লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মোহর
৩২০৭-[৬] ’আলক্বমাহ্ (রহঃ) ইবনু মাস্’ঊদ হতে বর্ণনা করেন। একদিন জনৈক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, এক ব্যক্তি মোহর নির্ধারণ না করে বিয়ে করেছে এবং স্ত্রীর সাথে সহবাসের পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেছে; শারী’আতে এর বিধান কি? উত্তরে ইবনু মাস্’ঊদ বললেন, তার পরিবারের অপর নারীদের মোহরের সমপরিমাণ মোহর দিতে হবে। তা হতে কমও নয়, বেশিও নয় এবং স্ত্রীর ’ইদ্দত (৪ মাস ১০ দিন) পালন করতে হবে এবং স্ত্রী তার উত্তরাধিকারী হবে। এটা শুনে আশজা’ঈ গোত্রের এক সাহাবী মা’কল ইবনু সিনান দাঁড়িয়ে বললেন, আমাদের আশজা’ঈ গোত্রের এক স্ত্রীলোক বিরওয়া’ বিনতু ওয়াশিক সম্পর্কেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুরূপ বিধান কার্যকরী করেন। এতে ইবনু মাস্’ঊদ অত্যন্ত খুশী হলেন। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, দারিমী)[1]
وَعَنْ عَلْقَمَةَ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ: أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ رَجُلٍ تَزَوَّجَ امْرَأَةً وَلَمْ يَفْرِضْ لَهَا شَيْئا وَلم يدْخل بهَا حَتَّى مَاتَ فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ: لَهَا مِثْلُ صَدَاقِ نِسَائِهَا. لَا وَكْسَ وَلَا شَطَطَ وَعَلَيْهَا الْعِدَّةُ وَلَهَا الْمِيرَاثُ فَقَامَ مَعْقِلُ بْنُ سِنَانٍ الْأَشْجَعِيُّ فَقَالَ: قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بِرْوَعَ بِنْتِ وَاشَقٍ امْرَأَةٍ مِنَّا بِمِثْلِ مَا قَضَيْتَ. فَفَرِحَ بِهَا ابْنُ مَسْعُودٍ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ والدارمي
ব্যাখ্যা : ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) ছিলেন সাহাবীদের মধ্যে ফাকীহ সাহাবী। তিনি ঐ মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হন যে, মহিলার মোহর নির্ধারণ না করেই বিবাহ হয়, অতঃপর সহবাসের পূর্বেই তার স্বামী ইন্তেকাল করেন, এই মহিলার মোহর কি হবে? ‘ইদ্দত কতদিন এবং সে স্বামীর সম্পদের মীরাস পাবে কিনা? সাহাবী ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ একমাস ভরে ইজতিহাদ করে উত্তর দেন যে, মহিলা মোহরে মিসাল পাবে, এর কমও নয় বেশীও নয়।
ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) এ ফায়সালা দেয়ার পর বললেন, ‘‘আমি এ ফয়সালা দিলাম আমার পক্ষ থেকে, যদি সঠিক হয় তবে তা আল্লাহ ও তদীয় রসূলের পক্ষ থেকে, আর যদি ভুল হয় তবে তা এক বান্দার মায়ের পুত্র থেকে হয়েছে।’’ অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘‘যদি সঠিক হয় তবে তা আল্লাহ ও তদীয় রসূলের পক্ষ থেকে, আর যদি ভুল হয় তবে তা আমার পক্ষ থেকে এবং শায়ত্বনের পক্ষ থেকে, আল্লাহ ও তার রসূল এ থেকে দায় মুক্ত।’’ ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ -কে সত্যায়ন করে মা‘আকিল ইবনু সিনান এবং আবুল জার্রাহ্ বলেন, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিরওয়া বিনতু ওয়াসিক-এর কন্যার জন্য এমন ফায়সালাই দিয়েছিলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ এ কথা শুনে খুবই আনন্দিত হন, কারণ তার ইজতিহাদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ফায়সালার অনুকূল হয়েছে। পক্ষান্তরে ‘আলী সহ সাহাবীগণের একটি দল বলেন, মহিলার স্বামীর সাথে সহবাস বা একান্ত বাস না হওয়ায় সে মোহর পাবে না, তবে তার মীরাস এবং ‘ইদ্দত ধার্য হবে। এ ব্যাপারে ইমাম শাফি‘ঈ-এর অবশ্য উভয়বিধ বক্তব্য রয়েছে। ইমাম মুযহির (রহঃ) বলেন, ইমাম আবূ হানীফাহ্ এবং ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল-এর মাযহাব ইবনু মাস্‘ঊদ -এর মতের উপর।
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে এই ইখতিলাফ হলো ঐ মহিলার ব্যাপারে যার বিবাহে কোনো প্রকারের মোহর নির্ধারণ হয়নি এবং তার স্বামী তার সাথে সহবাসের পূর্বেই (স্বামী) মৃত্যুবরণ করল। কিন্তু যদি স্বামী সহবাস করে মৃত্যুররণ করে থাকে তাহলে সর্বসম্মত মতে স্ত্রীর জন্য মোহরে মিসাল ওয়াজিব হবে। কেউ যদি বিবাহ করে স্ত্রীর সাথে সহবাসের পূর্বেই তালাক প্রদান করে তাহলে ঐ মহিলার স্বামীর অর্থনৈতিক সামর্থ্যের উপর বিবেচনা করে বিচারক বা হাকিম তার জন্য মুত্‘আহ্’’ নির্ধারণ করে দিবেন। যেমন পরিধেয় বস্ত্র, ওড়না, আংটি ইত্যাদি। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২১১৪; তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১১৪৫)