২৪৬১

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - আশ্রয় প্রার্থনা করা

২৪৬১-[৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দু’আগুলোর মধ্যে এটাও ছিল, ’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিন্ যাওয়া-লি নি’মাতিকা ওয়া তাহাওউলি ’আ-ফিয়াতিকা ওয়া ফুজা-আতি নিকমাতিকা ওয়া জামী’ই সাখাত্বিকা’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই [আমার ওপর] তোমার নিয়ামতের ঘাটতি, [আমার ওপর হতে] তোমার নিরাপত্তার ধারাবাহিকতা, [আমার ওপর] তোমার শাস্তির অকস্মাৎ আক্রমণ এবং তোমার সমস্ত অসন্তুষ্ট হতে।)। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْإِسْتِعَاذَةِ

وَعَن عبد بنِ عمرَ قَالَ: كَانَ مِنْ دُعَاءِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ سوسلم: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ وَجَمِيعِ سَخَطِكَ» . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসে বান্দার ওপর আল্লাহর দেয়া দীনী ও পার্থিব অনুগ্রহ যেগুলো আখিরাতের কাজের জন্য উপকারী এবং সেগুলোর পরিবর্তে ভাল কিছু দেয়া ছাড়া তা উঠিয়ে নেয়া থেকে আশ্রয় চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ অনুগ্রহ প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য হতে পারে। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর অনুগ্রহ চলে যাওয়া থেকে আশ্রয় চেয়েছেন এজন্য যে, এরূপ অবস্থা তখনই হয় যখন বান্দা নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে না এবং যে কাজ করলে নিয়ামত আসে তার চর্চা করে না। (এটা খুবই খারাপ অবস্থা।)

(تَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ)-এর অর্থ হলো- কান, চোখসহ সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুস্থতা চলে গিয়ে সেগুলো অসুস্থ হয়ে যাওয়া।

হঠাৎ শাস্তি বলতে এমন অবস্থায় শাস্তি আসা যে, যার ওপর শাস্তি আসছে সে শাস্তি আসার পূর্বে জানছে না যে, তার ওপর শাস্তি আসছে। এখানে শাস্তি বলতে সাধারণভাবে আল্লাহর অসন্তোষ ও শাস্তি বুঝানো হলেও বিশেষভাবে ‘‘হঠাৎ শাস্তি’’ শব্দের উল্লেখের মাধ্যমে এটা বুঝানো হচ্ছে যে, ধীরে ধীরে শাস্তি আসার থেকে হঠাৎ শাস্তি চলে আসা বেশি বিপজ্জনক।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হঠাৎ শাস্তি থেকে এজন্য আশ্রয় চেয়েছেন যে, শাস্তি হঠাৎ চলে আসলে সে ব্যক্তি তাওবাহ্ করার কোন সুযোগ পায় না। আল্লাহ যখন কোন বান্দা থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে চান তখন তিনি ঐ বান্দার ওপর এমন শাস্তি দেন যা প্রতিরোধ করার কোন ক্ষমতা কারো থাকে না। এমনকি সারা দুনিয়ার সমস্ত সৃষ্টি মিলে চেষ্টা করলেও তা প্রতিরোধ করতে পারবে না। যেমন কথা সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

আল্লাহর রাগ থেকে আশ্রয় চাওয়ার মাধ্যমে ঐ সমস্ত কাজ থেকে আশ্রয় চাওয়ার কথা বলা হয়েছে যেগুলো আল্লাহর রাগের কারণ হয়। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর রাগের প্রভাব থেকে আশ্রয় চাওয়া। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাগ থেকে এজন্য আশ্রয় চেয়েছেন যে, আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলা যখন কোন বান্দার ওপর রাগান্বিত হন তখন ঐ বান্দার ধ্বংস অনিবার্য। যদিও তা কোন তুচ্ছ বিষয়ে অথবা কোন ছোট কারণে হয়ে থাকে।