৩৭৬৪

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিচারকার্য এবং সাক্ষ্যদান

৩৭৬৪-[৭] ’আলকমাহ্ ইবনু ওয়ায়িল (রহঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদিন হাযরামাওত এবং কিনদাহ্ গোষ্ঠীর জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলো। অতঃপর হাযরামী গোষ্ঠীর লোকটি বললঃ হে আল্লাহর রসূল! এই ব্যক্তি আমার জমি জোর-জবরদস্তিভাবে দখল করে নিয়েছে। তখন কিনদী গোষ্ঠীর লোকটি বলল, উক্ত জমির মালিক আমি এবং তা আমারই তত্ত্বাবধানে আছে। তাতে ঐ লোকটির কোনো অধিকার নেই। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হায্রামীকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি কোনো দলীল-প্রমাণ আছে? সে বলল, না। তাহলে বিবাদীর (প্রতিপক্ষের) কসমই তোমার প্রাপ্য।

হাযরামী লোকটি বললঃ হে আল্লাহর রসূল! সে অসৎলোক। কিসের উপর কসম করছে, সে তার কোনো পরোয়া করে না, তার মধ্যে কোনো আল্লাহভীতি নেই। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তার ব্যাপারে তোমার জন্য তাছাড়া আর কোনো পথও খোলা নেই। অতঃপর সে কিনদী লোকটি যখন কসম করতে চাইল, তখন সে পিঠ ফিরে গেল। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি এ লোকটি প্রকৃতপক্ষে জোরপূর্বকভাবে অপরের সম্পত্তি ভোগ করার জন্য কসম করে, তাহলে সে আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে যে, আল্লাহ তা’আলা এ লোকটির প্রতি অসন্তুষ্ট থাকবেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْأَقْضِيَةِ وَالشَّهَادَاتِ

وَعَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ مِنْ حَضْرَمَوْتَ وَرَجُلٌ مِنْ كِنْدَةَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ الْحَضْرَمِيُّ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ هَذَا غَلَبَنِي عَلَى أَرْضٍ لِي فَقَالَ الْكِنْدِيُّ: هِيَ أَرْضِي وَفِي يَدِي لَيْسَ لَهُ فِيهَا حَقٌّ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلْحَضْرَمِيِّ: «أَلَكَ بَيِّنَةٌ؟» قَالَ: لَا قَالَ: «فَلَكَ يَمِينُهُ» قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الرَّجُلَ فَاجِرٌ لَا يُبَالِي عَلَى مَا حَلَفَ عَلَيْهِ وَلَيْسَ يَتَوَرَّعُ منْ شيءٍ قَالَ: «ليسَ لكَ مِنْهُ إِلَّا ذَلِكَ» . فَانْطَلَقَ لِيَحْلِفَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا أَدْبَرَ: «لَئِنْ حَلَفَ عَلَى مَالِهِ لِيَأْكُلَهُ ظُلْمًا لَيَلْقَيَنَّ اللَّهَ وَهُوَ عَنهُ معرض» . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: হাদীসের ব্যাখ্যায় ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ অত্র হাদীসে বলা হয়েছে, যারা অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখবে তাদের দিকে কিয়ামতের দিন তাকাবেন না, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন যেমন অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘‘আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে রহমাতের দৃষ্টি দিবেন না।’’ (সূরা আ-লি ‘ইমরান ৩ : ৭৭) [না‘ঊযুবিল্লাহ]

হাদীসের উল্লেখযোগ্য শিক্ষা:

১) যার হাতে সম্পদ আছে তার শক্তি বেশী।

২) বিবাদীকে অবশ্যই শপথ করতে হবে।

৩) যদি বাদী তার স্বপক্ষে দলীল উপস্থাপনে সক্ষম হয় তাহলে মাল বিবাদীর হাতে থাকলেও তা বাদীর হয়ে যাবে।

৪) মিথ্যা শপথ আর সত্য শপথের বিচার কার্যে কোনো পার্থক্য থাকে না কারণ মিথ্যা বলছে কি না এটাতো বিচারক মিথ্যাবাদীর বুক ফেড়ে দেখতে পারবেন না। তাই অদৃশ্যেও বিষয় নয় বরং বাহ্যিক না বুঝা যায় তার উপর ভিত্তি করেই বিচারপতি তার রায় প্রদান করবেন। (শারহে মুসলিম ২য় খন্ড, হাঃ ৬১; মিরকাতুল মাফাতীহ)