লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ১৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদীনার হারামকে আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক সংরক্ষণ প্রসঙ্গে
২৭৩৯-[১২] জাবির ইবনু ’আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক বেদুঈন এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে বায়’আত করলো। অতঃপর মদীনায় সে (বেদুঈন) জ্বরে পতিত হল। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললো, হে মুহাম্মাদ! আমার বায়’আত বাতিল করে দিন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্বীকার করলেন। আবারও সে এসে বললো, হে মুহাম্মাদ! আমার বায়’আত বাতিল করে দিন। এবারও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা করতে অস্বীকৃতি জানালেন। আবারও সে এসে বললো, আমার বায়’আত বাতিল করে দিন। এবারও তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন জানালেন। এরপর বেদুঈন মদীনাহ্ ছেড়ে চলে গেলো। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মদীনাহ্ হচ্ছে হাঁপরের মতো। যে এর খাদকে দূর করে দেয়, আর এর উত্তমটাকে খাঁটি করে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ حَرَمِ الْمَدِيْنَةِ حَرَسَهَا اللّٰهُ تَعَالٰى
وَعَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ: أَنَّ أَعْرَابِيًّا بَايَعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَصَابَ الْأَعْرَابِيَّ وَعَكٌ بِالْمَدِينَةِ فَأَتَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ أَقِلْنِي بَيْعَتِي فَأَبَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ جَاءَهُ فَقَالَ: أَقِلْنِي بَيْعَتِي فَأَبَى ثُمَّ جَاءَهُ فَقَالَ: أَقِلْنِي بَيْعَتِي فَأَبَى فَخَرَجَ الْأَعْرَابِيُّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا الْمَدِينَةُ كَالْكِيرِ تَنْفِي خبثها وتنصع طيبها»
ব্যাখ্যা: যে গ্রাম্য লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে এসে বায়‘আত গ্রহণ করেছিলেন তার নাম উল্লেখ হয়নি। ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, আমি তার নামের ব্যাপারে কোন কিছু অবগত হতে পারিনি। ‘আল্লামা যামাখশারী বলেন, তার নাম হলো ক্বায়স ইবনু আবী হাযিম। তিনি একজন প্রসিদ্ধ তাবি‘ঈ ছিলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাক্ষাতে রওয়ানা হয়েছিলেন, কিন্তু এসে শুনেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করেছেন। কিন্তু অন্যদের বর্ণনায় তিনি ক্বায়স ইবনু আবী হাযিম সাহাবী ছিলেন। ‘আল্লামা মুবারাকপূরী (রহঃ) এ বর্ণনাটি সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার বায়‘আত গ্রহণ করেছিলেন। মদীনার প্রচন্ড তাপদাহে লোকটি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ল। ফলে সে মদীনাহ্ থেকে নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তার বায়‘আত প্রত্যাহার করে নেয়ার অনুরোধ জানালেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ আবেদন প্রত্যাখ্যান করলেন, এমনকি লোকটি বারবার (তিনবার) একই আবেদন জানালেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেকবারই তার আবেদন পূরণ করতে অস্বীকৃতি জানালেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অস্বীকৃতির কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে ‘আল্লামা নাবাবী ‘উলামায়ে কিরামের মতামত উল্লেখ করে বলেন, লোকটির বায়‘আত ছিল ইসলামের উপর, আর ইসলামের উপর থাকার বায়‘আত প্রত্যাহার করা বৈধ নয়। অনুরূপ যে ব্যক্তি হিজরত করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট চলে এসেছেন সে হিজরত প্রত্যাহার বা ভঙ্গ করে স্বীয় কাফির এলাকায় বা দারুল কুফরে ফিরে যাওয়া বৈধ নয়।
প্রকাশ্য হাদীস থেকে জানা যায় যে, মদীনাহ্ শহর থেকে বের হওয়া নিন্দনীয় কাজ, কিন্তু সাহাবী এবং পরবর্তী অনেক নেক্কার ব্যক্তিদের মদীনাহ্ ত্যাগ করে অন্যত্র বসবাস ছিল ইসলামের কল্যাণে। ‘ইলম বিস্তার, রাজ্যর বিস্তার, বিজিত রাজ্যে প্রশাসন পরিচালনা ইত্যাদি কার্যে তারা অন্যত্র বসবাস করেছেন কিন্তু মদীনার ফাযীলাত এবং মুহাববাত তাদের অন্তরে পুরোদমে বিদ্যমান ছিল। সুতরাং এটা মোটেও হাদীসে বর্ণিত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত নয়।