكذلك صنع الذهبي في " الميزان "، وذكر أن النسائي والفلاس قالا في الوصافي: " متروك "، أي شديد الضعف وقال ابن حبان في " الضعفاء والمتروكين " (2/63) : " منكر الحديث جدا، يروي عن الثقات ما لا يشبه الأثبات، حتى يسبق إلى القلب أنه المعتمد له فاستحق الترك قلت: وهذا الحديث يرويه الوصافي عن داود بن إبراهيم، وهو مجهول. قال الذهبي وتبعه العسقلاني:لا يعرف، وقال الأزدي: لا يصح حديثه قلت: وكأن الأزدي عنى حديثه هذا. والله أعلم ومع هذا الضعف الشديد في إسناد هذا الحديث، فقد سكت عليه الشيخ زاهد الكوثري في كتابه المشار إليه في الحديث السابق، بل أوهم أنه لا علة فيه فإنه قال بعد أن ساقه من طريق الطبراني (ص 31) :" ومثله في " مسند عبد الرزاق " عن جده عبادة، إلا أن في رواية عبد الرزاق عللا فمفهوم هذا أن رواية الطبراني لا علل فيها، خلافا لرواية عبد الرزاق، وليس كذلك، فقد بينا لك أن في إسناد الطبراني علتين أيضا، فيصير الحديث بذلك ضعيفا جدا، فإياك أن تغتر بمقالات الكوثري وكتاباته فإنه على سعة اطلاعه وعلمه مدلس صاحب هو ى، وقد ذكرنا بعض الأمثلة على ذلك في الجزء الأول من هذه السلسلة ، وللشيخ عبد الرحمن بن يحيى المعلمي اليماني كتاب ضخم هام في الرد عليه والكشف عن أهو ائه وأضاليله، وتعصبه لمذهبه، على أئمة الحديث ورجاله، أسماه " التنكيل بما في تأنيب الكوثري من الأباطيل "، وهو في أربعة أقسام وقد كنت قمت على طبعه والحمد لله لأول مرة بتحقيقي وتعليقي في مجلدين، ثم طبع سرقة من بعض الناشرين؛ منهم من صوره على أخطائه المطبعية دون أي جهد ومنهم من طبعه بحرف جديد، وتصرف لا يليق، وقد أعدنا النظر فيه مجددا استعدادا لطبعة ثانية طبعة مصححة منقحة. والله ولي التوفيق ثم وقفت بعد سنين على إسناد عبد الرزاق في " مصنفه وقد طبع في بيروت سنة (1392 هـ) فإذا به يقول فيه (11339) : أخبرنا يحيى بن العلاء عن عبيد الله بن الوليد العجلي عن إبراهيم عن داود بن عبادة قال: طلق جدي امرأة.. فذكره هكذا وقع فيه: إبراهيم عن داود.. ولعله من تضليلات يحيى بن العلاء، فإنه كان كذابا وهذا يؤكد للقارىء ما ذكرته آنفا في حق الكوثري، وإلا لما جاز له أن يسكت عنه ويكتفي بقوله: " إن فيه عللا "! لأنه لا يقال هذا في اصطلاحهم وفيهم الكذاب! ! بل وفيه أيضا العلتان المتقدمتان في رواية الطبراني التي سكت عنها الكوثري مضللا للقراء! فتأمل كم في كلام الكوثري من تدليس وتضليل. نسأل الله السلامة