লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - আশ্রয় প্রার্থনা করা
২৪৫৮-[২] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ ’’আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি ওয়াল ’আজযি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া যলা’ইদ্ দায়নি ওয়া গলাবাতির্ রিজা-ল’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুশ্চিন্তা, শোক-তাপ, অক্ষমতা-অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, ঋণের বোঝা ও মানুষের জোর-জবরদস্তি হতে আশ্রয় চাই)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْإِسْتِعَاذَةِ
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحُزْنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ»
ব্যাখ্যা: (اَلْعَجْزِ) বা অক্ষমতা বলতে ইমাম নাবাবী (রহঃ) কল্যাণকর কাজ করার ক্ষমতা না থাকাকে বুঝিয়েছেন। (اَلْكَسَلِ) বা অলসতা দ্বারা মূলত কল্যাণকর কাজ করতে উদ্দীপনা অনুভব না করা এবং তা করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তা করতে আগ্রহ না থাকা। (اَلْجُبْنِ) বা কাপুরুষতা দ্বারা সাহসহীনতা বুঝানো হয়েছে। কারো মতে এর দ্বারা প্রাণভয়ে যুদ্ধে যেতে না চাওয়া কিংবা আবশ্যক অধিকার আদায় থেকে নিজের জীবন ও সম্পদকে বিরত রাখা। (اَلْبُخْلِ) বা কৃপণতা দ্বারা দানশীলতার বিপরীত স্বভাবকে বুঝানো হয়েছে। শারী‘আতের দৃষ্টিতে কৃপণতা বলতে আবশ্যক দান না করাকে বুঝায়।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাপুরুষতা ও কৃপণতা থেকে আশ্রয় চেয়েছেন এজন্য যে, এগুলো ইসলামের ওয়াজিব কাজগুলো আদায় করতে, আল্লাহর হকসমূহ পালন করতে, অন্যায় দূরীকরণে, আল্লাহদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে অক্ষম করে। সাহসিকতার দ্বারা ব্যক্তি ‘ইবাদাতসমূহ সঠিকভাবে পালন করতে পারে, মাযলূমকে সহযোগিতা করতে ও জিহাদে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং কৃপণতা থেকে নিরাপদ থাকলে ব্যক্তি আর্থিক হকসমূহ আদায় করতে পারে এবং আল্লাহর পথে খরচ করতে, দানশীল হতে ও চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধনে উদ্দীপ্ত হয়। নিজের নয় এমন জিনিসের প্রতি লোভ করা থেকে বিরত হয়।
(ضَلَعِ الدَّيْنِ) বা ঋণের বোঝা দ্বারা ঋণের ভারে জর্জরিত হওয়া এবং এর কাঠিন্যকে বুঝানো হয়েছে। এর দ্বারা মূলত এমন অবস্থাকে বুঝানো হয়েছে যখন কোন ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি ঋণ পরিশোধের জন্য কিছুই পায় না; বিশেষ করে মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন করার পরও। এজন্যই পূর্ববর্তী অনেক পণ্ডিত বলেছেন, (ما دخل هم الدين قلبًا إلا أذهب من العقل ما لا يعود إليه) অর্থাৎ- ‘‘ঋণের দুশ্চিন্তা ঋণী ব্যক্তির অন্তরে প্রবেশ করে জ্ঞান-বুদ্ধির এমন কিছু দূর করে দেয় যা তার নিকট আর ফেরত আসে না।’’