লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - ইহরাম ও তালবিয়াহ্
২৫৪১-[২] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মাথার চুল জড়ানো অবস্থায় তালবিয়াহ্ বলতে শুনেছি,
’’লাব্বায়ক আল্লা-হুম্মা লাব্বায়ক, লাব্বায়কা লা- শারীকা লাকা লাব্বায়ক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান্ নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা- শারীকা লাকা’’
অর্থাৎ- ’’হে আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে উপস্থিত হয়েছি! আমি তোমার খিদমাতে উপস্থিত হয়েছি। তোমার কোন শারীক নেই। আমি তোমার দরবারে উপস্থিত। সব প্রশংসা, অনুগ্রহের দান তোমারই এবং সমগ্র রাজত্বও তোমারই, তোমার কোন শারীক নেই।’’
এ কয়টি কথার বেশি কিছু তিনি বলেননি। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْإِحْرَامِ وَالتَّلْبِيَةِ
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُهِلُّ مُلَبِّدًا يَقُولُ: «لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ» . لَا يَزِيدُ عَلَى هَؤُلَاءِ الْكَلِمَاتِ
ব্যাখ্যা: (يُهِلُّ مُلَبِّدًا) তিনি তালবীদ অবস্থায় তালবিয়াহ্ পাঠ করতেন। ‘উলামাহগণ বলেন আঠা বা খাতমী জাতীয় বস্ত্ত দ্বারা মাথার চুল লাগিয়ে রাখাকে তালবীদ বলা হয়। যাতে মাথার চুল পরস্পর মিলিত হয়ে থাকে তা এলোমেলো না হয়ে যায়।
এ থেকে বুঝা যায় যে, ইহরাম অবস্থায় তালবীদ করা মুস্তাহাব।
(لَا يَزِيدُ عَلٰى هَؤُلَاءِ الْكَلِمَاتِ) ‘‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তালবিয়াতে হাদীসে বর্ণিত শব্দের চাইতে বেশী কিছু বলতেন না’’। এ বর্ণনাটি নাসায়ীতে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তালবিয়াতে ছিল ‘‘লাব্বায়কা ইলাহাল হাক্কি’’-এর বিরোধী নয়। কেননা এ সম্ভাবনা রয়েছে এটি আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) শুনেছেন কিন্তু ইবনু ‘উমার (রাঃ) তা শুনেননি, তবে এটা প্রকাশমান যে, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বর্ণিত বাক্যটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব কমই বলেছেন। যেহেতু ইবনু ‘উমারের বর্ণিত বাক্যটি অধিক বর্ণিত হয়েছে। ইমাম আহমাদ, মালিক ও মুসলিম নাফি' সূত্রে ইবনু ‘উমার থেকে মারফূ' সূত্রে অত্র হাদীসে বর্ণিত তালবিয়ার শব্দ বর্ণনা করার পর অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, নাফি' বলেনঃ ইবনু ‘উমার তার তালবিয়াতে এ দু‘আর সাথে আরো বাড়িয়ে বলতেন, ‘‘লাব্বায়কা, লাব্বায়কা, লাব্বায়কা, ওয়া সা‘দায়কা, ওয়াল খাইরু বিইয়াদায়কা, লাব্বায়কা, ওয়ার রাগবাউ ইলায়কা ওয়াল ‘আমল’’।
যদি প্রশ্ন করা হয় যে, ইবনু ‘উমার তালবিয়াতে তা কিভাবে বাড়ালেন যা সেটার অন্তর্ভুক্ত নয়। অথচ তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাতের অনুসরণে খুবই কঠোর ছিলেন? এর জওয়াব এই যে, তিনি মনে করতেন যে, বর্ণিত শব্দমালার সাথে কিছু বাড়ানো হলে তা উক্ত শব্দমালাকে রহিত করে না। কোন বস্ত্তর একাকী থাকা যে পর্যায়ের, অন্যের সাথে সে একই পর্যায়ভুক্ত। অতএব নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পঠিত তালবিয়ার সাথে উক্ত শব্দমালাকে বাড়ালে তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তালবিয়াতে কোন ব্যাঘাত ঘটাবে না। অথবা তিনি বুঝেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পঠিত শব্দমালার উপর সংক্ষেপ্ত রাখা জরুরী নয়। কেননা কাজ বেশীর মধ্যেই সাওয়াব বেশী। ‘আল্লামা ‘ইরাকী বলেনঃ যিকিরের ক্ষেত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তার মধ্যে কোন পরিবর্তন না করে যদি অতিরিক্ত শব্দমালা যোগ করা হয় তবে তা দোষণীয় নয়।
জেনে রাখা ভাল যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তালবিয়াতে যে শব্দমালা পাঠ করেছেন তার চাইতে বাড়ানো যাবে কি-না- এ ব্যাপারে ‘উলামাগণের মাঝে দ্বিমত রয়েছে।
কেউ তা মাকরূহ বলেছেন। ইবনু ‘আবদুল বার ইমাম মালিক থেকে তা বর্ণনা করেছেন। ইমাম শাফি‘ঈর একটি অভিমতও এ রকম।
পক্ষান্তরে সাওরী, আওযা‘ঈ ও মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান বলেনঃ তালবিয়াহ্ পাঠকারী তাতে তার পছন্দমত শব্দ বাড়াতে পার। আবূ হানীফা, আহমাদ ও আবূ সাওর বলেনঃ বাড়ানোতে কোন দোষ নেই।
হাফিয ইবনু হাজার বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পঠিত শব্দমালার উপর ‘আমল করা উত্তম। তবে তাতে বাড়ালে কোন দোষ নেই। এটিই জমহূর ‘উলামাগণের অভিমত।