লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের প্রচার, প্রস্তাব ও শর্তাবলী প্রসঙ্গে
৩১৪৯-[১০] ’আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সালাতের তাশাহ্হুদ এবং হাজাতের (অন্যান্য কাজে) তাশাহহুদ পাঠ করা শিখিয়েছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, সালাতের তাশাহহুদ হলো-
’’আত্তাহিয়্যাতু লিল্লা-হি ওয়াস্সলাওয়া-তু ওয়াত্ব ত্বইয়্যিবা-তু, আস্সালা-মু ’আলায়কা আইয়ুহান্ নবীয়্যু, ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহ্। আস্সালা-মু ’আলায়না- ওয়া ’আলা- ’ইবা-দিল্লা-হিস্ স-লিহীন, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ’আবদুহূ ওয়া রসূলুহ্’’
(অর্থাৎ- সকল প্রকার মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ’ইবাদাত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার ওপর আল্লাহর সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর সালাম বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোনো মা’বূদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রসূল।)
আর হাজাতের তাশাহহুদ হলো এই যে,
’’ইন্নাল হামদা লিল্লা-হি ওয়া নাস্তা’ঈনুহূ ওয়া নাস্তাগফিরুহূ ওয়ানা’ঊযুবিল্লা-হি মিন্ শুরূরি আনফুসিনা- মাই ইয়াহদিহিল্লা-হু ফালা- মুযিল্লা লাহূ ওয়ামাই ইউযলিল ফালা- হা-দিয়া লাহূ ওয়া আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান্ ’আবদুহূ ওয়া রসূলুহ্’’
(অর্থাৎ- সকল প্রশংসা আল্লাহর। আমরা তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি এবং তাঁর নিকট ক্ষমা চাই। আমরা তাঁর নিকট প্রার্থনা করছি নিজেদের মনের কুচিন্তা হতে। আল্লাহ যাকে হিদায়াত করেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না এবং যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন তাকে কেউ হিদায়াত করতে পারে না। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো মা’বূদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁরা বান্দা ও রসূল।)।
(রাবী ইবনু মাস্’ঊদ বলেন) অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনটি আয়াত পড়লেন- [১ম আয়াত] অর্থাৎ- ’’হে মু’মিনগণ! তোমার আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় কর এবং তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ কর না’’- (সূরা আ-লি ’ইমরান ৩ : ১০২)। [২য় আয়াত] অর্থাৎ- ’’হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নামে একে অপরের নিকট (স্বীয় অধিকার) প্রার্থনা কর এবং সতর্ক থাক আত্মীয়তার বন্ধন সম্পর্কে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ১)। [৩য় আয়াত] অর্থাৎ- ’’হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল, তাহলে আল্লাহ তোমাদের কর্মকা-কে ত্রুটিমুক্ত করবেন এবং তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন। যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে তারা অবশ্যই লাভ করবে মহাসাফল্য’’- (সূরা আল আহযা-ব ৩৩ : ৭১)।
(আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ, দারিমী)[1]
আর জামি’ আত্ তিরমিযীতে আছে যে, আয়াত তিনটি সুফ্ইয়ান সাওরী বর্ণনা করেছেন।
ইবনু মাজাহ الْحَمْدَ لِلّٰهِ ’’সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর’’ বাক্যের পর বাড়িয়ে বলেছেন, نَحْمَدُه ’’আমরা তার প্রশংসা করছি’’ এবংمِنْ شُرُوْرِ أَنْفُسنَا ’’নিজেদের মন্দকর্ম থেকে’’ বাক্যের পর বৃদ্ধি করেছেন وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا ’’আর আমাদের মন্দ কার্যক্রম থেকে’’।
দারিমী বৃদ্ধি করেছেন عَظِيمًا ’’বড় রকমের কৃতকার্য হয়েছে’’ বাক্যের পর ثُمَّ يَتَكَلَّمُ بِحَاجَتِه ’’অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাজাতের উল্লেখ করতেন’’। শারহুস্ সুন্নাহ্ কিতাবে ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, ’হাজাত’ তথা বিবাহ ও অন্যান্য কাজ বুঝানো হয়েছে।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: عَلَّمَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التَّشَهُّدَ فِي الصَّلَاةِ وَالتَّشَهُّدَ فِي الْحَاجَةِ قَالَ: التَّشَهُّدُ فِي الصَّلَاةِ: «التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ» . وَالتَّشَهُّدُ فِي الْحَاجَةِ: «إِنَّ الْحَمْدَ لِلَّهِ نَسْتَعِينُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ وَنَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ شُرُورِ أَنْفُسنَا من يهد اللَّهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَا هَادِيَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ» . وَيَقْرَأُ ثَلَاثَ آيَاتٍ (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسلمُونَ) (يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تساءلون وَالْأَرْحَامَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا) (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيما) رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَفِي جَامِعِ التِّرْمِذِيِّ فَسَّرَ الْآيَاتِ الثَّلَاثَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَزَادَ ابْنُ مَاجَهْ بَعْدَ قَوْلِهِ: «إِنَّ الْحَمْدَ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ» وَبَعْدَ قَوْلِهِ: «من شرور أَنْفُسنَا وَمن سيئات أَعمالنَا» وَالدَّارِمِيُّ بَعْدَ قَوْلِهِ «عَظِيمًا» ثُمَّ يَتَكَلَّمُ بِحَاجَتِهِ وَرَوَى فِي شَرْحِ السُّنَّةِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ فِي خطْبَة الْحَاجة من النِّكَاح وَغَيره
ব্যাখ্যা: ইবনু মাস্‘ঊদ -এর বর্ণিত হাদীস দ্বারা দলীল গৃহীত হয় যে, বিবাহের চুক্তির সময় খুৎবা পড়ার শারী‘আত সুন্নাত। ইমাম তিরমিযী তাঁর সুনানে বলেন, বিদ্বানগণ বলেছেন যে, খুৎবা ছাড়াও বিবাহ বৈধ। আর এটাই সুফ্ইয়ান সাওরীসহ অন্যান্য বিদ্বানদের মতো। ইসমা‘ঈল বিন ইব্রাহীম বর্ণিত হাদীস খুৎবা পড়া বৈধতার উপরে প্রমাণ করে। অতএব বিবাহের খুৎবা পড়া মুস্তাহাব। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২১১৮)